ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
বড়সড় হানাদারি হতে পারে ভারতের সাইবার জগতে। রবিবার কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা ‘কম্পিউটার এমারজেন্সি রেসপন্স টিম’ (সিইআরটি) টুইটারে একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে। কোনও দেশ বা সংগঠনের নাম না-করে তাতে বলা হয়েছে, সাইবার দুষ্কৃতীরা ‘ফিশিং ক্যাম্পেনিং’য়ের সাহায্যে হামলা চালাতে পারে। ঘটনাচক্রে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাইবার নজরদারি সংস্থা (সাইবার সিকিওরিটি ভেন্ডর) ‘সাইফার্মা’কে উদ্ধৃত করে রবিবার প্রকাশিত একটি খবরে দাবি, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির মদতে পুষ্ট অন্তত দু’টি হ্যাকার-গোষ্ঠী ভারতের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটে হানা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
কী ভাবে হতে পারে হামলা?
সিইআরটি’র আশঙ্কা, বর্তমান পরিস্থিতিতে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ সংক্রান্ত কোনও ই-মেল বার্তার ‘ছদ্মবেশে’ আসতে পারে হ্যাকারদের ‘সাইবার ফাঁদ’। টুইট বলছে, ‘‘কোভিড-১৯ মোকাবিলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও সরকারি সংস্থার পরিচয় ব্যবহার করে ক্ষতিকর ই-মেল পাঠানো হতে পারে। তাতে সরকারি কর্মসূচিতে সাহায্যে আবেদন জানিয়ে একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে ভিজিট করার বার্তা থাকবে। কিন্তু ওই ক্ষতিকর ই-মেল এমন ভাবে তৈরি যে, তার মাধ্যমে ওই ভুয়ো ওয়েবসাইটে ঢোকার চেষ্টা করলেই ব্যক্তিগত এবং আর্থিক যোগাযোগের তথ্যের হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। ক্ষতিকর ফাইলও ডাউনলোড হওয়ার আশঙ্কা।’’
চিন সেনার মদতে পুষ্ট ‘গথিক পান্ডা’ এবং ‘স্টোন পান্ড’ গোষ্ঠীর হ্যাকাররা এই কৌশলে ভারতে সাইবার হামলার জন্য সক্রিয় হয়েছে বলে ‘সাইফার্মা’র চেয়ারম্যান এবং সিইও কুমার রীতেশ এ দিন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘চিন সেনার প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই দু’টি সংস্থার হ্যাকারেরা আগেও বিভিন্ন দেশে সাইবার হামলা চালিয়েছে।’’ ভারতের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং আমেরিকাতেও এবার এই হামলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। ডার্ক ওয়েব পদ্ধতিতে হতে পারে হামলা। ফলে হ্যাকারদের আইপি অ্যাড্রেস সহজে চিহ্নিত করা যাবে না। তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানিয়েছেন, ‘টর’ নামে একটি বিশেষ ব্রাউজার এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। চিনা অ্যাপ এবং চিনের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি সম্পর্কেও ‘বিশেষ সতর্কতা’ নেওয়া প্রয়োজন বলে তাঁদের মত।
গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক থেকেই ‘সাইবার স্পেস ডকট্রিন’-এর কাজ শুরু করেছিল বেজিং। চিনা সেনার আধুনিকীকরণের অন্যতম অংশ ছিল ওই পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিক সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা ঘোস্টনেটের একটি রিপোর্টে দাবি, নিজেদের সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি চিনা ফৌজ অন্য দেশে সাইবার হামলার চালানোর উদ্দেশ্যে দক্ষ হ্যাকারদের টিম গড়ার কাজ শুরু করে সে সময় থেকেই।
সেরা নিউজ/আকিব