পানির নিচে ডুবে থেকেও বেচে ফিরেছিলেন যারা - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
পানির নিচে ডুবে থেকেও বেচে ফিরেছিলেন যারা - Shera TV
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন

পানির নিচে ডুবে থেকেও বেচে ফিরেছিলেন যারা

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৪ জুলাই, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

সম্প্রতি বুড়িগঙ্গায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ থেকে ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে সুমন ব্যাপারী নামে এক ব্যক্তিকে। এ ঘটনা চাঞ্চল্য তৈরি করার পাশাপাশি অনেক প্রশ্নেরও জন্ম দিয়েছে। তবে এই লেখা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের যুক্তিতর্ক নিয়ে নয়। বরং এখানে এমন কয়েকজন ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে যারা অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়াই অবিশ্বাস্যভাবে পানির নিচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বেঁচে ছিলেন।

হ্যারিসন ওকেনে: নাইজেরিয়ান নাগরিক হ্যারিসন ওকেনে ‘জ্যাকসন-৪’ নামে একটি জাহাজে বাবুর্চির কাজ করতেন। ২০১৩ সালের ২৬ মে নাইজেরিয়ার উপকূল থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে জাহাজটি একটি তেলবাহী ট্যাংকারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায়। জাহাজে হ্যারিসন ছাড়াও ১১জন ক্রু ছিলেন। সবার মৃতদেহ উদ্ধার করা হলেও হ্যারিসনের মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছিল না।

একদিকে সাগরের প্রবল স্রোত থেকে জাহাজ টেনে তোলার চেষ্টা, অন্যদিকে হ্যারিসনকে খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা- এভাবেই দুদিন পেরিয়ে যায়। সবাই যখন মোটামুটি নিশ্চিত হ্যারিসনকে আর পাওয়া যাবে না, তখন সবাইকে অবাক করে দিয়ে আড়াই দিনের মাথায় তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বিবিসিকে হ্যারিসন ওকেনে বলেন, ‘জাহাজ ডুবে যাওয়ার পর আমি ধরেই নিয়েছিলাম মারা যাবো। ঈশ্বরকে ডাকছিলাম। হঠাৎ খেয়াল করলাম রান্না ঘরে পানি ঢুকছে না। কিন্তু চারপাশে পানির চাপ অনুভব করছিলাম। ভেতরটা ছিলো গাঢ় অন্ধকার। ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে বুঝতে পারছিলাম, এয়ার পকেটে আছি। তাই বেঁচে থাকার ক্ষীণ আশা তৈরি হয়েছিল। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বাস হারাতে শুরু করেছিলাম। উদ্ধার পাবো কখনো ভাবিনি।

ব্রিট আর্চিবাল্ড: ২০১৩ সালের ঘটনা। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিবাসী ব্রিট ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে বন্ধুদের সঙ্গে ভারত মহাসাগরে ঘুরতে বের হন। হঠাৎ তারা ঝড়ের কবলে পড়েন। জাহাজের বাকি সবাই কোনোক্রমে সাতরে তীরে উঠতে পারলেও জাহাজসহ তলিয়ে যান ব্রিট। শুরু হয় তাকে খোঁজার পালা।

দিন অতিবাহিত হয়ে রাত নামে। কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায় না ব্রিটকে। পরদিন জাহাজ টেনে তোলার পর ভেতর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয় ব্রিটকে। ব্রিট তার এই রুদ্ধশ্বাস অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়ে পরে ‘অ্যালোন: লস্ট ওভারবোড ইন দি ইন্ডিয়ান ওশান’ নামে একটি বই লেখেন। ব্রিটের ভাষায়: ‘জাহাজ ডুবে যাওয়ার দিন আমি ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত ছিলাম। দুর্বলতার কারণে বাকি সঙ্গীরা সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও আমি জাহাজের সঙ্গেই ডুবে গিয়েছিলাম। এরপর শুরু হয় আমার জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ চব্বিশ ঘণ্টা। চারপাশে পানির চাপ, সামুদ্রিক মাছের বিচরণ, হাঙ্গরের আস্ফালন অনুভব করেই ভয়াবহ চব্বিশ ঘণ্টা কাটিয়ে মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখে ফিরেছি। এয়ার পকেট তৈরি হয়েছিল বিধায় আমি বেঁচে ফিরেছি।

সোহাগ: ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর বালু বোঝাই একটি নৌযান ডুবেছিল নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে। সবাই তীরে উঠতে পারলেও ইঞ্জিনচালক সোহাগ হাওলাদার নৌযানের সঙ্গে ডুবে যান। ৩০ ঘণ্টা চেষ্টার পর পাওয়া যায় তাকে, তবে মৃতদেহ নয়, জীবিত সোহাগ উঠে আসেন পানির নিচ থেকে। সোহাগকে উদ্ধার করেন ডুবুরি জাহাঙ্গীর আলম। পানির তলদেশে সোহাগের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের কথোপকথন ওই সময় গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানির নিচে থেকেও যারা এভাবে জীবিত থাকেন তারা ভগ্যবান। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখে বেঁচে ফিরেছেন তারা। কিন্তু কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন গবেষকরা। সংক্ষেপে বলতে গেলে— এয়ার পকেট। সবাই জানি, পৃথিবীর সব জায়গায় বাতাস থাকে। জাহাজ যখন পানির ওপর ভাসমান থাকে তখন সেখানেও বাতাস পরিপূর্ণ থাকে।

জাহাজ যখন ডুবতে শুরু করে, তখন এই বাতাস পানির চাপে একদিকে সরে যেতে থাকে। কখনো কখনো বাতাস জাহাজের কোনো একটি বদ্ধ জায়গায় গিয়ে পূর্ণ হয়। এই জায়গাটিকে এয়ার পকেট বলা হয়। জাহাজ তলিয়ে গেলেও এয়ার পকেটে পানি ঢুকতে পারে না এবং ওই কক্ষে কোনো প্রাণী থাকলে সে বেঁচে যেতে পারে। তবে গবেষকরা বলেন— এয়ার পকেট তৈরি হলেও সেখান থেকে বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা খুব কম।

সূত্র: বিবিসি, ইন্ডিয়া টুডে, প্রথম আলো এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফি

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360