নিজস্ব প্রতিবেদক:
রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম আইনজীবী না হলেও রাজধানীর উত্তরায় ছিল তার ‘ল-চেম্বার’। বুধবার সকালে তাকে সঙ্গে নিয়ে উত্তরা-১১ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর সড়কের ৬২ নম্বর ভবন সিএইচএল বায়তুল এহসানের ওই গোপন চেম্বারে অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা। সেখানে পাওয়া যায় প্রায় দেড় লাখ জাল টাকা ও কিছু কাগজপত্র। পরে সাহেদকে আবারও নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরায় র্যাব সদর দপ্তরে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ ঘটনাস্থলে বলেন, ‘এটি সাহেদের দ্বিতীয় অফিস। এ ব্যাপারে আগে জানতে পারেনি র্যাব। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার এই অফিসের তথ্য পাওয়া যায়।’
সিএইচএল বায়তুল এহসানের চতুর্থ তলায় অভিযানের সময় ভবনটির সামনে অবস্থান নেন বিপুল সংখ্যক র্যাব সদস্য। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমও অভিযানে উপস্থিত ছিলেন।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হওয়া অভিযান শেষ হয় দুপুর ১টায়। তখন র্যাবের দলটি ফিরে যাওয়ার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা অভিযানের ব্যাপারে জানতে চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট বা র্যাবের অন্য কর্মকর্তারা কিছু বলতে রাজি হননি। পরে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অভিযানে এক লাখ ৪৬ হাজার জাল টাকা পাওয়া গেছে।
এছাড়াও অভিযানে সাহেদের প্রতারণা সংশ্লিষ্ট কিছু কাগজপত্র পাওয়া যায় বলে জানায় অপর একটি সূত্র। ওই ভবনের তত্বাবধায়ক তারা মিয়া জানান, সাহেদ করিমের লোকজন দুই মাস আগে চারতলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। ফ্ল্যাটের ভাড়া ৩০ হাজার টাকা। ভাড়া নেওয়ার সময় সাহেদের লোকজন বাড়ির মালিক ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। তখন তারা জানান, সেখানে সাহেদ করিমের ল-চেম্বার হবে। তবে সাহেদ সেখানে কখনও গেছেন কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি তারা মিয়া।
এর আগে, গত ৬ ও ৭ জুলাই উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল এবং রিজেন্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। পরে হাসপাতালটির উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেওয়া হয়। ওই সময় দুটি হাসপাতালেই পাওয়া যায় সাহেদের টর্চার সেল।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রগুলো জানায়, বিভিন্নজনকে ধরে এনে সেখানে রাতভর নির্যাতন করা হতো। বিশেষ করে কেউ তার বিরুদ্ধাচরণ করলে বা পাওনা টাকা চাইলে নেওয়া হতো টর্চার সেলে।
র্যাবের দায়িত্বশীলরা বলছেন, উত্তরার এই গোপন কার্যালয়ে প্রকৃতপক্ষে কী ধরনের কার্যক্রম চলত তা জানার চেষ্টা চলছে। কথিত ল-চেম্বারের আড়ালে এটি সাহেদের কোনো টর্চার সেল বা অপরাধ সংঘটনের স্থান ছিল কি না তা অনুসন্ধানে জানা যাবে। পাশাপাশি অন্য কোথাও তার আরও কোনো অফিস বা টর্চার সেল থাকলে সেগুলোও খুঁজে বের করা হবে।
সেরা নিউজ/আকিব