ডেস্ক রিপোর্ট:
বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস পাঠাও এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ’র হত্যার অভিযোগে তার ব্যক্তিগত সহকারী হ্যাসপিলকে গ্রেফতার করেছে নিউ ইয়র্ক পুলিশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২১ বছর বয়সী হ্যাসপিল কর্তৃক ১ লাখ ডলার আত্মসাতের ঘটনা ফাহিম ফয়সাল জানার পর বিষয়টি পুলিশের কাছে না জানিয়ে শুধু ওই পরিমাণ ডলার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। এ ঘটনার জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
নিউ ইয়র্ক পোস্ট জানায়, বাড়ি ভাড়া নেয়ার অ্যাপ এয়ারবিএনবি’র মাধ্যমে বুধবার নিউ ইয়র্কের ক্রসবি স্ট্রিটের একটি বাসায় ওঠেন হ্যাসপিল। ওই লেনদেনও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন করেছিলেন তিনি, যার সূত্র ধরে তদন্তকারীরা হ্যাসপিলের খোঁজ পান।
ফাহিম সালেহর ওপর ব্যবহৃত টেজারটিও হ্যাসপিল নিজের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কেনেন বলে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস।
এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং নিউ ইয়র্ক পোস্টের খবর অনুযায়ী, ফাহিমকে খুন করার পর গাড়ি ভাড়া করে ম্যানহাটনের একটি দোকানে যান হ্যাসপিল, যেখান থেকে তিনি অ্যাপার্টমেন্ট পরিষ্কার করার জিনিসপত্র কেনেন। এই সময় হ্যাসপিল ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গাড়ি ভাড়া দেন।
হ্যাসপিলের গ্রেফতারের পর থেকে তার ব্রুকলিনের অ্যাপার্টমেন্ট এবং তাকে যেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই অ্যাপার্টমেন্টে পুলিশ তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে খবর প্রকাশ করেছে এনবিসি নিউ ইয়র্ক।
মঙ্গলবার ফাহিম সালেহ’র লাশ পাওয়া যাওয়ার পর পুলিশকে উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছিল, অ্যাপার্টমেন্টের নিরাপত্তা ক্যামেরায় দেখা যায় যে কালো স্যুট এবং কালো মাস্ক পরা একজন ব্যক্তির সঙ্গে একই লিফটে প্রবেশ করেন ফাহিম সালেহ। লিফট ফাহিম সালেহ’র অ্যাপার্টমেন্টের সামনে দাঁড়ালে দুজনেই সেখান থেকে বের হয়ে যান।
শুক্রবার হ্যাসপিল গ্রেফতার হওয়ার পর নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান রডনি হ্যারিসন সাংবাদিকদের বলেন, “অভিযুক্ত ব্যক্তি ভুক্তভোগীর (ফাহিম সালেহ) আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলোর তত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে অভিযুক্তের কাছে ভুক্তিভোগী বড় অঙ্কের অর্থ পেতেন।”
টাইরেস হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে তিনি ফাহিম সালেহকে বৈদ্যুতিক টেজার গান – যার সাহায্যে মানুষকে সাময়িকভাবে নিশ্চল করা যায় – দিয়ে আঘাত করার পর নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন।
মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে ৩৩ বছর বয়সী ফাহিম সালেহ’র খণ্ড-বিখণ্ড মরদেহ পাওয়া যায়। ঐ অ্যাপার্টমেন্টটি ফাহিম সালেহ’র মালিকানাধীন ছিল।
নিউ ইয়র্কের পুলিশ টাইরেস হ্যাসপিলকে গ্রেফতার করার পর ফাহিম সালেহ হত্যা সম্পর্কে খুঁটিনাটি কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।
পুলিশ প্রথমে ধারণা প্রকাশ করেছিল যে, পেশাদার খুনিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা বলছে, তদন্তকারীদের কয়েকজনের সন্দেহ, অভিযুক্ত হ্যাসপিল গোয়েন্দাদের দিকভ্রান্ত করতে এরকম একটি ধারণা দিতে চাইছিলেন যে এই হত্যাকাণ্ডটি পেশাদার খুনিদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে।
মঙ্গলবার ফাহিম সালেহ’র বোন ম্যানহাটনের অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে প্রথম মরদেহ দেখতে পান।
এরপর প্রাথমিক তদন্ত শেষে ধারণা করা হয় যে তাকে সোমবারই হত্যা করা হয়।
সেরা নিউজ/আকিব