বিনোদন ডেস্ক:
‘‘রাতের অন্ধকার…ঠান্ডা ঘর…একা আমি…চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ার আপ্রাণ চেষ্টা। কিন্তু ঘুম নেই চোখে! চারপাশে কেউ কোত্থাও নেই…ভাবনাগুলো স্বাধীন ভাবে ডানা মেলার সুযোগ পেয়েছে যেন এই সময়ে। অনেকটাই যেন ‘সিলসিলা’র সেই ‘ম্যায় ঔর মেরে তনহাই অকসর ইয়ে বাতে করতে হ্যায়….’’
এভাবেই দিন-রাত কাটছে অমিতাভ বচ্চনের। নানাবতী হাসপাতালে কোভিড সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর। প্রতিদিন ব্লগে নিজের শরীরের খবর দিচ্ছেন ভক্তদের। মনের অবস্থা এই প্রথম এত খোলামেলা ভাবে মেলে ধরলেন সবার সামনে।
বিগ বি-র সেই ব্লগ যেন এক টুকরো কবিতা। ৭৭ বছরে ‘রাগী যুবক’কে শরীরের সুস্থতার জন্য মনের জোরও যে ধরে রাখতে হচ্ছে, ব্লগে এ কথা স্পষ্ট। তাই দ্বিধা না করে স্পষ্ট ভাষায় অমিতাভের স্বীকারোক্তি, একা একা লড়ার রোগ কোভিড শুধু শরীরে নয়, মনেও ছাপ ফেলে। কারণ, এই লড়াইয়ে কেউ পাশে থাকে না। তাঁর পাশেও গত ১৫ দিন ধরে কেউ নেই! তিনি একা লড়ছেন এই বয়সে।
এই একাকিত্ব কি যন্ত্রণার মনে হয় তাঁর কাছে? ‘‘যন্ত্রণার না হলেও কঠিন তো বটেই’’, জানিয়েছেন অমিতাভ। আরও আক্ষেপ, সবাই তাঁর সুস্থ হয়ে ওঠার প্রার্থনা জানাচ্ছেন। তারপরেও তাঁর লড়াইটা শুধু তাঁরই।
ব্লগে সেই লড়াইয়ের বর্ণনায় অমিতাভ জানিয়েছেন, ‘‘কাছের মানুষ বলতে এখন ডাক্তারবাবু। যিনি আমার দেখভাল করছেন। তিনি ছাড়া আর কারও ঘেঁষার অনুমতি নেই। তাই চোখ ভিজে উঠলেও মুছিয়ে দেওয়ার মতো কোনও হাত আমার পাশে নেই। একা থাকার এই ভয়, হতাশা মনে ক্ষত তৈরি করতে পারে যে কোনও সময়। শরীরের মতো মনকেও কাবু করে দেয় দেখতে দেখতে। এই ক্ষত সারানোর জন্যও আলাদা যত্ন দরকার। দরকার কাউন্সেলিংয়ের, যা একা লড়াইয়ের দিনগুলোকে আস্তে আস্তে ভুলে যেতে সাহায্য করবে।’’
গত দু’সপ্তাহের এই লড়াই একাই লড়ছেন এবং জিতছেন শাহেনশা। এখনও কোভিড পজিটিভ হলেও শারীরিক অবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে তাঁর। অনুরাগীরা তাঁদের ‘জীবন্ত ঈশ্বর’কে দেখার জন্য প্রতি মুহূর্তে মুখিয়ে।
এদিকে অমিতাভের সঙ্গেই নানাবতী হাসপাতালে কোভিডের সঙ্গে লড়ছেন অভিষেক, বউমা ঐশ্বর্যা, নাতনি আরাধ্যা বচ্চন। বচ্চন পরিবারের মহীরুহের মতোই একা একা লড়ছেন তাঁরাও!
সেরা নিউজ/আকিব