লেবাননে বিস্ফোরন, সন্দেহের তীর ইসরাইলের দিকে! - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
লেবাননে বিস্ফোরন, সন্দেহের তীর ইসরাইলের দিকে! - Shera TV
মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১০ পূর্বাহ্ন

লেবাননে বিস্ফোরন, সন্দেহের তীর ইসরাইলের দিকে!

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ৭ আগস্ট, ২০২০

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
লেবাননের বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ইসরাইলের হাত থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ইরাকের সংসদের প্রভাবশালী সদস্য মোহাম্মাদ আল বালদাওয়ি
সংবাদমাধ্যম ইরনার খবর,  মোহাম্মাদ আল বালদাওয়ি বলেন, এটা ঠিক যে এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণ উদঘাটনের তদন্ত শেষ করতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে মনে হচ্ছে এর সঙ্গে ইসরাইল জড়িত রয়েছে।

বুধবার স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মাদ আল বালদাওয়ি এসব কথা বলেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি এটা নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়, এর পেছনে কারো না কারো হাত রয়েছে।’

ইরাকের এই সংসদ সদস্য বলেন, ইসরাইল এ ধরণের জঘন্য কাজ করে অভ্যস্ত। তারা নিরপরাধ মানুষ মেরে আনন্দ পায়। অতীতে বিভিন্ন দেশে এ ধরণের অনেক ঘটনাই ইসরাইল ঘটিয়েছে। তারা ১৯৮১ সালে ইরাকের শান্তিপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়েছে। গত বছরও ইরাকের সামরিক বাহিনী হাশ্‌দ আশ শাবির অস্ত্র গুদামে হামলা করেছে।

মুহাম্মাদ আল বালদাওয়ি বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ইসরাইলকে এ জন্য অভিযুক্ত করা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার (০৪ আগস্ট) লেবাননের রাজধানী বৈরুতের সমুদ্র বন্দরের ১২ নম্বরে হ্যাঙ্গারে রাখা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এতে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত ৪ হাজারের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, স্থাপনা। বাস্তুচ্যুত হয়েছে কমপক্ষে ৩ লাখ মানুষ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৫শ’ কোটির বেশি বলে জানিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ।

মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটলো?

২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার মালিকানাধীন মালদোভার পতকাবাহিনী একটি কার্গো জাহাজে করে লেবাননে পৌঁছায় অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের ওই চালান। শিপ ট্র্যাকিং সাইট ফ্লেটমোনের তথ্য অনুযায়ী জাহাজটি জর্জিয়া থেকে মোজাম্বিক যাচ্ছিল।

কারিগরি ত্রুটির কারণে জাহাজটি বৈরুতের ডেকে ভিড়তে বাধ্য হয়। জাহাজের ক্রুদের নিয়োগ করা আইনজীবী এ তথ্য জানান। পরে লেবাবন কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে বন্দর ত্যাগ করতে দেয়নি। ফ্লেটমোন জানায়, পরে ধীরে ধীরে জাহাজ রেখেই মালিক, ক্রুরা চলে যায়।

পরে জাহাজ থেকে নাইট্রেটগুলো নামানো হয়। রাখা হয় বৈরুত বন্দরের ১২ নম্বরে হ্যাঙ্গারে। হ্যাঙ্গারটি মহাসড়কের পাশে রাজধানীর প্রধান প্রবেশ মুখে অবস্থিত।

কয়েক মাস পরে ২০১৪ সালে ২৭ জুন লেবানন কাস্টমসের পরিচালক শাফিক মেরহি দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য একটি চিঠি পাঠান। যাতে দ্রুত বিষয়টি নিষ্পত্তির আহ্বান জানানো হয়। অনলাইনে প্রকাশিত তথ্যে চিঠি পাঠানোর ঠিকানা উল্লেখ করা হয়নি।

বিষয়টি সুরাহা করার জন্য দেশটির কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ৩ বছরে আরো ৫টি চিঠি পাঠায়। চিঠিগুলো পাঠানো হয় যথাক্রমে ২০১৪ সালের ৫ ডিসেম্বর, ২০১৫ সালের ৬ মে, ২০১৬ সালের ২০ মে, ২০১৬ সালের ১৩ অক্টোবর এবং ২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবর।

চিঠিগুলোতে সমাধানের জন্য তিনটি প্রস্তাব দেয়া হয়। ১. নাইট্রেট সরিয়ে নেয়া। ২. লেবাননের সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা। ৩. লেবাননের বেসরকারি বিস্ফোরক কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়া।

২০১৬ সালের চিঠিতে আগের আহ্বানগুলোতে সাড়া দেয়া হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

চিঠিতে আরো বলা হয়, অনিরাপদ হ্যাঙ্গারে পণ্যগুলো রাখার কারণে তৈরি ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে সেগুলো অতিদ্রুত সরিয়ে নিয়ে বন্দরের নিরাপত্তা রক্ষার অনুরোধ জানাচ্ছি। অথবা বিক্রির ইচ্ছে থাকলে লেবাননের বিস্ফোরক কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হোক। এবারও কোনো উত্তর আসেনি সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে।

এক বছর পর লেবানন কাস্টমসের নতুন প্রশাসনিক প্রধান দাহের একজন বিচারকের কাছে বিষয়টি জানিয়ে একটি চিঠি পাঠান।

২০১৭ সালের ২৭ অক্টোবরের ওই চিঠিতে দাহের বিচারককে অনুরোধ জানান ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা নিয়ে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটগুলো সরিয়ে নিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হোক। অথবা এগুলো যথাযথভাবে ব্যবহারে উদ্যোগ নেয়া হোক। এর তিন বছর পরও নাইট্রেটগুলো সেই হ্যাঙ্গারেই মজুদ ছিল।

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব মঙ্গলবার বিস্ফোরণের ঘটনায় ‘ভয়াবহ জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করেন। ভয়াবহতার জন্য যারা দায়ী তাদের চড়ামূল্য দিতে হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

নাইট্রেটগুলো ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতাকে অগ্রণযোগ্য বলেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন। জড়িতদের কঠিন শাস্তি পেতে হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি। ইতোমধ্যে একটি তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সময়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে।

বিস্ফোরণের কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে এর জন্য দেশটির দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারে অবহেলাকে দায়ী করেছেন সাধারণ মানুষ। ‘গেলো কয়েক দশক ধরে যারা দেশটাকে লুটপাট করে খাচ্ছে আজকে বৈরুতের পরিণতির জন্য তারা দায়ী। তারাই অপরাধী। বলেন, লেবাননের সমাজকর্মী রিমা মাজেদ।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360