একনজরে প্রদীপনামা - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
একনজরে প্রদীপনামা - Shera TV
শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন

একনজরে প্রদীপনামা

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১০ আগস্ট, ২০২০

বিশেষ প্রতিবেদক:

টেকনাফ থানার সদ্য বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ যখন যে থানায় গেছেন সেখানেই তিনি বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন (সিএমপি) এলাকায় প্রায় পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনকালে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন। এরপরও অদৃশ্য ইশারায় গুরুত্বপূর্ণ থানায় একের পর এক পোস্টিং নিতে তার কোনো অসুবিধা হয়নি।

২০১২ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর ঘুরে ফিরে সিএমপির বায়েজিদ বোস্তামী, পতেঙ্গা ও পাঁচলাইশ থানায় প্রদীপ ‘ওসিগিরি’ করেছেন। অপরাধ দমন না করে তিনি নিজেই নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপির একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এ ‘গুণধর’ কর্মকর্তা যে থানায় দায়িত্ব পালন করেছেন সেই থানায় তিনি নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সরকার ও পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি থাকাকালে প্রদীপ দাশ ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর মিথ্যা মামলা দিয়ে রিফাইনারি মালিক সেলিম আহমেদকে হয়রানি করেন। রিফাইনারির একটি ভাউচার আটকে দিয়ে নানা অজুহাতে তিনি বিপুল পরিমাণ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেয়ায় ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ওসি প্রদীপসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ওই ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ করেন। ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি অভিযোগ তদন্ত করে। তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় প্রদীপসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রদীপসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ হেড কোয়ার্টার। বরখাস্ত হওয়া অপর দুই কর্মকর্তা হলেন বায়েজিদ বোস্তামী থানার এসআই সুজন বিশ্বাস ও এসআই একরামুল হক। ২০১৫ সালের ১ মে নগর যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান বাদল খুন হন।

বাসার সামনে মেহেদীকে পেছন থেকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসী সাদ্দাম। মেহেদীর কারণে সেখানে চাঁদাবাজিসহ অবৈধ কাজে সুবিধা করতে পারছিল না একটি পক্ষ। অভিযোগ ওই পক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ।

এ জন্য মেহেদীর প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতারে নির্লিপ্ত ছিলেন তিনি। এছাড়া মেহেদীর খুন হওয়ার দিন রহস্যজনক কারণে প্রদীপ ছুটিতে ছিলেন।

সূত্র জানায়, অপরাধ দমনের চেয়ে অপরাধীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে প্রদীপ নিজেই ‘অপরাধে’ জড়িয়ে যাওয়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। একের পর এক বিতর্কের কারণে তাকে সিলেট রেঞ্জে বদলি করা হয়। বদলির পাঁচ মাস না যেতেই ২০১৬ সালের মে আবার সিএমপিতে তাকে পদায়ন করা হয়। এরপর সিএমপি থেকে কক্সবাজারে তাকে পদায়ন করা হয়।

২০১২ সালে প্রদীপ পতেঙ্গা থানায় দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় একটি বিদেশি জাহাজকে তেল সরবরাহে বাধা এবং আটকের ১৮ দিন পর একটি বার্জ মালিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দেন প্রদীপ।

হয়রানি ও অনৈতিক সুবিধা নেয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দফতর এবং আরও তিনটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত শুরু করে। এ ঘটনার জেরে কিছুদিন পর তাকে পতেঙ্গা থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

পাঁচলাইশ থানায় ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি এবং ২০ জুলাই বিরোধী দলের দুই কর্মীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ দুই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রদীপ দাশের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে। পাঁচলাইশ থানার বাদুড়তলা এলাকায় বিরোধী দলের মিছিলে বাধা দিতে গেলে পুলিশের তিন সদস্যকে মারধর এবং পুলিশের গাড়ি ভাংচুর করা হয়।

ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া প্রতিবেদনে প্রদীপের উসকানিকে দায়ী করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত টিমের তদন্তে তার বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাকে পাঁচলাইশ থানা থেকে গোয়েন্দা বিভাগে বদলি করা হয়।

এরপর নগর গোয়েন্দা বিভাগ থেকে বদলি হয়ে টাকার খনি খ্যাত শাহ আমানত বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখায় যান। সেখান থেকে তদবির করে পোস্টিং নেন বায়েজিদ বোস্তামী থানায়।

২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার বাংলাবাজার এলাকায় রহমত উল্লাহ প্রকাশ ন্যাংটা ফকির ও তার খাদেম আবদুল কাদের প্রকাশ্যে খুন হন। তখন ওই থানার ওসি ছিলেন প্রদীপ। তার আমলে সেখানে অন্তত ১০টি হত্যাকাণ্ডের ঘটে।

এর আগে কোতোয়ালি থানার এসআই থাকাকালে নগরীর পাথরঘাটায় এক হিন্দু বিধবা মহিলার জমি দখলের অভিযোগ ওঠে প্রদীপের বিরুদ্ধে। পাঁচলাইশ থানা এলাকায় নিজের বোনের জমি নামে থাকা একটি জমি দখলের অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360