বিনোদন ডেস্ক:
করোনার কারণে গত মার্চ মাস থেকে স্থবির ছিল দেশের প্রতিটি সেক্টর। বন্ধু ছিল সব ধরনের শুটিং এবং সিনেমা হল। লকডাউন শিথিল হওয়ার পর সব সেক্টরই কম-বেশি সচল হয়েছে। নিয়ম মেনে শুটিংও শুরু হয়েছে। কিন্তু এখনো তালা ঝুলছে সিনেমা হলগুলোর গেটে। এটা সিনেমা ব্যবসায়ী ও হল মালিকদের জন্য নিঃসন্দেহে হতাশাজনক।
এই পরিস্থিতিতে বরাবরের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় এবং বিলাসবহুল সিনেমাহল স্টার সিনেপ্লেক্স। বুধবার একটি সংবাদ সম্মেলন করে এমনই আভাস দিয়েছেন স্টার সিনেপ্লেক্সের চেয়ারম্যান মাহবুব রহমান রুহেল। তিনি জানিয়েছেন, সিনেমা ব্যবসার এই দুর্দিনে সরকারি সহায়তা না পেলে তাদের সামনে স্টার সিনেপ্লেক্স বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোনো পথই খোলা থাকবে না।
এক্ষেত্রে সরকারের কাছে পাঁচটি দাবি তুলে ধরেছেন রুহেল। প্রথমত, নগরবাসীর বিনোদনের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনতিবিলম্বে সিনেমা হলসমূহ খুলে দিতে হবে। দ্বিতীয়, জরুরি আর্থিক সহায়তা কিংবা প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করতে হবে। তৃতীয়, সিনেমা হলের টিকিটের ওপর সব ধরনের মূসক ও কর মওকুফের সুযোগ দিতে হবে। চতুর্থ, সুদবিহীন ঋণ প্রদানের অনুমোদন দিতে হবে। পঞ্চম, উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্রসমূহ শর্তহীন ভাবে আমদানির অনুমতি দিতে হবে।
এর পাশাপাশি স্টার সিনেপ্লেক্স আছে এমন তিনটি শপিংমল কর্তৃপক্ষের কাছে এবং বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির কাছে আরও দুটি দাবি করেছেন রুহেল। শপিংমল কর্তৃপক্ষের কাছে তার দাবি, করোনাকালীন পরিস্থিতিতে স্টার সিনেপ্লেক্সের প্রতিটি শাখার ভাড়া মওকুফ করা এবং অবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত অর্ধেক ভাড়া নিতে হবে। অন্যদিকে প্রযোজক সমিতির কাছে তিনি দাবি করেন, সেন্সর পাওয়া সিনেমাগুলো শিগগিরই মুক্তি দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
উপরোক্ত দাবিগুলো পূরণ হলেই স্টার সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রুহেল। অন্যথায়, চিরকালের জন্য তালা পড়ে যেতে পারে স্টার সিনেপ্লেক্সের দরজায়। সংবাদ সম্মেলনে রুহেল বলেন, ‘আধুনিক মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলগুলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চমৎকার উদাহরণ হতে পারে।’
তার দাবি, নির্ধারিত আসনের জন্য অল্পসংখ্যক লোক টিকিটের বিনিময়ে এসব হলে সিনেমা দেখে। অন্যান্য জনবহুল স্থানের তুলনায় এখানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মানুষকে বিনোদনের সুযোগ করে দেয়া হয়।স্টার সিনেপ্লেক্স বরাবরই স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সচেতন। এখানকার কর্মীসহ আগত সবার জন্য বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহার, হলের আসনগুলো নিয়মিত জীবাণুমুক্তকরণসহ স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার সব ধরনের সুব্যবস্থা রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে সিনেমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্স। প্রথমে শুধু বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে হলটির একটি শাখা ছিল। তবে বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে তিনটি শাখায় ১৫টি স্ক্রিনে সিনেমা দেখাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন করে মিরপুরে চতুর্থ শাখা চালুর প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল তাদের। কিন্তু তার মাঝেই মহামারি করোনা এসে সবকিছু উলটপালট করে দিয়েছে।
সেরা নিউজ/আকিব