স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের পাঁচটি সংসদীয় শূন্য আসনের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ১৭ আগস্ট থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে ঢাকা-১৮ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ফরম তোলার হিড়িক পড়েছে। গত পাঁচ দিনে এ আসন থেকে নির্বাচনে লড়তে ৪৩ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছেন, যা এ পাঁচ আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে মনোনয়ন বিক্রি হবে আরও দু’দিন অর্থাৎ ২৩ আগস্ট পর্যন্ত।
জানা গেছে, এ আসন থেকে আরও অনেকে ফরম কিনবেন বলে সম্ভাবনা রয়েছে। পাঁচটি শূন্য আসনের বিপরীতে গত পাঁচ দিনে ১১৭টি ফরম বিক্রি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ দিনে ঢাকা-১৮ আসনের উপনির্বাচনে লড়তে ৪৩ জন দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছেন। এছাড়া নওগাঁ-৬ আসনের জন্য ৩০ জন, পাবনা-৪ আসনের জন্য ২৭ জন, ঢাকা-৫ আসনের জন্য ১৪ জন এবং সিরাজগঞ্জ-১ আসনের জন্য ৩ জন দলীয় মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছেন।
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম (সিরাজগঞ্জ-১), সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন (ঢাকা-১৮), সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ ডিলু (পাবনা-৪), প্রখ্যাত শ্রমিক নেতা ইসরাফিল আলম (নওগাঁ-৬) ও হাবিবুর রহমান মোল্লার (ঢাকা-৫) মৃত্যুতে আসনগুলো শূন্য হয়।
ঢাকা-১৮ আসনে গত ১২ বছর ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। এ আসনে নৌকার হাল ধরতে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাদের খান, বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শাহজাহান আলী মন্ডল, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও প্রয়াত সাহারা খাতুনের ভাগনে আনিসুর রহমানও মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া উত্তর খান থানাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার অনেক থানা এবং ওয়ার্ডের নেতারাসহ এ আসন থেকে ৪৩ জন দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছেন।
সিরাজগঞ্জ-১ আসনে সবচেয়ে কম তিনটি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের অবর্তমানে এ আসন থেকে তার বড় ছেলে তানভীর শাকিল জয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এই আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নাসিমপুত্র অনেকটাই নিশ্চিত ভেবে অনেকে আবেদন করেননি। ১/১১ সরকারের দেয়া মামলার কারণে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি মোহাম্মদ নাসিম। ওই নির্বাচনে এই আসন থেকে বিজয়ী হন নাসিমপুত্র শাকিল। এ আসন থেকে মোহাম্মদ নাসিম ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নওগাঁ-৬ আসনে মোট ৩০ জন প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। গত ২৭ জুলাই সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলম মারা যাওয়ায় নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনটি শূন্য হয়। সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের স্ত্রী মোছা. সুলতানা পারিভীন, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর ফারুক, নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহিন মনোয়ারা হক, আত্রাই উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদ ইসলাম বিপ্লবসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতারাও ফরম কিনেছেন।
পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন শামসুর রহমান শরিফ ডিলু। তার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা গালিবুর রহমান শরিফ ফরম কিনেছেন। গালিবের সঙ্গে নৌকার প্রার্থী হতে স্থানীয় মাঠে সক্রিয় রয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রবিউল আলম বুদু সরদার, ব্যারিস্টার সৈয়দ আলী , সাবেক সংসদ সদস্য পাঞ্চাব আলী বিশ্বাস, মেজর জেনারেল (অব.) নজরুল ইসলাম রবি, আটঘরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তানভীর ইসলাম, ঈশ্বরদী উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বিশ্বাস। এ আসনের উপনির্বাচনে লড়তে মোট ২৭ জন ফরম নিয়েছেন।
ঢাকা-৫ আসনে হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর পুত্র শেখ কামালের স্ত্রী সুলতানা কামালের ছোট ভাইয়ের মেয়ে আওয়ামী লীগের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির সদস্য নেহরীন মোস্তফা দিশি ছাড়াও মো. আতিকুর রহমান আতিক, হারুন উর রশিদ, এম এ কাশেম, হারুন উর রশিদ মুন্না, কাজী মনিরুল ইসলামসহ মোট ১৪ জন মনোনয়নপত্র ক্রয় করেছেন।
সেরা নিউজ/আকিব