লাইফস্টাইল ডেস্ক:
মানসিক বিভিন্ন চাপের কারণে সঙ্গীর আচরণ বদলে যেতে পারে। কিন্তু মানসিক চাপের ব্যাপারটি যদি না থাকে, তাহলে হতে পারে সে আপনার প্রতি আগ্রহ হারিয়েছে। সত্যিই যদি তাই হয়, সঙ্গীর আচরণে ১১ ধরনের পরিবর্তন আসবে।
বন্ধুসঙ্গে পেতে মরিয়া: আপনি ছিলেন তার প্রথম পছন্দ। তার হঠাৎ কি হয়ে গেল যে, সে আপনাকে এড়িযে কেবল বন্ধুমহলে আড্ডায়-গল্পে নিজেকে নিয়োজিত করেছে। ‘বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা-গল্প সব হবে, তবে একটা সীমারেখার পর কেবল আপনারই থাকার কথা ছিল।’- এমনটাই বলছেন, ডিভোর্স সাপোর্ট বিশেষজ্ঞ ক্যাথি ডব্লিউ। তিনি আরও বলেন, সঙ্গী যদি আপনার সহচার্য সম্পর্কে উদাসীন হয়ে ওঠে তাহলে এই লক্ষণ পরবর্তী জীবনকে সুখের নাও করতে পারে।
অন্য অভ্যাস গড়ে তোলে: আপনার সঙ্গী আপনার খুশির জন্য অনেক কিছু হয়তো আগে করে থাকবেন। এক কথায় বলতে গেলে, আপনি যা পছন্দ করেন সেগুলোতে নিজেকে মজিয়ে রাখতেন। হঠাৎ তার আবেগ বা শখগুলো বদলে ফেললে বুঝবেন, তিনি আপনাকে সুখী করার বিষয়ে উদাসীন হয়ে উঠছেন। যদিও নিজের ভালোর জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমে নিয়োজিত হওয়া খুব স্বাভাবিক। কিন্তু কেবল নিজের ভালো লাগে এমন বিষয়ে পুরোপুরি মনোনিবেশ করা মানে ভালোবাসার বাইরে চলে যাচ্ছেন। ইতালির লেখক ফ্রেঞ্চেন্সা ডি মেগলিও বলেন, ‘যখন আবেগের কারণগুলো পরিবর্তন হয়ে যায়, তখন সে আপনাকে উপেক্ষা করতে পারে। আপনার সঙ্গে কম সময় ব্যয় করবে। বিবাহিতরা বৈবাহিক দায়িত্ব সম্পর্কে উদাসীন হবে, উপেক্ষা করবে। এটি একটি সমস্যা।’ এরকম পরিস্থিতিকে সঙ্গীকে তার আবেগ, ভালোবাসা, রোমান্স আর দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
নিজের ওজন এবং লুক সম্পর্কে উদাসীন: হয়তো কয়েকদিন আগেও সঙ্গী তার ওজন এবং সৌন্দর্য সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। এই সচেতনতা কমে এসেছে। আপনার আগ্রহের প্রতি, ভালোলাগার প্রতি তার কোনো আগ্রহ নেই। তবে এমনটা হতেই পারে যে, আপনার সঙ্গী অন্য কারও প্রেমে পড়েছেন অথবা যেকোনো কারণেই হোক আপনার প্রতি তার অনুভূতি, ভালোলাগা আগের মতো নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অন্তরঙ্গতা এড়িয়ে চলার মানে হচ্ছে, তিনি আপনাকে দূরে ঠেলে দেওয়ার উপায় বের করছেন। আপনি যদি তাকে আগের মতো হৃদয়ে, ভালোবাসায়, রোমান্সে পুরোপুরি ফেরত পেতে চান তাহলে আপনার দিক থেকে সম্পর্কের বন্ধন শক্তিশালী করার চেষ্টা করুন।
আলিঙ্গনে রাজি নন: একজন আরেকজনকে আলিঙ্গণ করা মানে শান্তি, নিরাপত্তা উপলব্ধি করা। এ এক দারুণ শারীরিক সংযোগ। কিন্তু সঙ্গী যখন এতে বিরক্ত প্রকাশ করে মনের ভেতর নিদারুণ কষ্ট দানা বাঁধে। এতে প্রথমেই সঙ্গীর প্রতি সন্দেহ প্রকাশ না করে খুঁজে দেখা উচিত, তিনি বিভিন্ন রকম চাপের ভেতর সময় অতিবাহিত করছেন কিনা। সবকিছু ঠিক থাকার পর যদি অনাগ্রহ দেখায়, তার মানে তিনি আপনার ঘনিষ্ঠতম চাহিদাপূরণ করতে আর আগ্রহী নয়। দাম্পত্য সম্পর্কে যেকোনো একজনের দিক থেকে এই আচরণের বহিঃপ্রকাশ সঙ্গীর প্রতি প্রতারণার প্রতীক।
কেমন কেটেছে দিন, এই প্রশ্নটিও করে না: সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় একজন আরেকজনের থেকে দূরে থাকা হয়। তখন এই সময়ের মধ্যে কেউ কারও খোঁজ না রাখার অর্থ কী হতে পারে? অবশ্যই তা কোনো ভালো সম্পর্কের নির্দেশনা দেয় না। আর তাও যদি না হয়, দিন শেষে এই প্রশ্নটি ‘সারা দিন তুমি কেমন ছিলে?’ এটা প্রত্যাশিত। তাও যখন না হয়, সেই সম্পর্ক যত্নহীন সম্পর্ক।
গভীরভাবে হাত ধরে না: একটু নির্জনে, দুজনে কাছাকাছি থাকার, পাশাপাশি বসার সুযোগ যখন মেলে তখন যদি সঙ্গী নিজ থেকে হাতটা না বাড়ায়, এটা মোটেও ভালো কোনো লক্ষণ নয়। বরাবরই যদি হাতটা আপনাকেই বাড়াতে হয় তাহলে হতে পারে যে, শারীরিক স্পর্শ ও সংযোগেও আগ্রহ তার মধ্যে কম আছে। এই লক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের লক্ষণ নয়।
কীসে তার মন্দ লাগে বলে না: ধরুন আপনি প্রশ্ন করছেন, ‘কোনো সমস্যা হয়েছে?’ কিন্তু একাধিবার জিজ্ঞেস করার পরও সে উত্তর দিতে আগ্রহী নয়। তাহলে বুঝবেন আপনাদের সম্পর্কে যোগাযোগ সঠিক নেই। এমনটাই বলছেন ডি মেগলিও। আর এমন আচরণ যদি দিনের পর দিন করতে থাকে তাহলে ফলাফল ভালো হয় না। আপনি বরং আপনার সঙ্গীকে স্বাভাবিক হতে সহায়তা করতে পারেন। তাকে বার বার প্রশ্ন করুন। সমস্যাটি কাটতে শুরু করবে।
সুখী কাপল দেখলে অস্বস্তি দেখায়: আপনি কি খেয়াল করে করেছেন, সুখী কোনো জুটি বা কাপলকে দেখলে আপনার সঙ্গী অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে? ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে অথবা অস্বস্তির প্রকাশ ঘটায়, তবে বুঝে নেবেন আপনাকে নিয়ে সন্তুষ্ট নন। এমন মানসিক অবস্থা তাকে আরও কোনো সম্পর্কে জড়িযে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে পারে। তিনি উপলব্ধি করতে পারেন, তার প্রত্যাশা পূরণে আপনি প্রস্তুত না।
চোখে চোখ রাখে না: চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার জন্য সম্পর্কটি যথেষ্ট মজবুত হতে হয়। অনেক সময় সঙ্গী যখন সত্যতা এড়িয়ে যেতে চায়, তিনি আপনার চোখের দিতে তাকিয়ে কথা বলতে আগ্রহী হবেন না। আপনি তার দিকে তাকিয়ে থাকলে সে অস্বস্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে।
ভবিষ্যত নিয়ে পরিকল্পনা করে না: ভবিষ্যত পরিকল্পনা করতে যদি আগ্রহ প্রকাশ না করে, তাহলে বুঝে নেবেন তিনি এই সম্পর্কটি বহুদূর নিয়ে যেতে চান না অথবা দ্বন্দ্বে ভুগছেন। হতে পারে অন্য কোনো ভালোলাগা, ভালোবাসা তাকে আকর্ষণ করছে। আর তিনি আপনাকে ছেড়ে যেতে চাইছেন।
একই বিষয়ে আগ্রহ দেখায় না: একজনের যা ভালোলাগে অন্যজনের তার প্রতি বিন্দুমাত্র ভালোলাগা, আগ্রহ যদি না থাকে তাহলে এই সম্পর্কটি সমস্যাযুক্ত। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, দুজনের ভালোলাগা একই রকম হতে হবে এমন কথা নেই। তবে একজনের ভালোলাগার প্রতি অন্যজনের উৎসাহ থাকা দরকার। একসঙ্গে উপভোগের মতো কোনো বিষয় যদি দুজনের মধ্যে না থাকে বা কোনো বিষয়ে একই লক্ষ্য না থাকে, তাহলে তা সমস্যাযুক্ত সম্পর্কের ইঙ্গিত হতে পারে।
সেরা নিউজ/আকিব