ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
করোনার সংক্রমণ মোকাবিলায় সাফল্য দেখানোর পর এবার বিমান চলাচলেও সাফল্য দেখাচ্ছে বিশ্বের ২য় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীন। আগামী মাসেই স্বাভাবিক গতিতে ফিরছে দেশটির অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচল। বুধবার (২৬ আগস্ট) এই তথ্য জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী বিমান পরিবহন নিয়ে করা সংস্থা ফরওয়ার্ডকিস।
সংস্থাটি বলছে, যেভাবে বিমানের টিকিট বুকিং হচ্ছে তাতে আগামী মাসের (সেপ্টেম্বর) শুরুতেই চীনের অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হবে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চীন থেকে যাত্রা করা বিমান টিকিটের বুকিং গতবছরের এই সময়ের মতই (৯৮ শতাংশ) হয়েছে। একই সময়ে অভ্যন্তরীণ গন্তব্যের বুকিং পৌঁছেছে ৮৬ শতাংশে। যে ধারায় বুকিং হচ্ছে তাতে আগামী মাসেই চীনের অভ্যন্তরে পুরোদমে বিমান চলাচল শুরু হবে।
ফরওয়ার্ডকিস’র ভাইস প্রেসিডেন্ট অলিভিয়ার পোন্তি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটা অবশ্যই একটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ, করোনা মহামারি শুরুর পর প্রথমবারের মতো বিশ্বের কোন স্থানে বিমান চলাচল মহামারির আগের অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে।
বিশ্বের অনেক দেশই অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালুতে বেশ জোর দিচ্ছে যদিও দূর ভ্রমণে বাড়তি সতর্কতার কারণে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিলম্ব করতে হচ্ছে। আমেরিকান এয়ারলাইন্সের তথ্য, করোনার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে বিমান ভ্রমণ কমেছে ৪৪ ভাগ। দেশটির সরকার বিমান পরিবহন খাতের সহযোগিতায় বাড়তি সহায়তার পদক্ষেপ না নিলে এয়ারলাইন্সগুলো কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ নেবে।
করোনা মোকাবিলায় চীনের দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতার কারণে অ্যাভিয়েশন খাতসহ দেশটির অর্থনীতিও দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। দেশটির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়) খুলে দেয়া ও এয়ার টিকিটের দাম কমিয়ে দেয়া বিমানে চলাচলের জন্য দেশটির নাগরিকদের উৎসাহী করেছে; আর এসব কারণেও বিশ্বব্যাপী স্থবিরতার মধ্যেই স্বাভাবিক গতি পাচ্ছে চীনের ভেতরের বিমান যোগাযোগ। গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বব্যাপী করোনা যখন দাপট দেখানো শুরু করে তখনই করোনা মোকাবিলায় সাফল্য দেখানো শুরু করে ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীন। সেসময় থেকেই দেশটির এয়ারলাইন্সগুলো তাদের ব্যবসায় ফিরতে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে কাজ করে আসছে। চীনে সংক্রমণের পরিমাণ অনেক কমে যাওয়াও বিমান পরিবহন স্বাভাবিক হওয়ার পেছনে বেশ বড় ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যেখানে ৫৬ জনে ১ জন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন সেখানে চীনে এর পরিমাণ ১৫ হাজারে ১ জন।
চীনের হলিডে স্পটখ্যাত দক্ষিণ চীন সাগর আগের অবস্থায় ফিরে আসার পেছনে ডিউটি ফ্রি (শুল্কমুক্ত) পলিসি বেশ কাজে দিয়েছে বলেও জানিয়েছে ফরওয়ার্ডকিস। তবে, চীনাদের বেইজিং ভ্রমণ এখনও গত বছরের তুলনায় ২৪.৮ শতাংশ কমই রয়েছে। এর কারণ, জুনের শুরুতে শহরটিতে করোনা দ্বিতীয় দফায় দাপট দেখানো শুরু করেছিল।
এদিকে, আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সতর্কতা, ২০২৪ সালের আগে করোনা মহামারির আগের অবস্থায় ফিরবে না।