স্টাফ রিপোর্টার:
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলায় করা মামলার ১৮ বছর পার হলেও বিচারকাজ শেষ হয়নি।
দুষ্কৃতকারীরা নিজেদের বাঁচাতে আইনের বেড়াজালে উচ্চ আদালতে হামলা সংক্রান্ত তিনটি মামলাই স্থগিত করে রেখেছে। জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মানববন্ধন থেকে হামলাকারীদের ফাঁসির দাবি জানানো হয়েছে।
সোমবার (৩১ আগস্ট) সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা নিউ মার্কেটের সামনে হামলাকারীদের ফাঁসির দাবিতে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কলারোয়া উপজেলা হিজলদি গ্রামে এক মুক্তিযোদ্ধার ধর্ষিত স্ত্রী মাহফুজাকে দেখতে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে রাস্তার ওপর গাড়ি আড় করে দিয়ে তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবের নির্দেশে তার দলবল সশস্ত্র হামলা চালায়।
তৎকালীন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সাংসদ শেখ ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমানসহ একডজন নেতাকর্মী ও সাংবাদিক আহত হন। এ ঘটনায় তৎকালীন কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও মামলাটি গ্রহণ করা হয়নি।
পরে আদালতের মাধ্যমে ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৭০/৭৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়। যার মামলা নম্বর সিআরপি ১১৭১/০২ ।
আদালত সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম গোলাম কিবরিয়া ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাংবাদিকের ১৬১ ধারা মোতাবেক জবানবন্দি উল্লেখ করে ঘটনাটি মিথ্যা বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন।
বাদী মুক্তিযোদ্ধা মুসলিম উদ্দিন ২০০৪ সালের ২২ জানুয়ারি পুলিশ প্রতিবেদন এর বিপক্ষে নারাজি আবেদন জানালে শুনানি শেষে তাও খারিজ হয়ে যায়। পরে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট বাদি ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে ক্রিমিনাল কেস দাখিল করেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই বিচারক আপিল মঞ্জুর করে নিম্ন আদালতে আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন, একই সাথে নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রম নতুন করে শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। অবশেষে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর বাদীর অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয় আদালত।
তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে চার্জশিট দাখিল করে। চার্জগঠনের সময় মামলাটি তিনটি ভাগে বিভক্ত হয়ে একটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে, অন্য দুটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে ২০১৭ সালে ৯ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বশির উল্লাহর আদালতে একটি মিস কেস এর মাধ্যমে আবারও স্থগিত হয়ে যায় বিচার কার্যক্রম। এরপর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও মামলাটি উচ্চ আদালতে স্থগিতাদেশ এ কারণে সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
বাদী সাক্ষীসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মামলাটি পুনরায় স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে মামলাটির কার্যক্রম চালানোর দাবি তোলেন।
সেরা নিউজ/আকিব