চুমকি কোথায় হারাল? - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
চুমকি কোথায় হারাল? - Shera TV
সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ০২:০৪ পূর্বাহ্ন

চুমকি কোথায় হারাল?

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:
হদিস মিলছে না টেকনাফ থানা থেকে বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের স্ত্রী চুমকি কারণের। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলা দায়েরের পর আত্নগোপনে চলে গেছেন তিনি। কেউ কেউ বলছেন তিনি ইতোমধ্যে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়েছেন।

এমন ধারণা দুর্নীতি দমন কমিশনের একাধিক কর্মকর্তার। ধারণা থেকে চুমকি কারণের বিদেশে পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন বলে জানান দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন।

রিয়াজ উদ্দিন গত ২৩ আগস্ট চুমকি কারণ ও তার স্বামী ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর ২৬(২)/২৭(১), মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২), ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা সহ দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদি রিয়াজ উদ্দিন জানান, মামলা দায়েরের পর চুমকি কারণ প্রথমে চট্টগ্রাম শহরের সদরঘাটে এক স্বজনের বাসায় কিছুদিন আত্নগোপনে ছিলেন। এরপর তার হদিস মিলছে না।

ধারণা করা হচ্ছে, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধ পথে তিনি ভারতে পালিয়ে গেছেন।

দুদকের পিপি মাহমুদুল হকও একই আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণ পলাতক রয়েছেন। তিনি হয়তো অবৈধ পথে সীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে গেছেন।

মাহমুদুল হক জানান, প্রায় ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনের দায়ে দুদকের দায়ের করা মামলায় ওসি প্রদীপকে গ্রেপ্তার দেখাতে আদালতে সোমবার আবেদন করা হয়েছে। যার শুনানি হবে আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বর। ওইদিন প্রদীপকে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।

বুধবার সকালে চুমকি কারণের হদিস না পাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তার বাবা অজিত কুমার কারণ বলেন,  মেয়ে কোথায় আছে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। এ বিষয়ে তিনি অন্য কোন কথা বলতেও নারাজ বলে সাফ জানিয়ে দেন। এমনকি চুমকি কারণের ব্যবহৃত মুঠোফোন নাম্বার সম্পর্কেও তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।

দুদক সুত্র জানায়, ওসি পদে থাকাকালীন ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জন করা অবৈধ অর্থ সরকারের চোখে বৈধ করার দায়িত্ব ছিল তার স্ত্রী চুমকি কারণের। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল তাদের সম্পদের হিসাব জমা দিতে বলা হলেও চুমকি কারণ তা জমা দেন ২০১৯ সালের ১২ মে।

চুমকি কারণ তাদের সম্পদের বিবরণে দেখিয়েছেন যে তার বাবা অজিত কুমার কারণ তাকে নগরীর পাথরঘাটা এলাকায় একটি ছয়তলা বাড়ি দিয়েছেন। ২০১৩ সালের ১লা আগস্ট চট্টগ্রাম সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দানপত্রমূলে দলিলটি (নং-১১৮৮২) সম্পাদন হয়। কিন্তু দুদকের তদন্তে বেড়িয়ে আসে তার বাবা বিত্তহীন। ফলে চুমকি কারণের দুই ভাই থাকলেও তারা বাবার কাছ থেকে তারা উল্লেখযোগ্য সম্পত্তি পাননি।

এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে ভবনটি তৈরি করেছেন এবং তা গোপন করার জন্য তিনি এটি প্রথমে তার শ্বশুরের নামে করেছিলেন। তার শ্বশুর সেটি তার স্ত্রীর নামে লিখে দেন।

তাছাড়া ২০০২ সালে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে পাঁচটি পুকুর নগদ সাড়ে ১৬ লাখ টাকায় ১০ বছরের জন্য ইজারা নেয়ার চুক্তিপত্র দুদকে দাখিল করা হয়। কিন্তু দুদক যাচাই করে দেখেছে, চুমকি মূলত একজন গৃহিণী এবং তার স্বামী ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ১৯৯৫ সালে এসআই হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। ২০০২ সালে তার কিংবা স্বামী প্রদীপের ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা সঞ্চয় ছিল না। চুমকির ব্যাংক হিসাব বিবরণীতেও মৎস্য ব্যবসা সম্পর্কিত কোনো লেনদেনের তথ্যও পাওয়া যায়নি।

দুদকের অনুসন্ধানকালে আসামি চুমকি কারণ তার আয়ের  স্বপক্ষে কমিশন ব্যবসার লাইসেন্স, সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে ব্যবসা করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র, ব্যাংক হিসাবের লেনদেন বা অন্য কোন প্রামাণ্য রেকর্ডপত্র সরবরাহ করতে পারেননি।

এতে প্রমাণিত হয়, আসামি চুমকি কারণ মৎস্য ব্যবসা থেকে কোনো আয় করেননি। তিনি তার স্বামী প্রদীপ কুমার দাশের অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করার অসৎ উদ্দেশে ভুয়া মৎস্য ব্যবসা প্রদর্শন করে উক্ত আয় দেখিয়েছেন।

দুদকের মামলার এজাহারের বিবরণে দেখা যায়, চুমকি কারণের স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে চার কোটি ২২ লাখ টাকার এবং পারিবারিক ব্যয় হয়েছে ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকার। সেখানে তার বৈধ আয় মাত্র ৪৯ লাখ ১৩ হাজার টাকা। সে হিসাবে চুমকি জ্ঞাত বহির্ভূত আয় করেছেন তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকা।

প্রসঙ্গত, সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলা দায়ের হওয়ার পর ওসি প্রদীপকে টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় গত ৫ই আগস্ট। গত ৬ই আগস্ট তিনি কক্সবাজার আদালতে আত্নসমর্পণ করেন। চারদফা রিমান্ড শেষে আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার বিকেলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360