সেরা নিউজ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন ব্যবস্থা একসময় উদহারণ ছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। কিন্তু ২০১৬ সালের নির্বাচনের পর সেই পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গেছে। ট্রাম্পের জয়ী হওয়া নিয়ে নানা কথা চালু আছে। রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ থেকে মুক্ত নয় সেই নির্বাচন। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে রয়েছে নানান শঙ্কা। তারপরও পুনরায় জিততে মরিয়া হয়ে উঠেছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিগত চারটি বছর চরম বিতর্কের মধ্যে থেকেও সেই তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জনপ্রিয়তা কমেনি তার। নিত্য নতুন স্টাইলে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন এই ধনকুবের প্রেসিডেন্ট।
২০১৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার ধোঁয়া তুলে আমেরিকানদের কাছে নিজের শক্ত অবস্থান করে নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু চার বছরে সীমান্তে কতটুকু দেয়াল নির্মাণ হয়েছে তা সবারই কমবেশী জানা। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলার বিষয়টি অনেক আগেই চাপা পড়ে গেছে। নিত্য নতুন ইস্যু তৈরি করে সারা বছরই আলোচনায় থাকতে চেয়েছেন ট্রাম্প। আর ইমিগ্রেশন ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়ে শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের কাছে বরাবরই একটা দেশপ্রেমিক প্রেসিডেন্টে পরিণত হয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে যে কোনো প্রেসিডেন্টর চেয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দু’বারের মেয়াদে দুই মিলিয়ন অবৈধ ইমিগ্র্যান্টকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। সে তুলনায় ট্রাম্পের আমলে গত চার বছরে বহিস্কার হয়েছে সবচেয়ে কম। অথচ এই চার বছরে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা নিয়ে সর্বোচ্চ কথা বলেছেন, সর্বোচ্চ নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন তিনি। এ সবই তিনি করেছেন শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের মন জয় করার জন্য এবং নির্বাচনে জেতার কৌশল হিসাবে।
ক্ষমতায় আসার পর বছরের ৩৬৫ দিনই হোয়াইট হাউজে সরব প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত চার বছরে ট্রাম্প প্রশাসনে কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বরখাস্তের ঘটনা ব্যাপক আলোচনা জন্ম দেয়। এখনো প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদ শূন্য রয়েছে। একের পর এক আলোচনার জন্ম দিয়েও ‘স্ট্যান্টবাজি’তে পিছিয়ে নেই ট্রাম্প। শুধু একটি বিষয়ে হোচট খেয়েছেন তিনি, আর তা হলো করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা। এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ এক লাখ ৯০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এখনো করোনার চূড়ান্ত ভ্যাকসিন আবিস্কার হয়নি। বেকারত্বের হার দেশটিতে সর্বোচ্চ। অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এতকিছুর পরও ট্রাম্পের লক্ষ্য আসন্ন নির্বাচনে জয়ী হওয়া। সে লক্ষ্যেই তিনি কাজ করছেন। সত্যি হোক, আর মিথ্যা হোক, ট্রাম্প ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন করোনার ভ্যাকসিন নভেম্বরের পাওয়া যাবে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও ট্রাম্প সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চাপ দিচ্ছেন স্কুল খুলে দিতে। দ্বিতীয় স্টিমুলাস প্যাকেজ পাস করাতে কংগ্রেসে রাজনীতিবিদরা যখন একমত হতে পারছেন না, তখন ট্রাম্প তার নির্বাহী আদেশে ৪৯টি স্টেটকে কিছু সুবিধা দিয়ে চলেছেন। নির্বাচনের আগে প্যাকেজ পাস না হলে তিনি আবারো নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে দেশটির নাগরিকদের অর্থ সহায়তা দিতে চান।
এদিকে আগামী নির্বাচনে জিততে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যেসব রাজ্যের ভোট বিপক্ষে যেতে পারে সেসব রাজ্যে তিনি বার বার যাচ্ছেন ভোটারদের সহানুভূতি নেবার জন্য। কোনো কোনো সময় ট্রাম্পের এসব প্রচারণায় পেছনে পড়ছে তার দল রিপাবলিকান পার্টি। কারণ দলের সঙ্গে পরামর্শ করে ট্রাম্প কিছুই করছেন না। বরং মাধ্যে মধ্যে রাজনীতিবিদদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন তিনি। ট্রাম্পের লক্ষ্য একটাই, তা হলো আবারো ক্ষমতায় আসা। আর এজন্য তিনি মরিয়া হয়ে প্রচার চালাতে শুরু করেছেন।
সেরা নিউজ/আকিব