অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশের নদী ও সমুদ্রে এবার বিপুল পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়েছে। এর মাঝে পূজা উপলক্ষে ভারতে ১৯৭ টন ইলিশ রপ্তানি করা হয়েছে। যেদিন থেকে ইলিশ রপ্তানি শুরু করে বাংলাদেশ, সেদিন থেকেই ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর থেকে সোশ্যাল সাইটে নানারকম ট্রল শুরু হয়। যার মাঝে অন্যতম হলো, কলকাতার বাজারে পিস হিসেবে ইলিশ বিক্রি করা নিয়ে।
বাংলাদেশের শহর বা গ্রামের বাজারে সাধারণত আস্ত মাছই কেজি হিসেবে বিক্রি করা হয়। খুব বড় মাছ, ১০-১৫ কেজি ওজনের হলে কেটে বিক্রি করা হয়। তবে মাছ কেটে পিস হিসেবে বিক্রির চল বাংলাদেশে খুব একটা নেই। কিন্তু ভারতে আপনি এই সুবিধা পাবেন। যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী পিস হিসেবে মাছ কিনতে পারে। শুধু ভারতে নয়, বিশ্বের আরও অনেক দেশে এই ব্যবস্থা আছে। এই বিষয়টি অনেকের চোখে কৃপণতা হিসেবে প্রতীয়মান হয়েছে। এ নিয়ে চলছে হাসাহাসি।
অনেকেই মনগড়া কিছু পোস্ট দিচ্ছেন; সেটা অবশ্যই ফান করে। যেমন, ‘৬০০ টাকায় তিন ভাগে একটি ইলিশ মাছ কিনতে গিয়ে সংঘর্ষ লেগেছে কলকাতায়। লেজ,মাথা আর পেটের অংশের ভাগাভাগি নিয়ে এ সংঘর্ষ বাঁধে। আহত একজন অভিযোগ করেন তিনি ভাগে ৭০ গ্রাম কম পেয়েও দুটো ঘুষি খেয়েছেন।’ এসব ঘটনার সত্যতা না থাকলেও অসংখ্য ফেসবুক ব্যবহারকারী শেয়ার করে মজা লুটছেন। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এটাই মূলতঃ ট্রোলিংয়ের অন্যতম কারণ।
তবে এতশত ট্রোলিংয়ের মাঝে বিপরীত চিত্রও দেখা যাচ্ছে। অনেকে বাংলাদেশে মাছ বিক্রির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাদের বক্তব্য, ৭০০ গ্রাম ওজনের একটা ইলিশ কিনতে বাংলাদেশ প্রায় ৫০০ টাকা লাগে। মধ্যবিত্ত শ্রেণী সাধারণত এই ওজনের মাছ কেনে। আর এক কেজি কিংবা এর বেশি ওজনের ইলিশ কেনে বিত্তবানেরা। এসব অন্যদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত ইলিশ পেলেও জাতীয় মাছের স্বাদ থেকে শ্রমজীবী মানুষ একেবারেই বঞ্চিত।
এত টাকা দিয়ে ইলিশ কেনার সাধ্য তাদের নেই। শ্রমজীবীদর ইলিশের স্বাদ দেওয়ার জন্য তারা বাংলাদেশেও পিস হিসেবে ইলিশ বিক্রির দাবি জানাচ্ছেন। গত কয়েক বছরে সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশে ইলিশের উৎপাদন অনেক বেড়েছে। যে কারণে বাজারে দামও কম। সেই ‘কম দাম’ কিন্তু শ্রমজীবী মানুষের নাগালে নেই। অবৈধভাবে বিক্রি করা জাটকা ইলিশের স্বাদ নিতেও তাদের দুবার ভাবতে হবে।
সেরা নিউজ/আকিব