জরুরি অবস্থা উপেক্ষা করে থাইল্যান্ডের গণতন্ত্রপন্থিরা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে টানা চতুর্থ দিনের মতো রাজধানী ব্যাংককে উত্তাল বিক্ষোভ করেছে। গতকালও পুলিশ ব্যাপক হারে জলকামান নিক্ষেপ করে এবং লাঠিচার্জ করে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। হাজার হাজার বিক্ষোভকারী ব্যাংককের জনসভায় যোগ দেয়।
এদিকে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জরুরি অবস্থা যদি আন্দোলন দমনে কার্যকর না হয়, তাহলে কারফিউ জারি করা হতে পারে। জরুরি অবস্থার মেয়াদ এক মাস হবে।
শনিবার সকাল থেকেই ব্যাংককে দলে দলে লোক জড়ো হতে থাকে এবং নানারকম স্লোগান দেয়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান দিয়ে রাসায়নিক মিশ্রিত পানি নিক্ষেপ করে পুলিশ। এছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী নেতাকে। তাদের প্রতিহত করতে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল হেলমেট পরা দাঙ্গা পুলিশ। এদিন সেখানে অনেকটা হংকংয়ের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পুলিশ যন্ত্রণাদায়ক পানি ছুড়লেও ছাতা হাতে সেখানেই অনড় থাকেন অনেক বিক্ষোভকারী।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ‘আমরা আমাদের শক্তি দেখাতেই এখানে জড়ো হয়েছি। আমরা আর স্বৈরতন্ত্র মেনে নেব না।’
‘আমরা কোনো সহিংসতা করিনি, তারপরও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। তবে আমরা মোটেও ভীত নই। এই জনসমুদ্রই তার প্রমাণ।’
বিক্ষোভকারীদের প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- থাই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সরকার ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন, সামরিক সরকারের লেখা সংবিধান সংশোধন, ভিন্নমতের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধ এবং রাজশাসন সংস্কার। তবে আন্দোলনের মুখেও পদত্যাগ করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ২০১৪ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা থাই প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা।
সমালোচকদের দাবি, ক্ষমতায় থাকতে গত বছরের নির্বাচনে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন থাই প্রধানমন্ত্রী।
সরকারবিরোধী এমন বিক্ষোভ থাইল্যান্ডের ইতিহাসে খুব কমই দেখেছে দেশটির মানুষ। দেশজুড়ে জারি করা জরুরি অবস্থা ও বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই ব্যাংককের রাস্তায় অবস্থান নেন কয়েক লাখ মানুষ। ২০১৪ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ও’চার পদত্যাগ, সংবিধান সংশোধন, নতুন নির্বাচন ও রাজতন্ত্র পুনর্গঠনের দাবিতে টানা তিন মাস ধরে আন্দোলন করে আসছে সরকারবিরোধীরা।