সেরা নিউজ ডেস্ক:
মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা সরকারের জনপ্রিয়তার পরীক্ষা নিতে চাই। এজন্যই মধ্যবর্তী নির্বাচনে দাবি তুলেছি। তবে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন আর সম্ভব নয় বলেও মনে করেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকালে ঠাকুরগাঁওয়ে তার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল এসব কথা বলেন। করোনা মহামারির কারণে প্রায় ছয় মাস পর তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে আসেন।
ফখরুল বলেন, ‘মঙ্গলবার দেশে বিভিন্ন উপজেলায় অনুষ্ঠিত নয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আবারো প্রমাণ হয়েছে এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুযায়ী এখানে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে এবং তারা আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর দলীয় মার্কায় স্থানীয় সরকার নির্বাচনব্যবস্থা চালু করে। এতে সন্ত্রাসী কায়দায় ভোটের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে নেয়। এতে একটা জিনিস প্রমাণিত হয়েছে দলীয় সরকারের আওতায় নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।’
মির্জা ফখরুল ঢাকায় অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনের প্রাপ্ত ভোট সম্পর্কে বলেন, ‘ইলেকশন কমিশনের হিসাব মতে সেখানে শতকরা ১০ ভাগ ভোট পড়েছে। সেখানে যে ভোটার সংখ্যা দেখানো হয়েছে সেটিও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তারপরেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভোটের ফলাফলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’
ফখরুল বলেন, ‘এটা একটা প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়। সে কারণে আমরা বলতে চাই, নির্বাচনকালীন সরকার যদি পরিবর্তন না হয়, নির্বাচন কমিশন যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আগের রাতে এবং ভোটের দিন দেখা গেছে, সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রযন্ত্রের সহায়তায় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তারা ভোটকেন্দ্রগুলো দখল করে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোটের ফলাফল তাদের পক্ষে নিয়ে নেয়। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ভোটে কেউ ভোট দিতে যায়নি এবং ২০১৮ সালে তা আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। সেই সময় তারা ১৫৪টি সংসদীয় আসন তাদের পক্ষে নিয়ে নেয়।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিএনপির নেতাকর্মীদের পদত্যাগের প্রস্তাবের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি (ওবায়দুল কাদের) তো আমাদের নেতৃত্বের পদত্যাগ চাইতে পারেন না।এই অধিকার তার নেই। আমাদের পদত্যাগ চাইতে পারে আমাদের দলের লোকেরা। মূল কথা হলো, আমরা তাদের (সরকারের) পদত্যাগ চেয়েছি বলেই তারা আমাদের পদত্যাগ করতে বলেছেন।’
মহাসচিব ফখরুল আরও বলেন, ‘এ সরকারের সময়ে আমার দলের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, এক হাজার নেতাকর্মীর খুন, ৫০০ এর মতো নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে।তারপরও আমরা টিকে আছি। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার কথা না বলে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিয়ে তাদের জনপ্রিয়তার পরীক্ষা দেখতে চাই।’
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, অর্থ-সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান তুহিনসহ দলীয় নেতাকর্মীরা।
সেরা নিউজ/আকিব