সেরা নিউজ ডেস্ক:
ডাকযোগে দেয়া ভোট গণনার সময়সীমা সংক্রান্ত রিপাবলিকানদের একটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট।
পেনসিলভানিয়ায় রিপাবলিকানরা চেয়েছিলেন ৩ নভেম্বর ভোট গ্রহণের পর সর্বোচ্চ তিন দিন পর্যন্ত ডাকযোগে পাওয়া ভোট হিসেবে ধরা ও গণনা করার সময়সীমা বেঁধে দেয়ার জন্য।
কিন্তু মার্কিন সুপ্রিমকোর্ট দ্বিতীয়বারের মতো তাদের এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এর অর্থ হচ্ছে, নির্বাচনের ছয় দিন পর পর্যন্ত হাতে আসা ডাকযোগের ভোট গণনা করা হবে।
পেনসিলভানিয়া ও নর্থ ক্যারোলিনা রাজ্যের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নির্বাচনের ছয় দিন পরও ডাকযোগে আসা ভোট গণনা অব্যাহত রাখার বিষয়টি অনুমোদন করেছেন সুপ্রিমকোর্ট।
রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট, এপি। এবারের মার্কিন নির্বাচনে ডাকযোগে দেয়া ভোটের হিসাব নিয়ে বাধতে পারে বড় ধরনের বিপত্তি।
রিপাবলিকান প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগে থেকেই বলে আসছেন ৩ নভেম্বর জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়ে যাওয়াই উত্তম। তিনি ডাকযোগে দেয়া ভোট নিয়ে অনেক প্রশ্ন আগেও তুলেছেন, এখনও তুলছেন।
ট্রাম্পশিবিরের দাবি হচ্ছে- ডাকযোগে দেয়া ভোটে জালিয়াতি ও কারচুপির আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি এই ভোট গণনা সংক্রান্ত কারণে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পশিবির চাচ্ছিল দ্রুত ডাকযোগে আসা ভোটের গণনা শেষ করা।
নর্থ ক্যারোলিনার এক নিম্ন আদালত রুলিং দিয়েছিলেন ডাকযোগে আসা ভোট ৩ নভেম্বরের পর ছয় দিন পর্যন্ত যাতে গ্রহণ করা হয়। সেটা ঠেকাতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল রিপাবলিকান শিবির।
একই ধরনের রুলিং হয়েছে পেনসিলভানিয়ায়ও। ভিন্ন দুটি রুলিংয়ের ক্ষেত্রেই সুপ্রিমকোর্ট নিম্ন আদালতের রুলিং বাতিল করেননি। এর অর্থ হচ্ছে, নির্বাচনের পর ভোট গণনা ও ফল প্রকাশে বিলম্বের ক্ষেত্রে আদালত কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবেন না।
প্রস্তাবটি ৫-৩ ভোটে পাস হয়। এটিও আটকে দেয়ার চেষ্টা করেছিল রিপাবলিকান চ্যালেঞ্জকারীরা। কিন্তু একজন সিনিয়র ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট বিচারক ও ফোর্থ ইউএস সার্কিট কোর্ট অব আপিলস তাদের আবেদন আমলে নিতে অস্বীকার করেছে।
ট্রাম্পের নিয়োগ দেয়া সুপ্রিমকোর্টের রক্ষণশীল বিচারপতি অ্যামি কোনি ব্যারেট অবশ্য এই দুটি শুনানির একটিতেও উপস্থিত ছিলেন না। তার উপস্থিত না থাকার বিষয়ে আদালত বলেছেন, যেহেতু দ্রুত রেজুলেশন দরকার এবং তার রিভিউর জন্য সময়ের দরকার।
তাই তাকে ছাড়াই রায় দেয়া হয়। ভোটের ফল নিয়ে কোনো ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিলে আদালতের হস্তক্ষেপ লাগতে পারে। এ কারণে তড়িঘড়ি করে নিজের মতের রক্ষণশীল বিচারপতি ব্যারেটের নিয়োগ চূড়ান্ত করে ট্রাম্প প্রশাসন।
ডেমোক্র্যাটরা চেয়েছিলেন বিচারপতি নিয়োগের কাজটি যেন নির্বাচনের পর করা হয়। এদিকে ভোটের বাকি আর মাত্র ৫ দিন থাকলেও এখনও অনেক ঝুলন্ত রাজ্যে ডাকযোগে ভোটের ব্যালট ফেরত পাঠানো হয়নি।
ফ্লোরিডা, মিশিগান ও নেভাডার মতো ব্যাটলগ্রাউন্ড রাজ্যে অনেক ডাকযোগে ভোটের ব্যালট বিলি করাও বাকি। অনেক ভোটার ব্যালট নিলেও সেগুলো জমা দিচ্ছেন না এখনও।
এ কারণে পেনসিলভানিয়ার গভর্নর ভোটারদের তাড়া দিয়েছেন দ্রুত ব্যালট পাঠানোর জন্য। মিশিগানের রাজ্য সচিব জোসেলিন বেনসন বলেন, ভোটের দিন কাছে চলে এসছে। ভোটাধিকার প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
ডাকযোগে ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে সময়মতো ভোট দিন ও ব্যালট ডেলিভারি করুন।
ডাকযোগে দেয়া ভোট নিয়ে উদ্বেগ আছে ডেমোক্রেট শিবিরেও। এ বছর ভোটের ডাক সময়মতো পৌঁছে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্যরা।
তারা বলেছেন, শেষ মুহূর্তে ও নির্ধারিত সময়ের পর পাঠানো ডাকযোগের ভোটের ব্যালট ঠিক সময়ে পৌঁছানো নিয়ে হযবরল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ আছে নির্বাচন কর্মকর্তাদেরও।
এ কারণে যারা ডাকযোগে ভোট দিয়ে ব্যালট ডাকে পাঠাননি, তাদেরকে সরাসরি ব্যালট পৌঁছে দেয়ার বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণের জন্য বলছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা।
এ ছাড়া এখনও যারা ডাকযোগে ভোট দেয়ার পরিকল্পনা করছেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট গণনার জন্য তাদেরকে সরাসরি উপস্থিত হয়ে ভোট দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সেরা নিউজ/আকিব