সেরা নিউজ ডেস্ক:
নির্বাচনের সব সমীকরণ উল্টে দিয়ে ২০১৬ সালের মতো এবারও চমক দেখাতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চূড়ান্ত বিজয় ছিনিয়ে আনতে শেষ মুহূর্তের প্রচারে এখন তাই মরিয়া তিনি।
সেই লক্ষ্যেই রোববার থেকে শেষ দু’দিনের জন্য সুইং স্টেট বা ব্যাটলগ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত রাজ্যগুলোতে যাচ্ছেন। প্রথম দিনেই অন্তত পাঁচটি রাজ্যে র্যালি-সমাবেশ করবেন।
এ রাজ্যগুলোর ওপর নির্ভর করছে আরও চার বছর তার হোয়াইট হাউসে থাকা-না থাকা। আগের দিন শনিবারই অন্যতম সুইং স্টেট পেলসিলভানিয়ায় চারটি সমাবেশে অংশ নেন তিনি।
জনসভায় দেয়া ভাষণে রিপাবলিকান প্রার্থী বলেন, আগামী চার বছরের জন্য আমিই ফের নির্বাচিত হতে যাচ্ছি। সুন্দর হোয়াইট হাউসের আগামী চার বছরের বাসিন্দা আমিই হব।’ খবর রয়টার্স ও এএফপির।
২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পেনসিলভানিয়ায় তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি শতকরা ৩৩ ভাগের ওপর উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বলেন, অর্থনীতির এই শক্তিশালী ধারাকে জো বাইডেন থামিয়ে দিতে চান। তিনি বলেন, পুনরায় নির্বাচিত হলে প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ পেনসিলভানিয়ায় ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে। ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন এই পেনসিলভানিয়াতেই জন্মগ্রহণ করেছেন। তাই এই স্টেটে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
মিশিগানের ডেট্রয়েটে এক নির্বাচনী সমাবেশে বাইডেন বলেন, ‘ব্যাগ গুছিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে ট্রাম্পের। যে প্রেসিডেন্ট জাতির মধ্যে বিভেদ তৈরি করেছেন, জাতিকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং দেশে ঘৃণা ছড়িয়েছেন তিনদিনের মধ্যেই আমরা তার সমাপ্তি ঘটাতে পারি।’ বাইডেন আরও বলেন, তিনি এই নির্বাচনে বেশ আশাবাদী, আমেরিকানরা ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য এবার ভোট দেবেন।
তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ আমেরিকান এর মধ্যেই ভোট দিয়েছেন। আরও কয়েক লাখ মানুষ সামনের দিনগুলোতে ভোট দেবেন।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের জন্য আমার একটি সহজ বার্তা হচ্ছে, এ দেশের শক্তি পরিবর্তনের ক্ষমতা আপনাদের হাতে। ডোনাল্ড ট্রাম্প কীভাবে চেষ্টা করেছেন সে বিষয়ে আমি মাথা ঘামাই না। এ দেশের জনগণকে ভোট দেয়া থেকে কেউ বিরত রাখতে পারবে না।’
এবারের নির্বাচনে বিজয়ী হতে ব্যর্থ হলে ১৯৯২ সালের পর ট্রাম্পই হবেন দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হতে না পারা প্রথম ব্যক্তি। এর আগে ১৯৯২ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট সিনিয়র বুশের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটেছিল। জনমত জরিপের ফলকে মিথ্যা প্রমাণ করে, পিছিয়ে থাকা অবস্থা থেকে জয় ছিনিয়ে আনার লক্ষ্যে দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে শেষ দু’দিনের প্রচার শুরু করতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রোববার থেকে শুরু হওয়া এ দফার প্রচারে রিপাবলিকান প্রার্থী সেসব রাজ্যে সমাবেশ করবেন, যেগুলোর ফলের ওপর নির্ভর করছে আরও চার বছর তার হোয়াইট হাউসে থাকা হবে নাকি জর্জ বুশের পর তিনিই হতে যাচ্ছেন প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যিনি এক মেয়াদের বেশি টিকতে পারলেন না।
যুক্তরাষ্ট্রে মহামারী মোকাবেলায় ট্রাম্পের অদক্ষতাকে প্রচারের মূল হাতিয়ার বানানো বাইডেন রোববার পেনসিলভানিয়া থাকবেন।
এ রাজ্যের ২০টি ইলেক্টোরাল ভোটও এবারের নির্বাচনে জয়-পরাজয় নির্ধারণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। শেষ দু’দিনের প্রচারে ট্রাম্পের মোট ১০টি সমাবেশে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। দিনে পাঁটি করে।
ক্ষমতাসীন এ রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের লক্ষ্য, প্রচারে সাড়া ফেলে নির্বাচনের দিন মঙ্গলবার নিজের পক্ষে বিপুল জন রায় নিয়ে আসা। রোববার ট্রাম্প মিশিগান, আইওয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া ও ফ্লোরিডার সমাবেশে অংশ নেবেন। সোমবার তার প্রচার সূচিতে আছে নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া ও উইসকনসিনে একটি এবং মিশিগানে দুটি সমাবেশ।
সেরা নিউজ/আকিব