ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া পাল্টে যাবে - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া পাল্টে যাবে - Shera TV
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন

ট্রাম্প ক্ষমতা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া পাল্টে যাবে

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২০

সেরা নিউজ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সব রকম আইনগত ব্যবস্থা থেকে সুরক্ষিত ডনাল্ড ট্রাম্প।  ফৌজদারি হোক বা সিভিল হোক- কোনো অপরাধের অভিযোগই তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। কিন্তু এবার ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি হেরে গেছেন। স্বাভাবিক নিয়মে আগামী ২০শে জানুয়ারি তাকে ক্ষমতা বুঝে দিতে হবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাতে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আবার একজন সাধারণ নাগরিকে পরিণত হবেন। এর অর্থ হলো তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে যেসব সুযোগ-সুবিধা পেতেন তার পুরোটা আর পাবেন না। তাকে তখন মামলা মোকদ্দমা আর প্রসিকিউটরদের পেছনে ছুটতে হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফেডারেল এবং নিউ ইয়র্ক রাজ্যের প্রসিকিউটর ডানিয়েল আর অ্যালোনসো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে বলেছেন, তিনি ক্ষমতা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবহাওয়া পাল্টে যাবে। তদন্ত থামিয়ে দেয়ার মতো প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতা তখন তার আর থাকবে না।

তার বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কে ফৌজদারি তদন্ত হতে পারে। যদি তার জন্য আইনগত সবচেয়ে বড় কোনো উদ্বেগের বিষয় থাকে, তাহলে সেটা হবে এই তদন্ত। এ ছাড়া তার রিয়েল এস্টেট কোম্পানি, ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের বিরুদ্ধেও তদন্ত হতে পারে।  অনলাইন বিবিসিতে এসব কথা লিখেছেন সাংবাদিক জোশুয়া নেভেট। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে পরিবারের এক সদস্যের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ থেকে শুরু করে তার একজন অর্থনীতি বিষয়ক একজন উপদেষ্টার যৌন হয়রানির অভিযোগ। ফলে আদালতে আইনি লড়াইয়ের ঝড় উঠতে পারে। তিনি যেসব বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন তার মধ্যে রয়েছে ১. বিখ্যাত প্লেবয় ম্যাগাজিনের মডেল কারেন ম্যাকডোগাল, পর্নো তারকা স্টর্মি ডানিয়েলকে অর্থের বিনিময়ে মুখ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ।
২. আয়কর ও ব্যাংক হিসাবে জালিয়াতির অভিযোগের তদন্ত।
৩. রিয়েল এস্টেট প্রতারণার অভিযোগের তদন্ত।
৪. বেতনাদি সংক্রান্ত মামলা।
৫. যৌন অসদাচরণের মামলা।
৬. মেরি ট্রাম্প মামলা।

এর মধ্যে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে পর্নো তারকা স্টর্মি ডানিয়েলকে অর্থের বিনিময়ে মুখ বন্ধ করিয়েছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প- এমন অভিযোগ বেশ চাউর হয়েছে। প্লেবয় মডেল কারেন ম্যাকডোগাল এবং স্টর্মি ডানিয়েল দু’জনেই বলেছেন, ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে তাদের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল। এ জন্য ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে তাদের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে চুক্তি হয়েছিল- যাতে তারা মুখ না খোলেন। কিন্তু তারা কথা রাখেন নি। ২০১৮ সালে এসে ফাঁস করে দেন সব। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির বিরুদ্ধে তারা রাজনৈতিক ডিনামাইট বিস্ফোরণ করেন যেন। এর ফলে দু’টি ফৌজদারি অপরাধের তদন্তের আলো নিভে গেল। প্রথমটি হলো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাবেক ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেন। তিনি ফেডারেল, জাতীয় এবং আইনের শাসন ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তদন্তে মাইকেল কোহেন স্বীকার করে নেন যে, ওই দুই নারীকে অর্থ দেয়ার বন্দোবস্ত করেছিলেন তিনি। এই অর্থ দেয়া হয়েছিল নির্বাচনী প্রচারণায় অর্থের ব্যবহার বিষয়ক রীতির লঙ্ঘন। এ অপরাধে মাইকেল কোহেনকে ২০১৮ সালে তিন বছরের জেল দেয়া হয়। মাইকেল কোহেন স্বীকার করেন, ওই দুই নারীকে অর্থ দেয়ার জন্য তাকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

২০১৯ সালের আগস্টে মিস্টার ভ্যান্সের তদন্তকে ট্রাম্প অর্গাইজেশনের আইনজীবী একটি রাজনৈতিক খেলা হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। মিস্টার ভ্যান্স ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের আয়কর বিষয়ক ডকুমেন্টের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তিনি কয়েক বছরের আর্থিক রেকর্ড দেখতে চেয়েছিলেন। এর মধ্যে ছিল ট্রাম্পের আট বছরের আয়কর রিটার্ন- হোলি গ্রেইল। তখন থেকেই এসব ব্যবস্থাকে আটকে দেয়ার চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। তিনি এ বিষয়ে আদালতকে বলেছেন, এসব করা হচ্ছে রাজনৈতিক হয়রানি করার জন্য। কিন্তু ফেডারেল আপিল কোর্ট অক্টোবরে ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। আদালত ট্রাম্পের আয়কর রিটার্ন প্রসিকিউটরদের আওতায় নিয়ে যান। আগস্টে এই আয়কর রিটার্নের জন্য আবেদন করেন মিস্টার ভ্যান্স। এর মধ্যে রয়েছে ইন্স্যুরেন্স এবং ব্যাংক জালিয়াতি। সেপ্টেম্বরে আরেকটি আদালত আয়কর জালিয়াতিকে একটি পরিকল্পিত অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করে।

নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল লেতিতিয়া জেমস ট্রাম্পকে আরো বিপদে ফেলে দিতে পারেন। ২০১৯ সালের মার্চ থেকে তিনি ট্রাম্প অর্গানাইজেশন রিলে এস্টেট ব্যবসায় কোনো প্রতারণা করেছে কিনা তার একটি সিভিল তদন্তে নেতৃত্ব দিচ্ছেন লেতিতিয়া জেমস। এই তদন্ত আবার মাইকেল কোহেন পর্যন্ত যেতে পারে। কারণ, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে কংগ্রেসে দেয়া সাক্ষ্যে মাইকেল কোহেন বলেছেন, ঋণ নিশ্চিত করতে এবং আয়কর কমাতে ট্রাম্প তার সম্পদের মূল্যকে কমিয়ে দেখাতেন। এর ফলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অঢেল সম্পদের বিষয়ে আরো তথ্য তালাশ করার ক্ষেত্রে তৈরি করে দেয় লেতিতিয়া জেমসকে। কিন্তু তার এ প্রচেষ্টাকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ছেলে এবং ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিক ট্রাম্প রাজনৈতিক প্রতিশোধ বলে আখ্যায়িত করেছে।

প্রেসিডেন্সির সময়কালে ট্রাম্প সুবিধাদি গ্রহণের ক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ আছে। সংবিধানে এ বিষয়ে যেসব কথা বলা আছে তার অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মকর্তারা, প্রেসিডেন্টসহ সবাই বিদেশি কোনো রাষ্ট্র থেকে কোনো রকম সুবিধা গ্রহণ করলে তা কংগ্রেসকে জানাতে হয়। কিন্তু ট্রাম্প কংগ্রেসকে অবহিত করেন নি এমন তিনটি সিভিল মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে তিনি বিদেশি কর্মকর্তাদের আপ্যায়ন করেছেন। কয়েক দশকে বহু নারীর সঙ্গে যৌন অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগকে ‘ফেক নিউজ’ বা ভুয়া খবর, রাজনৈতিক প্রচারণা অথবা ষড়যন্ত্র বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প। এসব নারীর অনেকেই ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তাদের মুখ খোলেন। পক্ষান্তরে তাদের সবার বিরুদ্ধে তিনি মামলা করার পাল্টা হুমকি দেন। তবে এখনো পর্যন্ত তিনি তা করেন নি। উল্টো তাদের কয়েকজন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। কমপক্ষে দু’জন নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করেছেন। তারা বলেছেন, তাদের দাবিকে মিথ্যা বলে তাদের মানহানি করেছেন ট্রাম্প। এর মধ্যে একজন হলেন ইলি ম্যাগাজিনের দীর্ঘদিনের কলামনিস্ট ই জেন ক্যারোল। ১৯৯০-এর দশকে ম্যানহাটানের একটি বিলাসবহুল ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের ড্রেসিং রুমে তাকে ট্রাম্প ধর্ষণ করেছিলেন বলে তার অভিযোগ। তবে এই অভিযোগকেও প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প। মামলায় মিসেস ক্যারোল যুক্তি দেখিয়েছেন, ট্রাম্প বলেছেন তিনি তাকে ধর্ষণ করেন নি। ‘সে আমার যোগ্য নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। এর মাধ্যমে তিনি তার মানহানি করেছেন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তারই ভাতিজি মেরি ট্রাম্প। তিনি মামলার প্রথম লাইনেই বলেছেন, ট্রাম্পের প্রতারণা শুধু পারিবারিক ব্যবসায়ই নয়। একই সঙ্গে তা জীবনজুড়ে আছে। এ নিয়ে নিজের স্মৃতিকথা লিখেছেন মেরি ট্রাম্প। এতে তার পারিবারিক বিরোধের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। এতে ট্রাম্পকে একজন ‘নার্সিসিস্ট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, ডনাল্ড ট্রাম্প প্রতিটি মার্কিনির জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। এই মামলায় উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদে ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার দুই ছেলের প্রতারণার অভিযোগ করেছেন মেরি ট্রাম্প। এক্ষেত্রে মেরি ট্রাম্পকে ব্যবসায় আগ্রহ দেখানো ত্যাগ করতে বলা হয়।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360