যেভাবে বাঁচবেন খুশকি থেকে - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
যেভাবে বাঁচবেন খুশকি থেকে - Shera TV
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন

যেভাবে বাঁচবেন খুশকি থেকে

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

খুশকি বা ড্যানড্রপ সম্পর্কে সবাই কম বেশি পরিচিত। অনেকের চুল পড়ার একটি কারণ খুশকি। খুশকিকে মেডিকেলের ভাষায় বলা হয় স্যাবোরিক ডার্মাটাইটিস। এটি সাধারণত স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বকে হয়ে থাকে। এছাড়া শরীরের অন্যান্য কিছু জায়গায় এটি হতে পারে যেমন নাকের দুইপাশে, মুখে, বুকে, কিংবা পিঠে, আইব্রোতে হতে পারে। এটি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে, তার মধ্যে আছে ফাংগাসের কারণে, পাশাপাশি কিছু হরমোনাল কারণে, এছাড়া ঋতু পরিবর্তন, যেমন ধরুন শীতের ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় এর প্রকোপ বেড়ে যায়। ব্রনের যে কারণ তার সাথে খুশকির মিল আছে। মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণের সাথে ময়লা ও বিভিন্ন ফাংগাস জমে খুশকি হচ্ছে।

যেকোন বয়সেই অর্থাৎ ছোট বড় সবারই হতে পারে। যারা অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করেন মাথায় কিংবা বাইরে বেশি ঘোরাঘুরি করেন কিন্তু গোসল ঠিক মতো করছেন না। আবার ধূলাবালির মধ্যে কাজ করছেন নিয়মিত, প্রচুর ঘামছেন,তাদের এই সমস্যা বেশি হয়।খুশকি প্রতিরোধ করতে চাইলে এই সব সমস্যা এড়িয়ে চলবেন। নিয়মিত বেশি বেশি তেল দেয়া পরিহার করুন। অনেকেই মনে করেন তেল যত দিবেন ততই লাভ। কিন্তু একটা কথা আছে না? বেশি কোন কিছুই না ভাল না। মাথার ত্বকে প্রতিনিয়ত তেল জাতীয় পদার্থ সিবাম বের হচ্ছে।আপনি তার উপর অতিরিক্ত তেল দিলে সেটা ক্ষতিকর হবে। এছাড়া মেয়েরা হিজাব পড়লে মাথায় অনেক ঘাম হয়। সারাদিনের কাজ শেষে তাদের উচিত বাসায় এসে প্রথমেই দ্রুত হিজাব খুলে মাথাটা শুকানো। যদি খুব বেশি ঘামেন ও বাসায় এসে শুকানোর পর মাথা আঠালো হয়ে পড়ে,তাহলে উচিত হচ্ছে গোসল সেড়ে ফেলা। আর অবশ্যই গোসল শেষে মাথার চুল ভাল করে শুকাবেন। অল্প শুকিয়ে চুল বেঁধে ফেললে চুলে খুশকি ও ফাংগাস হয়ে চুল পড়া বেড়ে যাবে। এছাড়া চুলের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানের ঘাটতি যেমন বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেলস এর ঘাটতির কারণেও খুশকির সমস্যা হয়।

মাথায় বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করার ফলে সেগুলোর বাজে রাসায়নিক পদার্থ থেকেও খুশকি হতে পারে। তাই এসব প্রসাধনী ব্যবহারে সতর্ক থাকবেন। অনেকের স্কিন অয়েলি বা তৈলাক্ত। স্কিন বেশি তৈলাক্ত হলেও খুশকি হতে পারে। অয়েলি স্কিনের জন্য বার বার এই খুশকির সমস্যা দেখা দিতে পারে, তাই এটা বেশ বিরক্তিকর।

খুশকির আরেকটা কারণ হচ্ছে ড্রাই স্কিন বা ত্বকের শুষ্কতা, অর্থাৎ যাদের ত্বক রুক্ষ, শুষ্ক, শরীরে প্রায়ই পানিশূন্যতা থাকে, তাদের স্কিনের শেডিংটা বেশি হয়। এর কারণে খুশকির প্রবণতা বেশি হয়। পানিশূন্যতা দূর করতে হবে। সেজন্য নিয়মিত  প্রচুর পানি খাবেন।একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ২-২.৫ লিটার পানি খাওয়া জরুরি।

পানি খেলে ডিহাইড্রেশন দূর হয়, ত্বক সতেজ থাকে, শেডিং কম হয়, ফলে স্কিনের ঝরে পড়া কমে। অর্থাৎ খুশকির সমস্যা কমে যায়।

এছাড়া কিছু চর্মরোগ যেমন একজিমা, সোরিয়াসিসের কারণেও খুশকির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই এসব রোগের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।

খুশকি কী কী ধরনের হয়? কীভাবে বুঝবেন আপনার খুশকি হয়েছে?
সাধারণত মাথায় ত্বকে আস্তরের মতো হয়, সেটা সাদা হতে পারে, কারো কারো ক্ষেত্রে হলুদাভ হতে পারে। এটাকে আমরা বলি স্কেইল। এই স্কেইলের কারণে মাথায় ত্বক চুলকাতে পারে, দেখা যায় যদি নখ লাগানো হয় কিংবা অনেক সময় এমনিতেই আস্তরগুলো পড়তে থাকে। ফলে এই আস্তর পড়ায় অনেক সময় চুলও পড়তে থাকে এইখান থেকে। অনেক সময় সেবোরিক ফলিকোলাইটিস দেখা যায়, যেটা ছোট ছোট দানার মত হয়। এছাড়া আক্রান্ত জায়গার চামড়া অল্প মোটা হতে পারে।

এবার আসি খুশকি হলে কী করবেন?
যেহেতু এখানে একটি ছত্রাক ভূমিকা পালন করে। তাই এটাতে প্রদাহ বা inflammation হয়ে থাকে। এই প্রদাহ ও ফাংগাসকে কিল করার জন্য আমরা মেডিসিন যুক্ত শ্যাম্পু  ব্যবহার করতে বলি।

সাধারণত কিটোকোনাজল কিংবা সেলেনিয়াম সাল্ফাইড সমৃদ্ধ শ্যাম্পু  ব্যবহার করা হয়।সপ্তাহে দুইদিন এই শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। এই শ্যাম্পু মাথায় লাগিয়ে ফেনা তৈরী করবেন তারপর ৫-১০ মিনিট রেখে দিবেন। তাতেই খুশকি ভাল হয়ে যাবে। তবে যাদের একটু খুশকির পরিমাণ বেশি তাদের কিছু ওষুধ সেবনের প্রয়োজন পড়ে। সেক্ষেত্রে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেসব ওষুধ খাওয়া উচিত।

কিছু প্রাকৃতিক উপায়
এছাড়া এলোভেরা জেল যেটাকে বলা হয় প্রাকৃতিক কন্ডিশনার সেটা ব্যবহার করতে পারেন, এলোভেরাতে আছে ছত্রাকবিরোধী ও জীবানুনাশক গুণাবলি যা মাথাকে বিভিন্ন জীবানু থেকে রক্ষা করতে পারে ও খুশকি দূরীকরণের সাহায্য করে। এলোভেরার রস নিয়ে সেটা মাথায় ভালভাবে লাগাবেন। তার ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলবেন।
এলোভেরার সাথে আপনি ক্যাস্টর অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এটা সপ্তাহে ২-৩ দিন ব্যবহার করবেন। আবার এলোভেরা সাথে তেল এর পরিবর্তে লেবুর রস, পিয়াজের রস  দিয়ে মিশ্রণ তৈরী করে ব্যবহার করলে মাথায় ত্বক পুষ্টি পাবে, ফলে চুল পড়া ও খুশকি দূর করতে সাহায্য করবে।

এপল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন। এটি মাথার ত্বকে থাকা ফাংগাস, ব্যাকটেরিয়া এর বিরুদ্ধে কাজ করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
এপল সিডার ভিনেগার নিবেন ১ চা চামচ, সাথে সমপরিমাণ পানি মিশিয়ে মাথায় লাগাবেন। এরপর ৫-১০ মিনিট রেখে দিন।তারপর গোসল করে ধুয়ে ফেলুন।

এছাড়া চেষ্টা করবেন ঘুম যেন ঠিক থাকে।দেরি ঘুমালে, সময় মত না ঘুমালে, হতাশা, টেনশন থাকলে খুশকি হয়।তাই এসব পরিহার  করে চলবেন।

লেখক: এমবিবিএস, বিসিএস স্বাস্থ্য
মেডিকেল অফিসার,
রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, চট্টগ্রাম

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360