অনলাইন ডেস্ক:
নির্বাচনে হেরেও অনেক ঘটনার পর অবশেষে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু করতে সম্মতি দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে তিনি হেরে গেলেও ভোটের পর বা ক্ষমতা ছাড়ার পর তার ব্যতিক্রমী প্রভাব থেকে যাবে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে। এমনও হতে পারে যে, তিনি তৃতীয় দফায় ২০২৪ সালে আবার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে পারেন। যদি তা না হয় তাহলে তিনি বড় ছেলে ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র (৩৭)কে অথবা মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পকে সামনে ঠেলে দিতে পারেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন নিউজউইক। ৩রা নভেম্বর ভোটারের দেয়া রায়ে পরাজিত হন ট্রাম্প। কিন্তু তিনি এই পরাজয় স্বীকারে অব্যাহতভাবে অস্বীকৃতি জানিয়ে যেতে থাকেন। এর জন্য দায়ী করেন মিডিয়াকেও।
তবে এ কথা সত্য যে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অন্য সব ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের চেয়ে তিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন। তার এত বিপুল পপুলার ভোট পাওয়া এটাই বলে দেয় যে, তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হলেও সারাদেশে তার প্রভাব প্রতিপত্তি বিরাজমান থাকবে। ফলে তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন এমন আলোচনা শুরু হয়েছে। যদি তিনি নিজে এই অপশন বেছে না নেন তাহলে তার বড় ছেড়ে ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র অথবা মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থিতা দিতে পারেন। ২০১৬ সালে জার্জিয়া রাজ্যে ট্রাম্পের প্রচারণা বিষয়ক পরিচালক ছিলেন রিপাবলিকান সেঠ ওয়েদারস। তিনি নিউজউইককে বলেছেন, ট্রাম্পিজম বা ট্রাম্পবাদের লণ্ঠনকে জ্বালিয়ে রাখার জন্য আরো অনেকে আছেন। আমার জানামতে, এক্ষেত্রে কিংমেকার হতে পারেন ট্রাম্প নিজে এবং তিনি তা খুব সহজেই করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে তিনি নিজের সন্তানদের বাইরে অন্য কাউকে কিংমেকার হিসেবে সামনে আনবেন- এটা আমি কল্পনাও করতে পারি না। অন্যদিকে ফেসভ্যালু বা মুখের পরিচিতির দিক দিয়ে ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র এবং তার বোন ইভানকা ট্রাম্পও কিন্তু কম যান না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যেসব ঘাঁটি আছে, সেসব স্থানে বেশ জনপ্রিয় ট্রাম্প জুনিয়র। ওইসব ঘাঁটিতে তিনি তার পিতার পক্ষে নিয়মিত প্রচারণা চালিয়েছেন। এরও বাইরে কথা আছে। তা হলো, তিনি যে ২০২৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে চান, তাও কিন্তু জানান দিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এসব মাধ্যমে এ বছর তিনি একটি ছবি পোস্ট করেছেন। তাতে ‘ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ২০২৪’ ব্যানারের অধীনে নিজের ছবি পোস্ট করেছেন। এই ব্যানারের স্লোগানই বলে দেয় তিনি ২০২৪ সালের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।
অন্যদিকে তার পিতা ডনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ বলে যে কয়েকজন আছেন তার মধ্যে অন্যতম ইভানকা ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পুরো সময়ে হোয়াইট হাউজে তিনি তার স্বামী জারেড কুশনারকে সঙ্গে নিয়ে ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। এর ফলে উপদেষ্টা হিসেবে ট্রাম্পের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক শক্তিশালী হয়েছে। তবে বংশ ও তাদের নামের শেষ অংশের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও তারাই শুধু যে রিপাবলিকানের প্রার্থী হবেন ২০২৪ সালে ব্যাপারটা কিন্তু তা নয়। এর বাইরেও অনেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সেন্টার অন ইউএস পলিটিক্সের ফান্ডিং বিষয়ক পরিচালক নিউজউইককে বলেছেন, এক্ষেত্রে ট্রাম্প তার শোম্যানশিপ ব্যবহার করতে পারেন। তার বিকল্প কেউ আসবেন এমনটা ভাবা কঠিন। স্বাভাবিক রাজনৈতিক গেমে অন্যরা শেষ পর্যন্ত যে কাজটি করতে পারবেন, তার চেয়ে বেশি করতে পারবেন ট্রাম্প। তবে ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র বা ইভানকা ট্রাম্পের প্রার্থিতার সম্ভাব্যতা নিয়ে বেশ কিছু আলোচনা আছে। এটা সংশয়ের বিষয় যে, রিপাবলিকান ভোটাররা ট্রাম্পের প্রতি যে সমর্থন দিয়েছেন ব্যক্তি হিসেবে তারা ট্রাম্প বংশানুক্রমিকে বিশ্বাস করবেন কিনা।
সেরা নিউজ/আকিব