ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
কোনো যুক্তি-প্রমাণ ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং সদ্য অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী ডনাল্ড ট্রাম্প কারচুপির অভিযোগ এনে ফলাফল মানতে অস্বীকার করে যাচ্ছেন। কিন্তু ধোপে টিকছে না তার এসব বক্তব্য। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ফল পাল্টাতে ভোট পুনর্গণনায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেখানেও সুবিধা করতে পারছেন না। ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে ট্রাম্পের সহযোগীরাও এখন একে একে নির্বাচন মেনে নেয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু সদস্য অনিবার্য এই বিষয়টি ইতিমধ্যেই স্বীকার করতে শুরু করেছেন। সোমবার ট্রাম্পের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ল্যারি কাডলো ফেডারেল রিজার্ভকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য জ্যানেট ইয়েলেনকে বেছে নেয়ায় জো বাইডেনের প্রশংসা করেছেন। ‘অর্থনীতি সম্পর্কে তার খুব ভালো পর্যবেক্ষণ রয়েছে, কাডলো ওয়াশিংটন পোস্টকে বলছিলেন। তিনি নির্বাচনের পর বাইডেনের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জারেড বার্নস্টিনের কাছে একটি অভিনন্দন বার্তাও প্রেরণ করেছিলেন।
যদিও কাডলোর এই বক্তব্য ট্রাম্প প্রশাসনের কোনো সদস্যের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত বাইডেনের পক্ষে পাওয়া সবচেয়ে স্পষ্ট স্বীকৃতি, কিন্তু আরো কিছু লক্ষণ বলছে- ট্রাম্পের দৌড় শেষ হয়ে গেছে।
হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক এলিসা ফারাহ গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেছেন।
ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে হোয়াইট হাউসে পা রাখা ফারাহ গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রেস সেক্রেটারি হন। গেল এপ্রিলে তিনি হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক পদে যোগদান করেন। একই প্রশাসনের অধীনে এই তিন পদে দায়িত্বপালনকারী তিনিই প্রথম ব্যক্তি। তিনি ছিলেন পেন্টাগনের সর্বকনিষ্ঠ প্রেস সেক্রেটারি। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসনে তিনি কতোটা প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। ট্রাম্পের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তার পদত্যাগ বা বরখাস্তের ভিড়ে, ফারাহ ছিলেন ব্যতিক্রম।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেনের শপথ নেয়াকে সামনে রেখে হোয়াইট হাউসের বর্তমান কর্মীরা যখন তাদের পরবর্তী চাকরির পরিকল্পনা করছেন, এমন এক সময়ে ফারাহ এর পদত্যাগের বিষয়টি সামনে আসে। ট্রাম্প নির্বাচন মেনে নিতে অস্বীকার করলেও, বাইডেনের জয়ের পর ফারাহ জনসমক্ষে যেসব মন্তব্য করেছেন সেগুলোর বেশির ভাগই নির্বাচন মেনে নেয়ার পক্ষে ইতিবাচক। পদত্যাগপত্রেও তিনি লিখেছেন তার এই সিদ্ধান্ত, ‘নতুন সুযোগের সন্ধান করতে’।
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কেইলি ম্যাকানানি ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার উপদেষ্টা হিসেবে “অনানুষ্ঠানিক” ভূমিকা রাখার কথা বলতে গিয়ে রোববার স্বীকার করেছেন যে জো বাইডেন-ই যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন। ফক্স নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে তিনি একথা স্বীকার করেন।
ম্যাকানানি এ বছরের এপ্রিল থেকে হোয়াইট হাউসের (৩১তম) প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এর আগে ২০১৭ সালে তাকে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটির মুখপাত্র নিয়োগ দেয়া হয়েছিল।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সময়টা ভালো যাচ্ছে না ট্রাম্পের। তিনি এখন কি করেন, সেটাই দেখার পালা।
সেরা টিভি/আকিব