ফের যাচাই হবে ৪২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সনদ - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
ফের যাচাই হবে ৪২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সনদ - Shera TV
রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩১ অপরাহ্ন

ফের যাচাই হবে ৪২ হাজার মুক্তিযোদ্ধার সনদ

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০

সেরা ডেস্ক রিপোর্ট:

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) অনুমোদন ছাড়াই যাঁদের নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের সনদ আবার যাচাই-বাছাই করা হবে। আগামী ১৯ ডিসেম্বর সারা দেশে একযোগে এই যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হবে। ২০০২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত অন্তত ৪২ হাজার ব্যক্তির নাম গেজেটভুক্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। তাঁরা বলছেন, এর মাধ্যমে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা নাজেহাল ও হয়রানির শিকার হতে পারেন। আর যাঁরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও গেজেটভুক্ত হয়েছেন, তাঁরা আবার টাকা-পায়সা ব্যয় করে বহাল থেকে যেতে পারেন। ফলে কাজের কাজ কিছুই হবে না।

জামুকা আইন ২০০২ অনুযায়ী ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন’-এর জন্য যাচাই-বাছাই ও সরকারের কাছে সুপারিশ প্রদানের কর্তৃপক্ষ হচ্ছে জামুকা। কিন্তু ২০০২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জামুকার সুপারিশ ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধার গেজেট প্রকাশ করার কারণে সেই গেজেট পুনরায় যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও অনেকেই ওই সময় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছেন।

জামুকার মহাপরিচালক জহুরুল ইসলাম রুহেল জানান, অমুক্তিযোদ্ধাদের শনাক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা প্রণয়নের জন্যই এই যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জামুকার ৭১তম সভায় এ যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। আগামী ১৯ ডিসেম্বর সারা দেশে একযোগে এই যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হবে।

তালিকার বিষয়ে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব সাংবাদিক হারুন হাবীব বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সঠিক তালিকা নিশ্চিত হওয়া উচিত। কিন্তু এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক, মুক্তিযুদ্ধের ৪৯ বছর পরেও এ ধরনের সংকট তৈরি হচ্ছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের আবারও যাচাই-বাছাইয়ের মুখোমুখি হতে হবে। এসব প্রক্রিয়ায় পড়ে বহু মুক্তিযোদ্ধা প্রতারিত হচ্ছেন। একটি দালালচক্রকে তাঁদের টাকা পয়সা দিতে হচ্ছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা ঝামেলায় পড়লে সেটা হবে দুর্ভাগ্যজনক। সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধাদের আর যেন কষ্ট না দেওয়া হয়, সে অনুরোধ জানাব। তা ছাড়া গেজেট করে সরকার, এর সব দায়দায়িত্বও সরকারেরই।’

মুক্তিযুদ্ধের গবেষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের এত বছর পরও এটার একটি সুরাহা হলো না। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, যাচাই-বাছাই বারবার হচ্ছে এটা অত্যন্ত অবমাননাকর। মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা যেভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে সেখানেই প্রশ্ন আছে। এসব কারণেই সমস্যা হচ্ছে।

সিদ্ধান্ত অনুসারে আগামী ১৯ ডিসেম্বর সারা দেশে একযোগে এই যাচাই-বাছাই অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সকাল ১০টায় উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং মহানগর পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।

যাচাইয়ের আওতাভুক্ত তালিকা, নীতিমালা ও এসংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট  (www.molwa.gov.bd) এবং জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ওয়েবসাইট (www.jamuka.gov.bd) প্রকাশ করা হয়েছে।

নীতিমালা অনুসারে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের কমপক্ষে তিনজন ভারতীয় প্রশিক্ষণার্থীর তালিকাভুক্ত কিংবা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ প্রণীত লাল মুক্তিবার্তার তালিকাভুক্ত সহযোদ্ধা/সহপ্রশিক্ষণ গ্রহীতা সাক্ষী ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করতে হবে। কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকলে তিনি কোন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন, তা তিনজন ভারতীয়/লাল মুক্তিবার্তা তালিকাভুক্ত বীর সহমুক্তিযোদ্ধার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে। ভারতীয়/লাল মুক্তিবার্তা তালিকাভুক্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতিতে এ যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

এই যাচাই-বাছাইয়ে যাঁরা উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারবেন তাঁদের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত করার সুপারিশ করবে জামুকা। আর যাঁরা প্রমাণ দিতে পারবেন না, তাঁদের গেজেট-সনদ বাতিলের পাশাপাশি ভাতাও বন্ধ হবে বলে জানা গেছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যাচাইয়ের কাজটি শেষ করতে চায় জামুকা। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কারো ভাতা বন্ধ হবে না।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, স্বাধীনতার এত বছর পর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা চূড়ান্ত না হলেও এই মুহূর্তে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কমবেশি দুই লাখ ৩১ হাজার ৩৮৫। এর মধ্যে ভাতা পাচ্ছেন এক লাখ ৯২ হাজার জন। তাঁদের প্রত্যেককে প্রতিমাসে ১২ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু এমআইএস সফটওয়্যারে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার পর সংখ্যাটি ২১ হাজার কমে গেছে। গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এক লাখ ৭১ হাজার জনকে ভাতা পাঠানো হয়েছে। গেজেট ত্রুটিপূর্ণ দেখিয়ে এই ২১ হাজার জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সেরা টিভি/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360