ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
নির্ধারিত সময়ে বাজেট পাস করতে না পারার জটিলতায় ভেঙে পড়ল ইসরায়েলের সরকার। শিগগিরই আবারও নির্বাচন হতে চলেছে দেশটিতে, যা হবে গত দুই বছরের মধ্যে তাদের চতুর্থ জাতীয় নির্বাচন। খবর সিএনএনের।
সরকার ভেঙে পড়ার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক জোটসঙ্গী ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির নেতা বেনি গান্টজ উভয়ই একে অপরকে দায়ী করেছেন। মাত্র সাত মাস আগেই পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে জোট সরকার গড়েছিলেন তারা।
প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করে নেতানিয়াহু বলেছেন, ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেছে এবং করোনা সংকটের মধ্যেই আমাদের অপ্রয়োজনীয় নির্বাচনে টেনে এনেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন চাইনি এবং এর বিরুদ্ধে ভোটও দিয়েছিলাম… কিন্তু আমরা নির্বাচনে ভীত নই, কারণ আমরাই জিতব।’
অপরদিকে, বেনি গান্টজ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘আমার আফসোস, প্রধানমন্ত্রী জনগণের স্বার্থ নয়, তার বিচার নিয়ে ব্যস্ত। তিনি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার পরিবর্তে গোটা দেশকে অনিশ্চয়তার মধ্যে টানতে প্রস্তুত।’
israel-2.jpg
পরপর তিনটি নির্বাচনে অমীমাংসিত ফলাফলের পর মাত্র সাত মাস আগে সমঝোতার ভিত্তিতে জোট সরকার গড়েছিল নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি ও গান্টজের ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টি। করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ঢেউয়ের মুখে নির্বাচন এড়াতে গত এপ্রিলে নেতানিয়াহুর সঙ্গে জোট বাঁধতে রাজি হন বেনি গান্টজ। তখন এটিকে জরুরি জোট সরকার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
নির্দিষ্ট সময় পর প্রধানমন্ত্রিত্ব হাতবদলের শর্তে জোট গড়েছিলেন এ দুই নেতা। সেই মতে, প্রথম ১৮ মাস নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রিত্ব করার পর সরকারের নেতৃত্ব গান্টজের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল।
এই চুক্তিতে একটি বড় খাদ হয়ে উঠেছিল বাজেট জটিলতা। নতুন অর্থবছরের বাজেট পাসের ডেডলাইন ছিল গত ২২ ডিসেম্বর। কিন্তু মঙ্গলবার সেই সময়সীমা বৃদ্ধিতে সম্মত হতে পারেনি ক্ষমতাসীন জোটের দুই পক্ষ। ফলে মধ্যরাত পার হতেই নিশ্চিত হয়ে যায় ইসরায়েলের বর্তমান সরকারের পতন।
বিরোধী নেতা ইয়াইর ল্যাপিদ নেসেটে (ইসরায়েলি সংসদ) নেতানিয়াহুকে আক্রমণ করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি কার সঙ্গে মজা করেন? সংক্রমণের বিষয়ে আপনার খেয়াল নেই। আপনি শুধু প্রধানমন্ত্রিত্বের ঘুরপাঁক নিয়ে ব্যস্ত।’
ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, ইসরায়েলে এপর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৮৭ জন। মারা গেছেন অন্তত ৩ হাজার ১৩৬ জন।
ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছরের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে পারে ইসরায়েলের পরবর্তী নির্বাচন। জনমত জরিপ বলছে, পরের নির্বাচনেও জিততে পারে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি।
সেরা টিভি/আকিব