সোহরাবের জন্মই যেন আজন্ম পাপ - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
সোহরাবের জন্মই যেন আজন্ম পাপ - Shera TV
রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:৩৯ অপরাহ্ন

সোহরাবের জন্মই যেন আজন্ম পাপ

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০

ওবায়দুল কবির সম্রাট,  কয়রা:
ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বিনা আশ্রয়ে আর শীতে অতি মানবেতর জীবনযাপন করছে খুলনার কয়রায় সোহরাব নামে চল্লিশ ছুঁই ছুঁই এক অসুস্থ মানসিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধী যুবক। যার দিন কাটে মানুষের কাছে হাত পেতে দুবেলা দুমুঠো খাবার খেয়ে। নাই কোন মাথা গোঁজারও ঠাঁই। দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন যেন তার কাছে নিতান্তই মরীচিকা। সারাদিনের আহাজারি আর মানুষের করুণার পরে রাতে বিশ্রামের আশ্রয়টুকুও যেন তার নেই। রোদ, বৃষ্টি, ঝড় আর কনকনে শীতে সোহরাবের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়রার উপজেলা সদরে মদিনবাদ গ্রামের বৃদ্ধ বিধবা রহিমা খাতুনের ছেলে সোহরাব।

আম্পানে ভেসে গেছে তার চাল-চুলা। করোনার অবরুদ্ধ সময়ে না খেয়ে, ছেঁড়া কাপড়ে কঠিন রোগাক্রান্ত জীর্ণ-শীর্ণ দেহে কোন রকমে বেঁচে রয়েছে সোহরাব৷ দেহ কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত, দিন দিন মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। যার ফলে হয়ে ওঠেনি বিয়ে করা। এদিকে অভাবের তাড়নায় বৃদ্ধ বিধবা মায়ের সংসারে সোহরাবসহ তার অন্য ভারসাম্যহীন ভাই যেন একান্তই কলুর বলদ হয়ে আছে। শারীরিকভাবে অক্ষম বাক প্রতিবন্ধী সোহরাবের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি হচ্ছে তার বৃদ্ধা মা রহিমা খাতুন। বৃদ্ধা মাতা কখনো লোকের বাড়িতে, কখনো মাঠে গিয়ে দিন মজুরের কাজ করে যা উপার্জন করে তা দিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চলে তাদের। উপার্জিত সামান্য এই অর্থের মধ্য হতে সন্তানদের চিকিৎসা ও সংসার চালানো তার বৃদ্ধার পক্ষে সম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে।

প্রতিবন্ধী সন্তান নিয়ে বৃদ্ধা মা চরম দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছে। মানসিক ভারসাম্যহীন সোহরাব সারাদিন মানুষের দ্বারে ভিক্ষা করে যা পায়, তা দিয়ে না চলে তার পেট। এ যেন জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার বালুর বাঁধ বাঁধা মতো প্রচেষ্টা। তবুও একটুখানি জমিতে ঘর করে দিনের ক্লান্তিতে রাতে একটু শান্তি কে না চায়? কিন্তু তা সোহরাবের কাছে ডুমুরের ফুলের মতো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের জন্য সারাদেশে গৃহ নির্মাণ কর্মসূচী গ্রহণ করলেও সোহরাবের মতো অসুস্থ মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক থেকে গেছে সকলের অগোচরে। কেউ নেয়নি আমাদের সমাজে অবহেলিত, উপেক্ষিত আর সকলের করুণার পাত্র সোহরাবের মতো নিংস্ব মানুষের খোঁজ।আর কত গরিব, আর কত অসহায় হলে সরকারি ঘরের বরাদ্দ পাওয়া যায়- তা জানা নেই অসহায় সোহরাবের পরিবারের।

সোহরবারে পরিববার ও প্রতিবেশীরা জানান, এই মুহূর্তে সরকারী কিংবা বে-সরকারী পর্যায়ে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে অসহায় এই পরিবারটি হয়তো কিছুটা হলেও আলোর মুখ দেখতে পাবে। মানসিক ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধীর বৃদ্ধা মা রহিমা খাতুন জানান, একটি স্বাভাবিক সন্তান মানুষ করতে খুব কষ্ট করতে হয়। কিন্তু পরপর দুইটি মানসিক প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে যে মানসিক ও শারীরিক যন্ত্রণায় ভুগেছি,অভাবে অনাটনে তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। সাথে সংসারের ভারও তো আছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না, আমার কাছে আসলে অসহায় সোহরাবসহ সকল অসহায় ভারসাম্যহীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

সেরা টিভি/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360