করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে শীর্ষ ২০-এ বাংলাদেশ - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে শীর্ষ ২০-এ বাংলাদেশ - Shera TV
রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০২ অপরাহ্ন

করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে শীর্ষ ২০-এ বাংলাদেশ

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে আর্থ-সামাজিক উন্নতিসহ বসবাস উপযোগী নিরাপদ শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গের এক সূচকে এ তথ্য উঠে এসেছে। এ তালিকায় শীর্ষ রয়েছে নিউজিল্যান্ড। এরপর পর্যায়ক্রমে তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, সিঙ্গাপুর, ফিনল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, ডেনমার্ক, কানাডা, ভিয়েতনাম, হংকং, থাইল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইসরায়েল, রাশিয়া ও নেদারল্যান্ডসের পর বাংলাদেশ এই তালিকায় স্থান পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালির মতো শীর্ষ অর্থনীতির দেশগুলোও সদ্য প্রকাশিত এ তালিকায় বাংলাদেশের পেছনে অবস্থান করছে। এমনকি প্রতিবেশী ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব দেশের ওপরে রয়েছে বাংলাদেশ।

‘কভিড সহনশীলতা র‌্যাঙ্কিং’ শীর্ষক তালিকা অনুসারে জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ সব দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের পর পর্যায়ক্রমে রয়েছে মিসর, চীন ও ভিয়েতনাম। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জার্মানি, ফ্রান্সসহ অন্য দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার মাইনাস (ঋণাত্মক)। ব্লুমবার্গ বলছে, আক্রান্ত এবং মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণেও বাংলাদেশ সফল।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে জিডিপি ধরে রাখার ঘটনাকে বাংলাদেশের সরকারের সাফল্য বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের অভিমত, করোনা পরিস্থিতির শুরুতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যায়। কর্মসংস্থান বন্ধ থাকায় অনেকে আর্থিক সংকটে পড়েছিল। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ ছুটি বাতিল করেন। তার ওই সাহসী সিদ্ধান্তের কারণে পুনরায় অফিস-আদালত চালু হয়। মানুষ কাজে ফেরে। একই সঙ্গে বিভিন্ন খাতে প্রণোদনাসহ স্বল্প সুদে ঋণদানের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা হয়। এজন্যই জিডিপি প্রবৃদ্ধির সূচকে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।

শীর্ষ ২০-এ বাংলাদেশ: বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে ৫৩টি দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ১০টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে র‌্যাঙ্কিং প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গ। প্রতি লাখে আক্রান্ত, এক মাসে মৃত্যু, সামগ্রিক মৃত্যুহার, পজিটিভ পরীক্ষার হার, কভিড ভ্যাকসিন প্রাপ্তির সক্ষমতা, লকডাউন পরিস্থিতি, করোনাকালে জনগণের চলাচল, জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং মানব উন্নয়ন সূচক- এই র‌্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেওয়া হয়।

এতে ৮৫ দশমিক ৬ স্কোর করে শীর্ষস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। এরপর পর্যায়ক্রমে তাইওয়ান ৮২ দশমিক ৪, অস্ট্রেলিয়া ৮১, নরওয়ে ৭৭, সিঙ্গাপুর ৭৬ দশমিক ২, ফিনল্যান্ড ৭৫ দশমিক ৮, জাপান ৭৪ দশমিক ৫, দক্ষিণ কোরিয়া ৭৩ দশমিক ৩, চীন ৭২, ডেনমার্ক ৭০ দশমিক ৮, কানাডা ৭০, ভিয়েতনাম ৬৯ দশমিক ৭, হংকং ৬৮ দশমিক ৫, থাইল্যান্ড ৬৮ দশমিক ৫, আয়ারল্যান্ড ৬৭ দশমিক ৩, সংযুক্ত আরব আমিরাত ৬৫ দশমিক ৬, ইসরায়েল ৬২ দশমিক ৪, রাশিয়া ৬১ দশমিক ৭, নেদারল্যান্ডস ৬১ দশমিক ৩ এবং বাংলাদেশের স্কোর ৫৯ দশমিক ২। একই স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের পরই রয়েছে জার্মানি।

বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ৫১ দশমিক ২ স্কোর নিয়ে ৩৭তম স্থানে অবস্থান করছে। ৩০তম স্থানে থাকা যুক্তরাজ্যের স্কোর ৫৪ দশমিক ৬, ৫২ দশমিক ৪ স্কোর নিয়ে ফ্রান্স ৩৪ নম্বরে অবস্থান করছে। ৪৫ দশমিক ৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে রয়েছে ইতালি। ৫০ দশমিক ৬ স্কোর নিয়ে প্রতিবেশী ভারত রয়েছে ৩৯তম স্থানে।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচকে অগ্রগামী: শীর্ষে থাকা নিউজিল্যান্ডে এক মাসে প্রতি লাখে ২ জন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এক মাসে নিউজিল্যান্ডে করোনায় একজনও মারা যাননি। ১০ লাখে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। দেশটিতে কভিড প্রতিরোধী টিকা প্রাপ্তির সম্ভাবনা ২৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ। লকডাউন পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশটির স্কোর ২২। জনগণের চলাচলে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ, জিডিপি প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস মাইনাস ৬ দশমিক ১ শতাংশ, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ৮৩ এবং মানব উন্নয়ন সূচকে স্কোর শূন্য দশমিক ৯৩ পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা তাইওয়ানের স্কোর ৮২ দশমিক ৪। এক মাসে দেশটিতে করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি এবং প্রতি ১০ লাখে মৃত্যু শূন্য। করোনা পজিটিভ হার শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। দেশটিতে কভিড টিকা প্রাপ্তির সম্ভাব্যতা ২৬ দশমিক ২ শতাংশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধি শূন্য শতাংশ, সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ৭৯ এবং মানব উন্নয়ন সূচক শূন্য দশমিক ৯১ রয়েছে দেশটির।

তৃতীয় স্থানে থাকা অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৮১। দেশটিতে এক মাসে প্রতি লাখে একজন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এক মাসে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ এবং প্রতি ১০ লাখে মৃত্যু ৩৬ জন। নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ হার শূন্য শতাংশ। কভিড টিকা প্রাপ্তির সম্ভাব্যতা ২২৯ দশমিক ৯ শতাংশ। শীর্ষ ২০-এ থাকা বাংলাদেশে এক মাসে প্রতি লাখে ৩৪ জন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এক মাসে প্রাণহানি ১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং প্রতি ১০ লাখে মৃত্যু ৪৪ জন। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১০ দশমিক ২ শতাংশ। বাংলাদেশে কভিড টিকা প্রাপ্তির সম্ভাব্যতা ৫ শতাংশ। কঠোর লকডাউনে স্কোর ৮০। জনগণের চলাচলে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। জিপিডি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩ দশমিক ৮ শতাংশ। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্কোর ৫৪। মানব উন্নয়ন সূচকে স্কোর শূন্য দশমিক ৭৮।

বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এক মাসে প্রতি লাখে এক হাজার ৭৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এক মাসে প্রাণহানি ১ দশমিক ১ শতাংশ এবং প্রতি ১০ লাখে মৃত্যু ৯৫৫ জন। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। কভিড টিকা প্রাপ্তির সম্ভাব্যতা ১৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ। কঠোর লকডাউনে স্কোর ৭২। জনগণের চলাচলে মাইনাস ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। ডিজিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস মাইনাস ৪ দশমিক ৩ শতাংশ। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্কোর ৮২। মানব উন্নয়ন সূচক শূন্য দশমিক ৯৩।

৩৯তম স্থানে থাকা প্রতিবেশী ভারতে এক মাসে প্রতি লাখে ৬৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এক মাসে প্রাণহানির হার ১ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতি ১০ লাখে মৃত্যু ১০৫ জন। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২ দশমিক ৬ শতাংশ। কভিড টিকা প্রাপ্তির সম্ভব্যতা ৮৫ দশমিক ৪ শতাংশ। লকডাউনে স্কোর ৬৯। জনগণের চলাচল মাইনাস ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস মাইনাস ১০ দশমিক ৩ শতাংশ। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্কোর ৪৭। মানব উন্নয়ন সূচকে স্কোর শূন্য দশমিক ৬৫।

জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে শীর্ষে: জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে বাংলাদেশ সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। এই হার ৩ দশমিক ৮ শতাংশ (তবে প্রকৃত হার বেশি হবে বলে আশা করা হচ্ছে)। এরপর মিসরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, চীনে ১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ভিয়েতনামে ১ দশমিক ৬ শতাংশ। অন্য দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার মাইনাসে রয়েছে।

আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের: করোনা নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের এই ধারা অব্যাহত রাখার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাটির প্রতিবেদন অনুযায়ী অনেক সূচকে বাংলাদেশ প্রভাবশালী দেশগুলোর তুলনায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে আক্রান্ত ও মৃত্যুহারের পাশাপাশি জিডিপি প্রবৃদ্ধির দিক থেকে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এ জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। একইভাবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে ধরে নিয়ে সর্বাত্মক প্রস্তুত হতে হবে।

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সাধারণ ছুটি প্রত্যাহার না করলে পরিস্থিতি হয়তো অন্য রকম হতে পারত। কারণ টানা তিন মাস ছুটির কারণে দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষ জীবন-জীবিকার সংকটে পড়েছিল। ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সার্বিক অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ছুটি বাতিল করে সবকিছু খুলে দেন। এরপর ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি ফেরাতে প্রণোদনা ও খাতভিত্তিক ঋণ সুবিধা প্রদান করেন। এতে গতি ফেরে অর্থনীতিতে। কিন্তু বড় দেশগুলো তা না করায় তাদের অর্থনীতি নাজুক অবস্থায় পড়েছে। সুতরাং এ সাফল্য সরকারের। এ সাফল্য ধরে রেখে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন প্রমাণ করে, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগ শুরু থেকে সঠিক পথেই ছিল। সেটি না হলে পরিস্থিতি অন্য রকম থাকত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করার পাশাপাশি প্রাণঘাতী বৈশ্বিক করোনাভাইরাস মোকাবিলা করছে। একই সঙ্গে অর্থনীতির গতি স্বাভাবিক রাখছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ভালো না হলে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতো। সাধারণ ছুটি প্রত্যাহার করলে সবকিছু স্বাভাবিক করা সম্ভব হতো না।

তিনি বলেন, সব মানুষ যখন ঘরবন্দি ছিলেন, তখন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা হাসপাতালে থেকে করোনা রোগীদের চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছেন। আক্রান্তদের সুস্থ করে তারা মৃত্যুহার কমিয়ে এনেছেন। সুতরাং করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার মূল কৃতিত্ব তাদের প্রাপ্য। আশা করি, তারা হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা প্রতিরোধী টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা চলে আসবে। এরপর টিকার জোট গ্যাভি থেকে আরও টিকা আসবে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটির মতো টিকা হাতে পাওয়া যাবে। এসব সত্ত্বেও বেসরকারি খাতে টিকা আমদানির বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

সেরা টিভি/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360