ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
যদি বিরোধী দল একান্তই তার সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব আনে অথবা করোনা মোকাবিলায় অসন্তুষ্ট হয়ে থাকে, তাতে নির্বাচনে যেতে রাজি আছেন বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এবং তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতও রয়েছেন।
জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিবিসি’র প্রধান রাজনৈতিক ভাষ্যকার রোজমেরি বার্টনের সঙ্গে বছর শেষের এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি বিরোধী দল মনে করে আমরা যথাযথভাবে সরকার পরিচালনায় ব্যর্থ, তবে শাসনভার হবে দুরূহ, তাতে তারা নির্বাচন উস্কে দিক বা না দিক।’
এতে নির্বাচন আয়োজন বিষয়ে তিনি গভর্নর জেনারেল জুলি পায়েটের শরণাপন্ন হবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রুডো বলেন, সে সম্ভাবনাটি দেখা দিলেও তিনি বোঝেন করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচন আহ্বান তার সরকারের প্রাধান্যপূর্ণ লক্ষ্য নয়, বরং দেশের জনগণ করোনা সংক্রমণের মুখোমুখিতে রয়েছে, সেটাই মুখ্য।
আরো পড়ুন: নোভাভ্যাক্সের টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু
ট্রুডো বলেন, ‘আমার সরকারের যা করণীয়, সেটাই আমি নিশ্চিত করে যাচ্ছি; তাই আমি কোনো ভাবনাকে পরিহার করছি না। তবে একই সময়ে আমি কোনো নির্বাচনের জন্য উন্মুখ নই।’
কিন্তু এই প্রশ্নটি যখন ট্রুডোকে করা হয়েছে যে, কানাডার জনগণের মাঝে টিকাদান শেষ হলে, অর্থাৎ হেলথ কানাডার ভাষ্য মতে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝে সকলে তা পেলে, তখন কি নির্বাচনে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন? উত্তরে তিনি নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।তথাপি গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, নির্বাচন নিয়ে ‘রাজনৈতিক বিবেচনা এখন তার সরকারের মুখ্য লক্ষ্য নয়। বরং কানাডার জনগণকে সর্বতো সহযোগিতা জোগানোর পাশাপাশি টিকাদান সম্পন্ন করাই সর্বাধিক অগ্রগণ্য।’
একই সময়ে নির্বাচনে আগ্রহী না থাকলেও ট্রুডো বলেন, তার সরকার করোনা পরিস্থিতিতে দেশের সবুজ অর্থনৈতিক উন্নয়নে উচ্চ ‘কার্বন টেক্স’ আরোপে একাগ্র। এ বিষয়ে সিবিসি’র রোজমেরিকে বলেন, ‘আমরা জানি রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত পোষণ করবে না, বরং (জলবায়ু) বিষয়ে আরও বেশি অনৈক্য প্রদর্শন করবে।’ দ্য বেঙ্গলী টাইমস জানিয়েছে যে, গত ১৪ মাস ধরে বর্তমান লিবারেল সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন রয়েছে। আর করোনা মহামারিতে তাদের পরিকল্পিত অনেক উদ্যোগই ভেস্তে গেছে, তাতে রাজধানী অটোয়ার রাজনৈতিক গতিধারায় নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে।
এসব সত্ত্বেও করোনা মহামারি মোকাবিলায় ব্লক ক্যুইবেকুয়া, এনডিপি ও গ্রিন পার্টির সহযোগিতায় প্রধান বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টি সরকারের তুমুল সমালোচনা করলেও তারা বৃহত্তর অর্থে সরকারের গৃহীত কোভিড-১৯ বিষয়ক ত্রাণ কর্মসূচিতে সমর্থন জুগিয়ে চলেছে। তারা তুলনামূলক কম সময়েই জাতীয় সংসদে সরকারের বিপুল ব্যয় সংক্রান্ত বিল পাশ করেছে, যার অধিকাংশ অর্থই সাধারণ নাগরিক, ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও লক ডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত খাতে ব্যয়িত হচ্ছে।
আরো পড়ুন: নোভাভ্যাক্সের টিকার তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু
এতে গত আগস্ট মাসে কনজারভেটিভ পার্টির দায়িত্বে অধীষ্ট এরিন ও’তুল আগেই বলেছেন তিনি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছেন, আদৌ তাতে সরকারের পতন কিংবা পতনের আহ্বান কেউ করুক বা না করুক; তবে সেটাও তার মুখ্য লক্ষ্য নয়। তার ভাষায়, ‘নির্বাচনে যাওয়ার আগে অর্থনৈতিক ও করোনা সংকটের উত্তরণ হওয়াটা বাঞ্ছনীয়,’ সে কথা তিনি এ মাসের শুরুতে সিটিভি-কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন।
এদিকে সরকার গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদের শীতকালীন ছুটিতে যাওয়ার আগে একটি নতুন বিল, তুলে ধরেছে, যেখানে ‘ইলেকশন কানাডা’-কে সাময়িক করোনা পরিস্থিতিতে উদ্ভূত নির্বাচন সংক্রান্ত পদ্ধতিতে সামঞ্জস্যতা বিধানের সুযোগ দেয়া হয়েছে। যদি ওই বিলটি সংসদে পাশ হয়, তবে তা কানাডার জনগণকে তিনদিন ব্যাপী নির্বাচনে ভোট প্রদানের সুযোগ করে দেবে, যেখানে ডাকে ভোট প্রেরণসহ দীর্ঘ মেয়াদী সেবাশ্রমে বিশেষ ভোট কেন্দ্র স্থাপনের বিধান থাকবে অন্যতম।
সেরা টিভি/আকিব