শুনতে অবাক লাগলেও বিরল ঘটনার সাক্ষী হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার ভেটো দেওয়া প্রতিরক্ষা বিল উল্টে দিয়েছে রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১ জানুয়ারি) বিলটির পক্ষে এবং বিপক্ষে তুমুল বিতর্কের পর তা ৮১-১৩ ভোট পাস করাতে সক্ষম হয় সিনেট। বিদায়ের আগে নিজ দলের সিনেটরদের কাছে বড় ধরনের ধাক্কা খেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে ট্রাম্পের ভেটো উপেক্ষা করে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদও।
৭৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের বিলটি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হয় কংগ্রেসে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।
ট্রাম্প বলেছেন, এই বিলটি আসলে রাশিয়া ও চীনের জন্য একটি উপহার। এটি আইনে পরিণত হলে তা শুধু অন্যায়ই হবে না, বরং এটি হবে অসাংবিধানিক। যদিও সংবিধানের আলোকে নিজের এমন দাবির কোনও ব্যাখ্যা দেননি তিনি।
বিলটিতে আফগানিস্তান এবং ইউরোপ থেকে সেনা সরানোর ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা ট্রাম্পের পছন্দ নয়। মূলত বিভিন্ন জায়গায় থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণাও দিয়ে ফেলেছেন তিনি। এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিষয়ে ট্রাম্প আপত্তির কথা জানান। কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে একমত নন রিপাবলিকান সাংসদরাও। বরং অধিকাংশই মনে করছেন, সময়ের নিরিখে বিলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিলে সামরিক কর্মীদের তিন শতাংশ বেতনবৃদ্ধির কথাও বলা হয়েছে। নানা অজুহাতে বিলটি স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানান প্রেসিডেন্ট। এরপরই বিলটি পাস করাতে উঠেপড়ে লাগে নিম্নকক্ষ এবং উচ্চকক্ষ।
আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউস ছাড়তে হবে ট্রাম্পকে। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন জো বাইডেন। তার আগে একাধিক বিতর্কিত পদক্ষেপ নিচ্ছেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ শিবিরের বক্তব্য, সামরিক বিলে ভেটো না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্টের পরামর্শদাতারা। কারণ, বিলটি কংগ্রেসে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হয়েছিল।
নিয়ম হলো, কংগ্রেসে বিল পাস হওয়ার পরে তা প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। প্রেসিডেন্ট কোনও কারণে অনুমোদন না দিলে তা ফিরে আসে কংগ্রেসে। এরপর পার্লামেন্টের দুই কক্ষে বিলটি দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেলে প্রেসিডেন্টের অনুমোদন ছাড়াই তা আইন হয়ে যায়। এই বিলটির ক্ষেত্রে তেমনটাই ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প এর আগে কংগ্রেসে পাস হওয়া আটটি বিলে ভেটো দিয়েছিলেন। সিনেটে তার মিত্রদের কারণে সেসব ভেটো টিকেও গিয়েছিল।
সেরা টিভি/আকিব