ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো সত্ত্বেও জার্মানির করোনা সংকটের দ্রুত অবসানের সম্ভাবনা দেখছেন না চ্যান্সেলর ম্যার্কেল। তবে টিকা কর্মসূচিতে গতি আসবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
সোমবার থেকে জার্মানিতে লকডাউনের নিয়মআরও কড়া করা হচ্ছে। আপাতত ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত কড়াকড়ি চালু থাকবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়ানো হতে পারে। এরই মধ্যে জার্মানিতে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা রোববার ৪০ হাজার পেরিয়ে গেল। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ লাখেরও বেশি।
চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেন, আগামী সপ্তাহগুলিতে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। দৈনিক সংক্রমণের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমা পর্যন্ত সংকট দূর হবার কোনো সম্ভাবনা দেখতে পারছেন না তিনি। কড়া সাবধানবাণী সত্ত্বেও বড়দিন ও নববর্ষ উৎসবের সময়ে অনেক মানুষ নিয়ম ভেঙে মেলামেশা করেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ম্যার্কেল বলেন, পরিসংখ্যানে এখনো সেই সময়ের প্রকৃত চিত্র ফুটে ওঠেনি। ফলে আগামী কয়েক সপ্তাহ জার্মানির করনো সংকটের সবচেয়ে কঠিন পর্যায় হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর প্রচণ্ড চাপের আশঙ্কা করছেন জার্মান চ্যান্সেলর। উল্লেখ্য, গোটা দেশের হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের প্রায় ৮০ শতাংশ এরই মধ্যে ভরে গেছে। সেখানে গুরুতরভাবে আক্রান্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজার পেরিয়ে গেছে।
ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো জার্মানিতেও করোনার টিকা দেবার ক্ষেত্রে নানারকম জটিলতা দেখা যাচ্ছে। তবে ফাইজার-বায়োনটেকের পর মডার্না কোম্পানির টিকাও ছাড়পত্র পাবার ফলে টিকাদান কর্মসূচিতে গতি আসবে বলে কর্তৃপক্ষ আশা করছে। চলতি সপ্তাহেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশগুলির হাতে নতুন টিকা আসতে শুরু করবে।
চ্যান্সেলর ম্যার্কেলবলেন, টিকা দেবার প্রক্রিয়া ধীর গতিতে শুরু হলেও ধীরে ধীরে আরও বেশি মানুষ টিকা নেবার সুযোগ পাবেন। তিনি দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে ধৈর্য্যের আবেদন করেন। তাঁর মতে, পরিস্থিতি সামাল দিনে বর্তমান কড়াকড়ি অত্যন্ত জরুরি। তবে ইউরোপীয় সংহতির সিদ্ধান্ত নিয়েও জার্মানি বেশি টিকাকেনায় ম্যার্কেলের সরকার অনেক মহলে সমালোচনার মুখে পড়েছে।
মানুষের মধ্যে সামাজিক ব্যবধানের কড়াকড়ি সত্ত্বেও জার্মানির অনেক মানুষ প্রায়ই নিয়ম ভাঙছেন। যেমন সপ্তাহান্তে দেশের অনেক প্রান্তে বরফ পড়ার ফলে অনেকে সে সব জায়গায় ভিড় করেছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরে মেঘলা আকাশের পর সূর্যের আলো দেখা যাওয়ায় অনেক মানুষ বেড়াতে বেরিয়ে পড়েছিলেন। দক্ষিণের বাভেরিয়া রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় মানুষ নিয়ম ভেঙে ভিড় করেছেন। এমনকি যে সব জায়গায় সংক্রমণের উঁচু হারের কারণে মানুষের ১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরে যাবার নিয়ম নেই, সেখানেও নিয়ম ভাঙার ঘটনা চোখে পড়েছে।
সেরা টিভি/আকিব