অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসন প্রস্তাব আইনসভার নিম্নকক্ষ কংগ্রেসে (প্রতিনিধি পরিষদ) উত্থাপন করা হয়েছে। চার পৃষ্ঠার প্রস্তাবে ডেমোক্র্যাট দলীয় ২১৮ জন আইনপ্রণেতা স্বাক্ষর করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার সকালে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়। মঙ্গলবার প্রস্তাবটির ওপর ভোটাভুটি হবে। ভোটে জিতলে এটি সিনেটে পাঠানো হবে। অভিশংসন প্রস্তাবে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৬ জানুয়ারি উন্মত্ত জনতাকে ‘বিশৃঙ্খলায় উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্পের উগ্র সমর্থকদের সহিংসতা চালানোয় তাকে অভিশংসনের জোরালো দাবি ওঠে। ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের মেয়াদের শেষ দিন।
এজন্য অভিশংসন প্রস্তাব তড়িঘড়ি করে উত্থাপন করা হয়। এরপর প্রস্তাবটি সিনেটে যাবে। সেখানে ট্রাম্পকে অপসারণ করতে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের দরকার হবে। এর আগে আইনপ্রণেতারা মেয়াদ শেষের আগেই ট্রাম্পকে সরাতে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সম্মত না হওয়ায় ট্রাম্পকে অভিশংসন করার পথ বেছে নেন ডেমোক্র্যাটরা।
অভিশংসন প্রস্তাবে ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্পের ভুয়া বিজয় দাবি এবং ৬ জানুয়ারি সহিংসতার আগে সমর্থকদের উদ্দেশে তার দেওয়া বক্তব্যের কথা উল্লেখ করা হয়।
এতে জর্জিয়ার রিপাবলিকান সেক্রেটারি অব স্টেটকে ট্রাম্পের ফোনের কথাও উল্লেখ করা হয়। এতে ট্রাম্প তার জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভোট ‘খুঁজে বের করতে’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রস্তাবে বলা হয়- এসব কিছুর মাধ্যমে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিপন্ন অবস্থার মধ্যে ফেলেছেন।
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অখণ্ডতাকে তিনি হুমকি দিয়েছেন এবং শান্তিপূর্ণ ক্ষমতার হস্তান্তরে হস্তক্ষেপ করেছেন। এছাড়া প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। ৬ জানুয়ারি সহিংস ঘটনায় কেবল ডেমোক্র্যাট নয়, রিপাবলিকানদের অনেকেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমর্থকদের উসকে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
এর আগে আইনপ্রণেতাদের লিখিতভাবে স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি জানান, সোমবার প্রতিনিধি পরিষদ (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ) প্রস্তাবটি তোলা হবে। আর এ প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হবে মঙ্গলবার। সেটি পাস হলে ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করতে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানানো হবে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ২৪ ঘণ্টা সময় পাবেন তিনি।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরেও ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ট্রাম্পকে ইমপিচ করা হয়। তবে তাকে দায়মুক্তি দেয় রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেট।
সে সময় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের ওপর চাপ সৃষ্টি করার অভিযোগ ছিল ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এ অভিশংসনের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট, যিনি দুবার অভিশংসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গেলেন।
সেরা টিভি/আকিব