ঢাকায়ও ওয়েস্ট ইন্ডিজই জিতলো, টেস্টে হোয়াইটওয়াশড বাংলাদেশ। টেস্ট সিরিজ বাঁচাতে পারল না বাংলাদেশ। সিরিজ হেরে গেল পরিষ্কার ২-০ ব্যবধানে। চট্টগ্রামের পর ঢাকা টেস্টেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দাপট দেখালো। ঢাকা টেস্টে জিততে শেষ ইনিংসে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ২৩১ রানের। কিন্তু বাংলাদেশ অলআউট ২১৩। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ জিতলো ১৭ রানে।
মিরপুরে চতুর্থদিনের শেষ বিকেলে ম্যাচটা দারুণ জমিয়ে দিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। সবাই যখন বাংলাদেশের হারের অপেক্ষায় ছিল তখন ব্যাট হাতে জ¦লে উঠেন এই অলরাউন্ডার। ধীরে ধীরে ম্যাচে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনেন। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে যান। কিন্তু ম্যাচ বাঁচাতে পারলেন না তিনিও। জেরেমি ওয়ারিক্যানের স্পিনে স্লিপে রাকিম কর্নওয়াল ক্যাচটা নিতেই বাংলাদেশের জন্য ম্যাচ শেষ। ২-০ তে টেস্ট সিরিজের ট্রফি জিতে নিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
স্পিনার রাকিম কর্নওয়াল যেন একাই ধসিয়ে দিলেন ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের ইনিংস। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট শিকার করেন এই অফস্পিনার। সিরিজে সবচেয়ে বেশি ১৪ উইকেটের মালিক তিনিই।
চতুর্থদিনের দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হয় ১১৭ রানে। প্রথম ইনিংসে ১১৩ রানের লিড যোগ করে ম্যাচে বাংলাদেশের সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টার্গেট দেয় ২৩১ রানের।
মিরপুরের স্পিন সহায়ক উইকেটে চতুর্থদিনের দ্বিতীয় সেশনে এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা মন্দ হয়নি। তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ওপেনিং জুটিতে যোগ হয় ৫৯ রান। কিন্তু সৌমের আউটের পরপরই যেন উইকেট পতনের নামতা শুরু হলো। তামিম ইকবাল কঠিন এই উইকেটে আক্রমনাত্মক ব্যাটিং বেছে নিলেন। উপায়ও নেই। এই উইকেটে শুধু রক্ষণাত্মক খেললে রেহাই পাওয়ার উপায় নেই। তাই তামিম অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স-এই নীতিতে ব্যাট করলেন। ৪৬ বলে ৫০ রান করে তামিম ফিরে আসার পর দলের বাকিরা যে কেউ আর দাড়াতেই পারলেন না। শেষের দিকে মেহেদি মিরাজের ব্যাটে টিকেছিল বাংলাদেশের চেষ্টা। নাটকীয়ভাবে মেহেদি মিরাজ ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। কিন্তু ফিনিসিং টানলেন যে সেই রাকিম কর্নওয়াল। স্লিপে তার হাতে মিরাজের ক্যাচটাই সিরিজের সমাধান জানিয়ে দিল।
নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরলেন ১১ রানে। ভয়াবহভাবে শেষ হলো তার দুই টেস্টের এই সিরিজ। মুশফিকুর রহিম উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন ৩০ বলে ১৪ রান তুলে। মোহাম্মদ মিথুন দুই ইনিংসেই ব্যর্থ। এই দফায় করলেন ১০ রান। অধিনায়ক মমিনুলও স্পিনের কাছে হার মানলেন। লিটন দাস স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন ২২ রান করে।
তামিম বাদে টপ বা মিডলঅর্ডারের কোন ব্যাটসম্যান ইনিংস লম্বা করতে পারলেন না। চতুর্থদিন ম্যাচে মিরপুরের উইকেটে স্পিন ধরবে-এটা তো জানা কথা। কিন্তু নিজেদের চেনা উইকেটে কেন নবিস এবং অপরিচিতের মতো আচরণ দেখাবেন ব্যাটসম্যানরা?
তারমানে কি টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনারদের বিরুদ্ধে ঠিকমতো হোমওয়ার্ক করেনি বাংলাদেশ?
২-০ তে টেস্ট সিরিজ হেরে এখন বাংলাদেশ সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছে!
সেরা টিভি/আকিব