লাইফস্টাইল ডেস্ক:
জন্মনিয়ন্ত্রণের অন্যান্য পদ্ধতিগুলোর মতো, জরুরি গর্ভনিরোধক পিল (ইসিপি) গর্ভধারণ থেকে বিরত রাখে। নিয়মিত গর্ভনিরোধক বড়ির সঙ্গে এর পার্থক্য হলো, অরক্ষিত শারীরিক সম্পর্কের পর এই পিল খেতে হয়।
অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ প্রতিরোধে অন্যান্য পিলের তুলনায় এই পিল আলাদা। তবে আপনি যদি ইতিমধ্যে গর্ভবতী হোন, তাহলে গর্ভনিরোধক পদ্ধতি হিসেবে এটি কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
জরুরি গর্ভনিরোধক পিল ভালো কাজ করতে পারে, তবে এটি নিয়মিত গর্ভনিরোধক বড়ির বিকল্প নয়। নিয়মিত গর্ভনিরোধক বড়ি আরও ভালো কাজ করে, এর কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে এবং এর খরচও কম। নাম অনুসারে, জরুরি গর্ভনিরোধক পিল জরুরি অবস্থার জন্য, সর্বদা ব্যবহার করার মতো কিছু নয়।
জরুরি জন্মনিরোধক পিলকে ‘মনিং আফটার পিল’ বলা হয়ে থাকে। এ কারণে অনেকে বিভ্রান্তিতেও পড়েন। মনে করেন যে, সকালে খেলেই হবে। কিন্তু অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের পর এই পিল যত দ্রুত খাওয়া হবে, ততই ভালো কাজ করবে।
জরুরি গর্ভনিরোধক পিল যখন জরুরি
* সম্মতি ব্যতিরেকে জোর করে অরক্ষিত সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য হলে।
* সহবাসের সময় কনডম ফেটে গেলে।
* মাসিক চক্রের সময় দুটি বা তার বেশি জন্মনিরোধক বড়ি খেতে ভুলে গেলে।
* ডায়াফ্রাম/সার্ভাইকাল ক্যাপের স্থানচ্যুতি হলে।
* অরক্ষিত শারীরিক সম্পর্কের পর গর্ভবতী হতে না চাইলে।
* নিরাপদকাল গণনায় ভুল হলে।
উপকারিতা
* অসুরক্ষিত শারীরিক সম্পর্কের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যদি গ্রহণ করা হয় তবে সাফল্যের হার ৯৮ শতাংশ। তবে যত তাড়াতাড়ি খাওয়া যাবে, ততই ভালো। জরুরি ভিত্তিতে গর্ভধারণ রোধে এটি অত্যন্ত কার্যকরী।
* এটিতে প্রোজেস্টোজেন রয়েছে যা খুব নিরাপদ হরমোন।
* পরবর্তীকালে গর্ভবতী হওয়া নিয়ে কোনো সমস্যা হয় না।
* আপনি যদি ইতিমধ্যে গর্ভবতী হন তবে এটি গর্ভপাত ঘটায় না।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
জরুরি গর্ভনিরোধক পিল সাধারণত নিরাপদ। তবে এ পিল সেবনে কারো কারো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমন-
* বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
* মাথা ব্যথা হতে পারে।
* মাথা ঝিমঝিম করতে পারে।
* অবসন্নতা বোধ হতে পারে।
* স্তনে ব্যথা হতে পারে।
* মাসিকের সমস্যা হতে পারে।
যেসব বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে
* জরুরি গর্ভনিরোধক পিল সেবনে বমি হতে পারে। পিল সেবনের ২ ঘণ্টার মধ্যে বমি হলে আরেকটি পিল খেতে হবে। তবে ২ ঘণ্টা পার হওয়ার পর বমি হলে পুনরায় পিল সেবনের প্রয়োজন নেই।
* জরুরি গর্ভনিরোধক পিল সেবনে অসুস্থা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
* এটিকে নিয়মিত গর্ভনিরোধক পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাই দীর্ঘমেয়াদে গর্ভধারণ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ হলো কপার আইইউডি ব্যবহার করা।
* জরুরি গর্ভনিরোধক পিল যৌন সংক্রমণজনিত রোগ থেকে রক্ষা করে না বা এটি বিদ্যমান সংক্রমণের চিকিৎসাও করে না।
* যেসব মহিলারা গর্ভবতী তাদের জরুরি গর্ভনিরোধক পিল ব্যবহার করা উচিত নয়।
* নির্দিষ্ট কোনো পিলের প্রতি অ্যালার্জি থাকলে সেটি গ্রহণ করা উচিত নয়। প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে উপযোগী পিলটি বেছে নিতে হবে।
* অসুরক্ষিত শারীরিক সম্পর্কের পর এই পিল খেতে হবে।
* জরুরি গর্ভনিরোধক পিল ঘন ঘন ব্যবহার করলে দীর্ঘমেয়াদে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
* বাজারে ১ ডোজ ও ২ ডোজের জরুরি গর্ভনিরোধক পিল পাওয়া যায়। জরুরি গর্ভনিরোধক পিল কার্যকর হওয়ার জন্য অবশ্যই প্যাকেজের নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে হবে।
তথ্যসূত্র: ওয়েব এমডি
সেরা টিভি/আকিব