বাকেরগঞ্জে শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধার নামে প্রতিষ্ঠিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় রাজাকারের বাড়ির সামনে জালিয়াতি করে স্থানান্তর করায় আদালতে মামলা - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
বাকেরগঞ্জে শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধার নামে প্রতিষ্ঠিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় রাজাকারের বাড়ির সামনে জালিয়াতি করে স্থানান্তর করায় আদালতে মামলা - Shera TV
বৃহস্পতিবার, ০২ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১০ অপরাহ্ন

বাকেরগঞ্জে শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধার নামে প্রতিষ্ঠিত বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় রাজাকারের বাড়ির সামনে জালিয়াতি করে স্থানান্তর করায় আদালতে মামলা

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৪ মার্চ, ২০২১
গাজী মোশারফ হোসেন,  বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি:
 ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনে  শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহম্মেদ নামে বাকেরগঞ্জের কবাই ইউনিয়নের হানুয়া গ্রামে  প্রতিষ্ঠিত শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহম্মেদ বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় কমিটির রেজুলেশন জালিয়াতি করে পাশ্ববর্তী লক্ষ্মীপাশা গ্রামে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী রাজাকার আবদুল ওয়াহেদ গাজীর নাম যুক্ত করে স্হানান্তর ও  গোপন কমিটির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকার সাধারন মানুষ এর প্রতিবাদে ফুসে উঠেছেন। বরিশাল জেলা, বাকেরগঞ্জ উপজেলা ও কবাই ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্হল পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে পৃথক পৃথক অভিযোগ দাখিল করেছেন। এদিকে এর প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান  ও প্রতিষ্ঠানের জমিদাতা এবং  প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সালাম বাদল।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, বাকেরগঞ্জের কবাই ইউনিয়নের হানুয়া গ্রামের শহীদ বীরমুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ’র ছেলে আব্দুস সালাম বাদল২০১৫ইং সালে তার বাবা নামে একটি বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয় স্হাপন করেন। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠার পর পাশ্ববর্তী লক্ষ্মীপাশা গ্রামের আবদুল মােতালেব গাজীর জামাতা শেখ হুমায়ুন কবীর সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয়ে করনীক পদে কর্মরত থাকায় তার সহযোগিতা চান। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক পদে তাকে রাখতে হবে এই শর্তে আবদুল মোতালেব গাজী সহযোগিতা করতে রাজি হন এবং  তার জামাতা শেখ হুমায়ুন কবিরের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ শুরু করেন। বিদ্যালয় স্হাপনের পর ১ জুন ২০১৭ তারিখে বাকেরগঞ্জ সাবরেজিস্টী  ৩২৯১ দলিলের মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠানের নামে ২০ শতাংশ জমি দান করেন পাকা আধাপাকা নির্মাণ করে  বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করেন । ২০১৭ সালের জুনে জাতীয় ও স্হানীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশের পর বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সভাপতি হয়ে ৫ সদস্যর নিয়োগ বোর্ড গঠন করে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেন।

আব্দুস সালাম (বাদল) জানান, সরকারি নীতিমালা-২০০৯ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি সুচার“ ভাবে পরিচালিত হয়ে আসিতেছে এবং কিছু দিন পূর্বে প্রতিষ্ঠানের রেজিষ্ট্রেশন লাভের জন্য জাতীয় গােয়েন্ধা নিরাপত্তা পরিষদের (এন,এস,আই) কর্তৃক প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত হয়। এর কিছু দিন পরে লক্ষ্মীপাশা মােতালেব গাজীর বাড়ীর সামনে টিনের একটি ঘর তৈরি করে শহীদ মুনসুর আহম্মেদ আবদুল ওয়াহেদ গাজী বুদ্ধি প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের নামে একটি সাইনবাের্ড দেয়া হয়। সাইনবাের্ড সম্পর্কে মােতালেব গাজী ও তার জামাতা শেখ হুমায়ুন কবিরের কাছে জানতে চান বাদল। তারা জানান, এখানে একটি হাই স্কুল ¯স্হাপন করা হবে। কিন্তু  প্রতিবন্ধি স্কুল  সম্পর্কিত বিশেষ নীতিমালা-২০১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিদ্যালয় সমূহের পাঠদান স্বীকৃতি/এমপিও ভুক্তির আবেদন পত্রে অবৈধ ভাবে শিক্ষক ও কর্মচারিদের জিম্মী করে স্কুলের স্হান হানুয়ার পরিবর্তে লক্ষ্মীপাশায় বিদ্যালয়টি স্হানান্তর দেখানাে হয়েছে। একারণে আদালতে মামলা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ দেন দাতা আব্দুস সালাম বাদল ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে  সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় তদন্তের দায়িত্ব দেয় বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদারকে। গতকাল শনিবার (১৩ মার্চ) সরেজমিনে তদন্তে আসে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের একটি টিম। দিনব্যাপী তদন্ত শেষে উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার সাংবাদিকদের জানান, একই নামে দুটি বিদ্যালয় স্হাপন করা হয়েছে ইতোমধ্যে কাগজপত্র যাচাই বাছাই করেছি। আজকে সরেজমিনেও ঘুরে দেখলাম। এখন তদন্ত প্রতিবেদন সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রেরণ করা হবে। এ সময় বরিশাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কে.এস মহিউদ্দিন মানিক বীর প্রতীক, বাকেরগঞ্জ উপজেলা সহকারী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোঃ রবুল হক হাওলাদার, কবাই ইউনিয়ন কমান্ডার তোজাম্মেল হোসেন তালুকদার, বীরমুক্তিযোদ্ধা রত্তন আলী গাজী, আলী হোসেন হাওলাদার, ইউনুস ফরাজী, মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সহ  নানা শ্রেণী পেশার কয়েক শতাধিক লোক উপস্হি’ত ছিলেন।

বরিশাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার কে এস মহিউদ্দীন মানিক বীর প্রতিক বলেন একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে একজন স্বাধীনতা বিরোধীর নাম যুক্ত করে স্বাধীন বাংলাদেশে কোন প্রতিষ্ঠান হতে পারেনা। যেখা‌নে মহামান্য সুপ্রিমকোর্ট দেশের সকল প্রতিষ্ঠান থেকে স্বাধীনতা বিরোধীদের নাম মুছে ফেলা হয়েছে সেখানে একজন স্বাধীনতা বিরোধীর নাম যারা একজন শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে সাথে যুক্ত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে তাদের প্রতিহত করা হবে। স্হানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীন ব্যক্তিরা জানান আবদুল ওয়াহেদ গাজী একজন তালিকাভুক্ত স্বাধীনতা বিরোধী তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কলসকাঠী গনহত্যা ও বাকেরগঞ্জের বিভিন্ন হত্যাকান্ড ও লুটপাটের সাথে জড়িত ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিন পালিয়ে ছিলেন ৭৫ বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ক্ষমতায় এলে তিনি এলাকায় ফিরে আসেন।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360