স্টাফ রিপোর্টার:
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় সফরকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসাছাত্রদের তাণ্ডবে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর। শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় শহরের প্রধান সড়ক টিএ রোডে মাদ্রাসায় ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সিগন্যাল বক্স ভেঙে ফেলায় ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রামের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
এদিকে মাদ্রাসাছাত্রদের তাণ্ডবের সময় শহরের দাতিয়ারা এলাকার সাগর মিয়ার ছেলে মো. আশিক (২০) নামের এক তরুণ নিহত হয়েছেন। তবে ওই তরুণ কীভাবে বা কার হামলায় আহত হয়ে মারা গেছেন, তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। এসময় প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধরা সড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে রেলস্টেশনে বিক্ষোভ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। রেল স্টেশনের সিগন্যাল, মাস্টার রুম, কন্ট্রোল রুম, টিকিট কাউন্টার, প্যানেল বোর্ডসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের কক্ষ ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে।
ঢাকাগামী কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে প্রবেশ করার সময় বিক্ষুব্ধরা পাথর নিক্ষেপ করলে ট্রেনটি ফিরে যায়। জেলা পরিষদ কার্যালয় বিকেল সোয়া ৫টায় ব্যাপক হামলা চালানো হয়। শহরের কাউতলী, ভাদুঘরে ব্যাপক চালানো হয়। সড়কে আগুন ধরিয়ে রাস্তায় অবরোধ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশের ছোড়া টিয়ারসেল ও রাবার বুলেটে আটজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোড, কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুহিলপুর, নন্দনপুর, মজলিশপুর, ঘাটুরাসহ বিভিন্ন স্থানে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে দূরপাল্লা সব যানবাহন বন্ধ রয়েছে। শহরের জেলা পরিষদ, পৌর মুক্ত মঞ্চ, পৌর মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভেঙে ফেলে।
স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে আলোকসজ্জা ও সড়ক সজ্জিতকরণ ব্যানার ফেস্টুন ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরা ভাংচুর করা হয়। বিক্ষুব্ধরা নরেন্দ্র মোদিবিরোধী শ্লোগান দেয়। সড়ক দখল করে স্লোগান দিতে থাকে। এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্ট্রেশনের মাস্টার শোয়েব আহমেদ বলেন, আমাদের স্টেশনে কয়েকশ মাদ্রাসা ছাত্র ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। পরিস্থিতি গরম হওয়ায় আপাতত রেল যোগাযোগ বন্ধ।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমানসহ বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি। জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিআইও-১) ইমতিয়াজ আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আশিক নামের এক তরুণ মারা গেছেন বলে শুনেছি। কিন্তু কীভাবে তিনি মারা গেছেন, তা জানি না। ওই তরুণের লাশ কোথায় রয়েছে, তার কোনো তথ্যও পুলিশের কাছে নেই।
সেরা টিভি/আকিব