অনলাইন ডেস্ক:
মীম আক্তার। খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারখালির গ্রামের মনির মিয়া ও হেনা দম্পতির সন্তান। বয়স ৭ বছর। মা-বাবা আর দুই বোন নিয়েই মীমদের সংসার। মীমের দাদী মারা গেছে রবিবার (২ মে) রাতে। সেই খবর শুনেই বাবা আর মায়ের সাথে যাচ্ছিল দাদীকে শেষ দেখা দেখতে এবং দাফন করতে। কিন্তু দুর্ঘটনায় তার দাদীর লাশ দাফনের আগেই হারিয়েছে পরিবারের সবাইকে।
মাদারীপুরের পদ্মায় দুই নৌযানের সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত হয়েছে মীমের বাবা মনির মিয়া (৩৮), মা হেনা বেগম (৩৬) এবং বোন সুমী আক্তার (৫) ও রুমি আক্তার (৩)। এ দুর্ঘটনায় ২৬ জন মারা গেছেন। এদের মধ্যে আছেন মীমের বাবা মা ও দুই বোন। আর জীবিত উদ্ধার হয় মীম। দুর্ঘটনায় স্পিডবোট দুমরে মুচরে যায়। এসময় ছিটকে নদীর তীরে বালুর মধ্যে পড়ে মীম। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।
পরে তাকে বেলা তিনটার দিকে নিয়ে আসা হয় শিবচরের উপজেলার কাঁঠালবাড়ীর হাজী ইয়াসিন মোল্লাকান্দি দোতার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণ। সেখানেই রাখা ছিলো দুর্ঘটনায় নিহতেদের মরদেহ। এসময় মীম নিহত বাবা মা ও দুই বোনের মরদেহ সনাক্ত করে। কান্নায় ভেঙে পড়ে মীম। মীমের কান্নায় এলাকায় শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মীমের কান্না দেখে স্থানীয়রা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মীম বলেন, দাদীর লাশ দেখতে খুলনা যাচ্ছিলাম বাবা মায়ের সাথে। যাওয়ার পথেই দুর্ঘটনায় বাবা মা দুই বোন মারা গেছে। আমি এখন কাদের কাছে থাকবো।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, দুর্ঘটনা এলাকা পরিদর্শন করেছি। যারা দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। মর্মান্তিক নৌ-দুর্ঘটনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের প্রত্যেক পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হবে। স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এ উদ্ধার কাজ পরিচালনা করেছেন।
উল্লেখ্য, শিবচরের উপজেলার কাঁঠালবাড়ীর বাংলাবাজার পুরোনো ঘাটে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে স্পিডবোট ডুবিতে তিন শিশু ও দুই নারীসহ ২৬ জন নিহত হয়।
সেরা টিভি/আকিব