স্পোর্টস ডেস্ক:
সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জাপানে করোনার বিধি-নিষেধ বাড়ানো হয়েছে। দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত জরুরি অবস্থার সময় বাড়ানো হয়েছে। টোকিও অলিম্পিক গেমসের তিন মাসের কম সময় বাকি থাকতে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোয় অলিম্পিক গেমস নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এর আগে গত ২৩ এপ্রিল করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজধানী টোকিওসহ চার প্রদেশে তৃতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। বাকি তিন প্রদেশ ছিল- ওসাকা, হিয়োগো এবং কিয়োটো। গত ২৪ এপ্রিল থেকে এই জরুরি অবস্থা আগমাী ১১ মে পর্যন্ত বহাল থাকার কথা ছিল। এখন জরুরি অবস্থা থাকবে চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা নতুন করে আইচি এবং ফুকুওকাতেও জরুরি অবস্থা থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
করোনার চতুর্থ ঢেউ জাপানে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আক্রান্তের দিক থেকে রাজধানী টোকিওকে ছাড়িয়ে গেছে বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত ওসাকা। ওসাকার পার্শ্ববর্তী প্রদেশ হিয়োগো এবং কিয়োটো।
তবে, মিয়াগি, এহিমে এবং অকিনাওয়া এই তিন প্রদেশে জরুরি অবস্থা না থাকলেও কঠোরভাবে বিধিনিষেধের আওতায় আনার এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সাইতামা, চিবা, কানাগাওয়া, মিয়াগি, অকিনাওয়া এবং আইচি প্রদেশসহ ১০টি এলাকা কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় ছিল।
জরুরি অবস্থা চলাকালে রেস্তোরাঁগুলো রাত আটটার মধ্যে বন্ধ এবং কারাওকে ও এলকোহল সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও স্পোর্টস এবং বিনোদনের যে কোনো ইভেন্ট বন্ধ রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে বারবার হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা এবং অপ্রয়োজনে বাইরে না বের হয়ে থাকতে প্রতি অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী সুগা। তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারি মোকাবিলায় জাপান স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তবে, অপ্রয়োজনে বাইরে সময় দেয়া, জনসংযোগ করা, জনসমাবেশ থেকে বিরত থাকাতে হবে।’
এদিকে, জাপানের সরকারি দলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে এ বছরের অলিম্পিক গেমস বাতিল করার কথা ভাবা যেতে পারে। অলিম্পিক শুরু হতে ১০০ দিনেরও কম সময় বাকি থাকতে গত ১৫ এপ্রিল এ কথা বলেন তিনি।
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক তোশিহিরো নিকাই টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যদি এটা আয়োজন করা অসম্ভব হয়ে পড়ে, তাহলে আমাদের উচিৎ এটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া।’
বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ক্রীড়া অনুষ্ঠানটি ইতোমধ্যে এক বছর পিছিয়ে গেছে। স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক দর্শক ছাড়াই এর আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল।
জাপানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঊর্ধ্বগামী। সরকার ‘জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নেয়ার পর থেকে টোকিওতে আগের চেয়ে বেশি হারে সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। ওসাকায় রেকর্ড সংখ্যক নতুন সংক্রমণ হয়েছে। সরকার সামাজিক দূরত্ব ও দর্শকদের ওপর অন্যান্য বিধিনিষেধ আরোপ করে আগামী ২৩ জুলাই থেকে অলিম্পিক শুরু করার সব প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অলিম্পিকের প্রথাগত মশাল বহনের অংশটিও সংক্ষিপ্ত আকারে আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
বিভিন্ন জরিপে বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে জাপানের অলিম্পিক আয়োজনের বিষয়টির পক্ষে খুব কম জনমত পাওয়া গেছে। জাপানে ‘অলিম্পিক বাতিল’ করার বিষয়টি টুইটারে ট্রেন্ডিং হয়ে উঠেছে।
তবে অলিম্পিকের আয়োজক ও জাপানের জাতীয় অলিম্পিক কমিটি এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি।
সেরা টিভি/আকিব