টিকটক নায়িকা বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিক্রি করে দেয়া হত পতিতা পল্লীতে - Shera TV
  1. [email protected] : sheraint :
  2. [email protected] : theophil :
টিকটক নায়িকা বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিক্রি করে দেয়া হত পতিতা পল্লীতে - Shera TV
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৪ পূর্বাহ্ন

টিকটক নায়িকা বানানোর প্রলোভন দেখিয়ে বিক্রি করে দেয়া হত পতিতা পল্লীতে

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৯ জুন, ২০২১

অনলাইন ডেস্ক:

নিম্নবিত্ত পরিবারের কিশোরী-তরুণীদের প্রতি নজর পড়েছে আন্তঃদেশীয় মানবপাচারকারীদের। বিদেশে ভাল চাকরির সুযোগ এবং টিকটক নায়িকা বানানোর প্রলোভনে বস্তিতে বস্তিতে সক্রিয় চক্রের লোকজন। তারকা খ্যাতির মোহের সঙ্গে উপার্জনের আশায় অজান্তেই ফাঁদে আটকা পড়ছে অনেক মেয়ে। ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকে সরব উপস্থিতি হৃদয় বাবুর। গান-সংলাপের তালে কণ্ঠ মিলিয়ে পেয়ে যান তারকাখ্যাতি। জুটে যায় হাজারো অনুসারী, যাদের বেশিরভাগই নিম্নবিত্ত পরিবারের কিশোরী ও তরুণী।

তাদেরকে কব্জায় রাখতে মাঝে মাঝেই ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করতেন হ্যাং আউট ও পুল পার্টি। শত শত অংশগ্রহণকারীর মধ্যমনি হয়ে নিয়ন্ত্রণ করতেন সবকিছু। এই প্রভাব-প্রতিপত্তি কাজে লাগিয়ে ঢাকার বস্তিতে বসবাসকারী হাজারো কিশোরী ও তরুণীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে গড়ে তোলেন বিরাট নেটওয়ার্ক। এরপর ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে মেয়েদের টিকটক নায়িকা বানানোর কথা বলে বিদেশে ভাল চাকরির ফাঁদ পাতেন হৃদয়। আরো গাঢ় হয়ে ওঠে দুই পক্ষের সম্পর্ক। পরে হ্যাং আউট কিংবা পুল পার্টির কথা বলে বাছাই করা মেয়েদের নিয়ে যাওয়া হয় সাতক্ষীরাসহ সীমান্তের জেলায়। সেখানে পাচারকারী চক্রের সদস্যদের বাড়িতে আটকে রাখা হয়। তারপর পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া মেয়েদের সীমানা পার করে তুলে দেয়া হয় চক্রের অন্য সদস্যদের হাতে। অন্তত সাত হাত বদলে পৌঁছে যায় বড় বড় শহরে। নানা হোটেলে বাধ্য করা হয় পতিতাবৃত্তিতে।

দুই মাস আটাশ দিন অবর্ণনীয় দুর্দশার শিকার এই কিশোরী সম্প্রতি ভারত থেকে পালিয়ে দেশে ফিরে এসে মানবপাচার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পাচারের শিকার কিশোরী জানান, ‘অনেক চাপ দিতো, মারধর করতো। কাজে যেতে হবে না হলে সমস্যা হবে। একপর্যায়ে মেয়েরা এমনকি আমিও বাধ্য হই কাজে যাবো। ওই বাসায় হৃদয় ও আরেকটা ছেলে থাকতো। তারা আমাদের দেখেশুনে রাখতো, যেন আমরা বের হতে না পারি।’ ভ্রমণসহ নাগরিক সুবিধা পেতে মেয়েদের আধার কার্ড যোগাড় করে দেয় পাচারকারীরা। টিকটকের ফাঁদ ছাড়াও দরিদ্র পরিবারকে অর্থের লোভ দেখিয়ে মেয়েদের যোগাড় করে পাচারকারীরা। এভাবে স্ত্রীকে তুলে দিয়েছে স্বামী, মেয়েকে তুলে দিয়েছে মা। তারপর ভারতে নিয়ে তাদের যৌনকর্মী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

পাচারের শিকার এক তরুণী জানান, ‘আমার হাজবেন্ড নদী নামের এক মেয়ের হাতে তুলে দেয়। সাতক্ষীরার বর্ডার থেকে আমরা পার হই, চেন্নাইতে যাই। অনেক অত্যাচার করেছে। আমি অনেক বলেছি ও চিৎকার করেছি বলে আমার ওপর অনেক বেশি অত্যাচার চলে।’ পুলিশ জানিয়েছে, মূলত বস্তির কিশোরী ও তরুণীদের টার্গেট করেছে পাচারকারীরা। ঢাকা মহানগর পুলিশ তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, ‘নিম্নবিত্ত ছেলেমেয়েদেরকেই মূলত টার্গেট করেছে। বিভিন্ন জায়গায় যে হ্যাং আউট পার্টি করেছে এসবে বেশ টাকা খরচ করেছে। টাকাটা কিভাবে আসতো, তাদের পিছনে অন্য কেউ আছে কি-না, এই বিষয়টাও আমরা খতিয়ে দেখছি।’

আন্তঃদেশীয় পাচার চক্রের মূলোৎপাটনে ভারতীয় পুলিশকে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশের পুলিশ। এরইমধ্যে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছে ছয় সদস্য, দেশে দুই মামলায় ধরা পড়েছে ১২ জন। উপ-কমিশনার মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ আরো জানান, ‘প্রচুর ছেলেমেয়ে এ গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত আছে। অনেকেই অ্যাডমিন আছে। নজরদারি আছে যারা অ্যাডমিনে আছেন তাদের প্রতি, আর কোন যোগাযোগ হলেই আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’

পুলিশ জানিয়েছে, পাচার হওয়া মেয়েদেরকে নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে পরিবারকে টাকা পাঠাতে বাধ্য করে চক্রটি। এরকম বেশক’টি ক্লিপ উদ্ধার হয়েছে।

সেরা টিভি/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360