করোনায় বিপর্যস্ত ইন্দোনেশিয়া, বাড়িতে বাড়িতে পড়ে আছে লাশ - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
করোনায় বিপর্যস্ত ইন্দোনেশিয়া, বাড়িতে বাড়িতে পড়ে আছে লাশ - Shera TV
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৯:১৮ পূর্বাহ্ন

করোনায় বিপর্যস্ত ইন্দোনেশিয়া, বাড়িতে বাড়িতে পড়ে আছে লাশ

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৭ জুলাই, ২০২১

ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:

করোনায় থমকে আছে বিশ্ব। চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটি এখনো তাণ্ডব চালাচ্ছে বিশ্বে। আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় প্রতিদিন নাম উঠছে বহু মানুষের। ভাইরাসটির ভয়াল ছোবলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া। অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ভয়াল থাবায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্রটিতে অক্সিজেন সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। হাসপাতালে অক্সিজেন না পেয়ে অনেকে বাড়িতেই মারা যাচ্ছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন হটস্পট হয়ে ওঠা এশিয়ার এই দেশটিতে সংক্রমণের এমন পরিস্থিতি গত দেড় বছরের মধ্যে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। আগুন নেভাতে ব্যস্ত থাকতে হতো যে দমকল কর্মীদের তাদের এখন লাশ উদ্ধারে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে। খবর বিবিসির।

দেশটিতে এখনো পর্যন্ত ২৬ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। প্রতিদিনই ৪০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। অতি সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জাকার্তার উইরাওয়ান একজন অগ্নিনির্বাপণ কর্মী হলেন গত এক বছর ধরে তিনি এবং তার সাত সহকর্মী বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার এবং সেগুলো কবর দেবার কাজ করছেন। উইরাওয়ান বলেন, বেশিরভাগ মানুষ একা একা মারা যাচ্ছেন। এর একটি হতে পারে তারা হয়তো প্রাথমিক চিকিৎসা পাননি, নয়তো হাসপাতাল থেকে তাদের ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ‘প্রায়ই প্রতিবেশীরা আমাদের ফোন করে বলে ‘এই ব্যক্তি সেলফ-আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় তাকে দেখা যায়নি’। তারপর তারা জানতে পারেন সে ব্যক্তি মারা গেছেন। এ ধরণের ঘটনা আমরা প্রতিদিন দেখছি। যোগ করেন উইরাওয়ান।

করোনাভাইরাসের সর্বশেষ ঢেউ আসার আগে তিনি প্রতিদিন দুই-তিনটি মৃতদেহ কবরের দেবার জন্য ফোন পেতেন। কিন্তু এখন তিনি প্রতিদিন ২৪টি মৃতদেহ কবর দেবার জন্য ফোন পাচ্ছেন। মে মাসের শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়ায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হঠাৎ করেই মারাত্মক আকার ধারণ করে। বিদেশ থেকে যারা ইন্দোনেশিয়ায় ঢুকছে তাদের কোয়ারেন্টিন করার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়াতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কখনো বন্ধ করা হয়নি। সম্প্রতি বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে আটদিন কোয়ারেন্টিন করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এটি আগে ছিল ছিল পাঁচদিন।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সীমান্ত খোলা রেখে করোনাভাইরাসে সংক্রমণ রোধ করা প্রায় অসম্ভব বিষয়। তবে সরকার বলছে, সীমিত সংখ্যক বিদেশি নাগরিক ইন্দোনেশিয়ায় ঢুকতে পারে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় এখনো পর্যন্ত ৬৯ হাজার মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার মানুষ মারা গেছে। তবে মৃতের সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। ইন্দোনেশিয়ার একটি পরিসংখ্যান গ্রুপ ল্যাপোর কোভিড-১৯ বলছে, জুন মাস থেকে এখনো পর্যন্ত ৪৫০ জন তাদের বাড়িতে মারা গেছেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবার পরে তারা সেলফ-আইসোলেশনে ছিলেন, কারণ হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি করানোর জায়গা ছিল না।

ইন্দোনেশিয়ার ভেতরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মূল কেন্দ্র হচ্ছে সবচেয়ে জনবহুল জাভা দ্বীপ। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে সেখানকার একটি হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটের কারণে ৬৩জন কোভিড রোগী মারা গেছেন। এসব মৃত্যুর ঘটনা পুরো দেশকে শোকাহত করেছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে সংবাদ মাধ্যম মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে বলেছে। তখন থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটের কারণে নতুন রোগী ভর্তি করানো বন্ধ করে দেয়া হয়।

ইন্দোনেশিয়ার হসপিটাল এসোসিয়েশনের মহাসচিব লিয়া গার্দেনিয়া পারটাকুসুমা বলেন, সাধারণত একটি হাসপাতালে এক সপ্তাহে তিন টন অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এখন এই পরিমাণ অক্সিজেন এক দিনেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের পরিস্থিতি এতোটা খারাপ হবে, সেটি সরকার অনুমান করতে পারেনি। সেজন্য অক্সিজেনের সংকট দেখা দিয়েছে। নিজেদের পরিবারের সদস্য এবং স্বজনদের জন্য অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে অক্সিজেন ট্যাংক এবং হাসপাতালে শয্যার জন্য আকুতি জানাচ্ছে।

অক্সিজেন সংকটের কারণে ইন্দোনেশিয়ার অধিকাংশ অক্সিজেন স্টোর বন্ধ হয়ে গেছে। যে কয়েকটি অক্সিজেন স্টোর খোলা রয়েছে, সেখানে মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। অক্সিজেন সংকটের এই সময়ে অনেকে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। টাকা দিয়েও অক্সিজেন পাচ্ছেন না। ইন্দোনেশিয়ার সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার অভিযোগে নানা সমালোচনার মুখে পড়েছে। কিন্তু আক্রান্ত ব্যক্তিদের সহায়তার জন্য সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসছে।

সেরা টিভি/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360