স্টাফ রিপোর্টার:
করোনার চেয়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে ডেঙ্গু জ্বর। ঢাকাসহ দেশ জুড়েই ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বাড়ছে। আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। গতকাল এক দিনে সর্বোচ্চ ৮০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে এক দিনে সর্বোচ্চ ৬৯ শিশু হাসপাতালে ভর্তি ছিল। সেই রেকর্ড শুক্রবার ভেঙে গিয়েছিল।
শুক্রবার এক দিনে ৭৬ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত শিশু ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, বর্তমানে প্রতিদিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শিশুদের জন্য কোভিডের চেয়ে বিপজ্জনক হলো ডেঙ্গু। আক্রান্তরা দ্রুত ‘শক’ এ চলে যাচ্ছে। পালস থাকে না, রক্তক্ষরণ হয়, ব্লাডপ্রেশার কমে যায়। তাই জ্বর হলেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করে চিকিত্সকের পরামর্শে থাকতে হবে। একই সঙ্গে এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে হবে।
গতকাল দেশে ২৭৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকায় ২৫৭ জন। গতকাল ডেঙ্গুতে মারা গেছে চার জন। বর্তমানে আইসিইউ বেড খালি নেই। ঢাকা শিশু হাসপাতালে গত জানুয়ারি থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত মোট ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৩৫৪ জন। এ পর্যন্ত ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ শফি আহমেদ জানান, বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ডেঙ্গু সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। ঐ বছর এক দিনে সর্বোচ্চ ৬৯ শিশু হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এ বছর সেই রেকর্ড ভেঙে এক দিনে রেকর্ড ৮০ শিশু ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি আছে। এর মধ্যে ১৪ শিশু আইসিইউতে আছে। তিনি বলেন, জ্বর হলে অবহেলা করা উচিত না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে, একই সঙ্গে ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে। শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুরা ডেঙ্গু জ্বরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের জন্য করোনার চেয়ে ভয়াবহ হলো ডেঙ্গু। করোনা হলে শিশুদের এতো শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় না। ঢাকা শিশু হাসপাতালে জুন মাস থেকে এ পর্যন্ত ছয় জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী মারা গেছে। সুতরাং অভিভাবকদের ডেঙ্গু বিষয়ে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। তিনি জানান, চলতি আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে দেখা যায়, দ্বিতীয় সপ্তাহে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা কম ছিল। তৃতীয় সপ্তাহে আবারও ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
সেরা টিভি/আকিব