জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ - Shera TV
শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৭ আগস্ট, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার:

কবিতার পঙক্তিতে দ্রোহের আগুন ছড়িয়ে দিয়েই তিনি থেমে থাকেননি, প্রিয়ার প্রতি ভালোবাসার ব্যাকুলতা প্রকাশ করতেও গান আর কবিতার আশ্রয় নিয়েছেন দ্রোহ, প্রেম, চেতনার কবি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার হাত ধরেই এদেশের সাহিত্য ও সঙ্গীতাঙ্গন উন্নীত হয় সুউচ্চ মর্যাদার আসনে।

শুক্রবার (২৭ আগস্ট, ১২ ভাদ্র) দ্রোহ, প্রেম ও মানবতার কবি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। বাংলা ১৩৮৩ সালের (১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট) এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন পিজি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

‘মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই/ যেন গোর থেকে মুয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই’-মসজিদের পাশে সমাহিত করার জন্য এই গানের মধ্য দিয়ে তিনি তার সুহৃদ ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনুরোধ করে গেছেন। তা মনে করে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবিকে সমাহিত করা হয়। কাজী নজরুল ছিলেন বাংলা সাহিত্যর অনন্য রূপকার। কবিতার পাশাপাশি সঙ্গীতেও তিনি সৃষ্টি করেছিলেন অনন্যতা। রাগ-রাগিণী আর শব্দের ব্যঞ্জনায় গান ও কবিতার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছিলেন, ঠিক একইভাবে উপন্যাসে জীবনকে তুলে এনেছেন, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সমাজের ক্ষয়ে যাওয়াকে স্পষ্ট করেছেন।

কবিতার দীপ্ত উচ্চারণে তিনি যেমন দ্রোহের আগুন ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ঠিক একইভাবে প্রিয়ার প্রতি তার নিজের ভালোবাসার কথাও তুলে ধরেছিলেন গান আর কবিতায়। দ্রোহের আগুনে জ্বলে উঠে কবি যেমন লিখেছিলেন ‘মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য’ ঠিক তেমনভাবে প্রিয়ার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশে তিনিই লিখেছিলেন প্রেমের অনন্য গান ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানী, দেবো খোঁপায় তারার ফুল’।

কাজী নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সাহিত্যিক, সঙ্গীতজ্ঞ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক। দারিদ্র্যের কারণে মাত্র ১০ বছর বয়সেই পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয় কবিকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কিছুদিন কাজ করার পর তিনি পেশা হিসেবে বেছে নেন সাংবাদিকতা। শুধু কলমেই দ্রোহের আগুন জ্বালাননি, দেশমাতৃকার জন্য অস্ত্র হাতে যুদ্ধও করেছেন সৈনিক কবি। নিজের লেখনীর মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িকতার বাণী ছড়িয়ে দিয়েছেন আজীবন আপসহীন কবি।

তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারকে উৎখাতের আন্দোলনে তার সৃষ্টি ‘বিদ্রোহী’ কবিতা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ার পর স্বাধীনতা আন্দোলন দানা বেঁধে উঠার কারণে কবিকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯২৩ সালের ৭ জানুয়ারি নজরুল বিচারাধীন বন্দি হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করে এক জবানবন্দি প্রদান করেন। চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে দেওয়া ওই জবানবন্দি বাংলা সাহিত্যে রাজবন্দীর জবানবন্দি নামে বিশেষ সাহিত্যিক মর্যাদা লাভ করেছে।

১৯২২ সালে প্রকাশিত হয় নজরুলের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবীণা’। এর মাধ্যমে বাংলাকাব্য জগতে নতুন দিনের সূচনা হয়। এ কাব্যগ্রন্থের ‘প্রলয়োল্লাস’, ‘বিদ্রোহী কামাল পাশা’, ‘শাত-ইল-আরব’, ‘আগমনী’, খেয়াপারের তরণী’সহ প্রতিটি কবিতাই বাংলা কাব্যে নতুন বাঁক সৃষ্টি করেছিল। সাহিত্যের সকল সৃজনশীলতাকে ছড়িয়ে সঙ্গীতেও নিজের শ্রেষ্ঠত্বের ছাপ রাখেন জাতীয় কবি। প্রায় চার হাজার গান রচনা ও সুর করে এদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের জন্য এনেছেন বিরল সম্মান ও খ্যাতি।

ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে ১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে এসে তাকে জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করেন। বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি প্রদান করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকে ভূষিত করা হয় কবিকে।

কর্মসূচি:
জাতীয় কবির ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এর মধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সকাল সাড়ে সাতটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়স্থ কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা থাকছে। মাজারে ফুলেল শ্রদ্ধার পাশাপাশি দোয়া, ফাতেহা পাঠ। সকাল দশটায় নজরুল ইনস্টিটিউটের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে ভার্চ্যুয়াল আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল সাড়ে ১১টায় বিএসএমএমইউ’র যে কক্ষে ৪৫ বছর আগে নজরুলের চিকিৎসাধীন ছিলেন সেই কক্ষের স্মৃতি নিয়ে ‘আলোচনা ও নজরুল স্মৃতি’ শিরোনামের আলোচনার আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। এটি অনুষ্ঠিত হবে বিএসএমএমইউ’র শহীদ ডা. মিল্টন হলে।

এদিকে নজরুলের মৃত্যুবার্ষিকীতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলা একাডেমি। সকাল সাড়ে ৭টায় কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের পর বিকেল ৪টায় অনলাইনে নজরুল বিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলা। সাংস্কৃতিক পর্বে নজরুলের কবিতা থেকে আবৃত্তির পাশাপাশি শিল্পীরা পরিবেশন করবেন জাতীয় কবি রচিত গান।

‘মিলনে বিরহে নজরুল’ শিরোনামের আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ নজরুলকে স্মরণ করবে সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট। নাচ, গান, আবৃত্তিসহ নানা আয়োজনে সাজানো থাকবে ছায়ানটের এই আয়োজন। রাত নয়টায় সংগঠনটির ফেসবুক পেইজে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে এই আয়োজন। ‘আমারে দেবোনা ভুলিতে’ কবির মৃত্যুবার্ষিকী পালনে ‘আমার দেবো না ভুলিতে’ শিরোনামের ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। কবির ‘বিদ্রোহী’ কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে এই আয়োজনে পরিবেশিত হবে কবির বিভিন্ন সময়ের গান ও কবিতা। মৃত্যুবার্ষিকীর একদিন পর শনিবার (২৮ আগস্ট) সংগঠনটির ফেসবুক পেইজে সম্প্রচারিত হবে এই আয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও অনেক সংগঠনের পক্ষ থেকে কবির সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনসহ বিভিন্ন আয়োজন করেছে অন্যান্য আরও অনেক সংগঠন।

সেরা টিভি/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360