স্টাফ রিপোর্টার, নিউইয়র্ক থেকে
পাসপোর্ট হাতে পেলেই আমেরিকায় উড়াল দেবার প্রস্তুতি নায়িকা পরীমণির। তার হ্যারিয়ার গাড়ি, পাসপোর্ট, মোবাইল, ল্যাপটপসহ জব্দ করা ১৬টি আলামত ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এসব জব্দ মালামাল পরীমণিকে ফেরত দিতে পুলিশের তদন্ত সংস্থা সিআইডির কোন আপত্তি নেই বলে আদালতকে আগেই জানিয়েছেন তারা। গ্রেফতার হবার আগেও একবার পরীমণি চেষ্টা করেছিলেন আমেরিকায় যাবার জন্য। জব্দ মালামাল পাবার অপেক্ষায় রয়েছেন পরীমণি। একথা আদালতকেও তিনি জানিয়েছেন।
পাসপোর্টসহ জব্দ মালামাল ফেরত দিতে ২৮ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত আদেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী। জব্দ হওয়া আলামতের মধ্যে রয়েছে একটি টয়োটা হ্যারিয়ার গাড়ি, দুইটি ল্যাপটপ, তিনটি আইফোন, একটি আইপ্যাড, একটি মেমোরি কার্ড, একটি পেনড্রাইভ, একটি মডেম, দুইটি ব্যাংকের ভিসা ক্রেডিট কার্ড এবং একটি পাসপোর্ট।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে সাদা রঙের একটি গাড়িতে করে আদালতে আসেন পরীমণি। তবে তিনি এবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কোন কথা বলেননি। ১৫ই সেপ্টেম্বর এসব আলামত ফেরত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন পরীমণির আইনজীবী। সেই সময় পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, ‘পরীমণি আদালতে বলেছেন, তার বাসায় অভিযান চালিয়ে বাসার চাবিসহ অনেক কিছু নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস না থাকায় পরীমণি সমস্যায় পড়েছেন এবং এ জন্য মানবিক কারণে যে কোন শর্তেই হোক না কেন গাড়ি ফেরত দেয়ার জন্য আবেদন করেন।
এর আগে গত ২৬শে সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি আদালতে একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, পরীমণিকে যদি তার জব্দ করা আলামত ফেরত দেয়া হয়, তাহলে মামলার তদন্তে বিঘ্ন হবে না।
গত ৪ আগস্ট বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে পরীমণিকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। সেই সময় ওই বাসা থেকে র্যাব বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধারের তথ্য জানায়। সেসময়ই তার বাসা থেকে গাড়ি, ল্যাপটপ, মোবাইলসহ ১৬টি জিনিস জব্দ করা হয়েছিল।
এরপর ওই মামলায় পরীমনিকে প্রথমে চারদিন, পরে আরও দুই দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
তার জামিনের আবেদন জানানো হলেও তিন সপ্তাহ পরে শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হলে সেই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন পরীমণি। ২৬শে অগাস্ট শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দিয়ে পহেলা সেপ্টেম্বর শুনানির দিন রাখেন।
তবে নিম্ন আদালত তার আগে জামিন শুনানির দিন এগিয়ে নিয়ে আসেন। ৩১শে অগাস্ট পরীমণির জামিন মঞ্জুর করা হলে পরদিন তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পান। কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তার হাতে লেখা একটি বাক্য সামাজিক মাধ্যমে রীতিমত আলোচনার ঝড় তুলেছে।
জামিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে কারাগার থেকে বেরিয়ে একটি ছাদ খোলা গাড়িতে করে ঢাকার দিকে চলে যান পরীমণি, আর তখন তার পরনে ছিল সাদা টি-শার্ট এবং মাথায় সাদা পাগড়ির মতো করে জড়ানো একটি কাপড়।
সাতাশ দিন পর কারাগারের বাইরে বেরুনো অভিনেত্রীর ওই লেখা এবং ছাদখোলা গাড়িতে তার অভিব্যক্তি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, অনেকেই এসব ছবি শেয়ার করতে শুরু করেন। জুন মাসে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করে ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছিলেন পরীমণি।
হাতে মেহেদীর রঙে আঁকা ওই লেখার মাধ্যমে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন, তা জানতে চাওয়া হলে পরীমণি বলেন, ‘ডেফিনেটলি এটা তো একটা বার্তাই ছিল।’
তিনি বলেন, ‘এত কথা তো বলতে পারছিলাম না ওখানে বসে, মনে হলো এভাবে পৌঁছাইয়া দেই সবাইকে। এখন এটা দেখে যে মনে করবে, যার মনে হবে, আমাকে বলছে মনে হয়, ওর জন্যেই বলছি আমি।’