স্টাফ রিপোর্টার: ভয়ংকর মাদক মাদক আইসের (ক্রিস্টাল মেথ) সবচেয়ে বড় চালানসহ রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে দুজনকে আটক করেছে র্যাব। শনিবার ভোরে ৫ কেজি ৫০ গ্রাম আইস ও একটি বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ তাদের আটক করা হয়েছে। জব্দকৃত আইসের মূল্য আনুমানিক সাড়ে ১২ কোটি টাকা বলে দাবি করেছে র্যাব। অবাদে এই ভয়ঙ্কর মাদক আসছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গতকাল র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত মাদক হলো আইস বা ক্রিস্টাল মেথ। মানবদেহে ইয়াবার চেয়েও বহুগুণ ক্ষতি করে এই আইস। এটি সেবনের ফলে অনিদ্রা, অতি উত্তেজনা, স্মৃতিভ্রম, মস্তিষ্ক বিকৃতি, স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি ও লিভার জটিলতা এবং মানসিক অবসাদ ও বিষন্নতার ফলে আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।’
গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘সাম্প্রতিক টেকনাফকেন্দ্রিক কয়েকটি মাদক চক্র বেশ কিছুদিন ধরে পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে মাদক আইস বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। ফলশ্রুতিতে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। সেই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা এবং র্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল শনিবার ভোরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে টেকনাফ আইস সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা হোছেন ওরফে খোকন (৩৩) ও মোহাম্মদ রফিককে (৩২) আটক করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ অভিযানে জব্দ করা হয় আলোচিত নতুন ভয়ংকর মাদক আইস, যার পরিমাণ প্রায় পাঁচ কেজি ৫০ গ্রাম। জব্দকৃত এই মাদকের বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে ১২ কোটি টাকা। এ ছাড়া তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গোলাবারুদ, দুটি মোবাইল, তিনটি দেশি, বিদেশি সিমকার্ড এবং মাদক ব্যবসায় ব্যবহৃত ২০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।
আটকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘তারা টেকনাফকেন্দ্রিক মাদক সিন্ডিকেটের সদস্য। এই চক্রটি কয়েক বছর ধরে অবৈধ মাদক ইয়াবার কারবার করে আসছে। সিন্ডিকেটে আরও ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য রয়েছে। সিন্ডিকেটের সদস্যরা সাধারণ নৌপথ ব্যবহার করে মাদকের চালান মিয়ানমার থেকে দেশে নিয়ে আসে। চক্রটি ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত থেকে বিগত কয়েক মাস ধরে আইস পাচার করে নিয়ে আসছিল। ঢাকার উত্তরা, বনানী, গুলশান, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় তাদের সিন্ডিকেট সদস্য রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো হবে।’
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মো. হোছেন ওরফে খোকন এই চক্রের অন্যতম মূল হোতা। তিনি কাপড় ও আচারের ব্যবসার আড়ালে মাদকের চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতেন। তার নামে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও মাদকসহ অন্তত সাতটা মামলার তথ্য পেয়েছি আমরা।’
এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত মোহাম্মদ রফিক এই চক্রের একজন সক্রিয় সদস্য এবং টেকনাফে অটোরিকশা চালকের ছদ্মবেশে মাদক পরিবহণ এবং স্থানান্তর করতেন তিনি।’
সেরা টিভি/আকিব