অনলাইন ডেস্ক:
তিনদিন ধরে পাটুরিয়ার ৫নং পল্টনের সঙ্গে কাত হয়ে ডুবে আছে রো রো ফেরি আমানত শাহ। তার ভেতরে আটকে রয়েছে কমপক্ষে আরও ৪টি যানবাহন। ইতিমধ্যে উদ্ধার হয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও একটি মোটরসাইকেলসহ ১০টি যানবাহন। উদ্ধার কাজে রয়েছে ৬০ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। ঘটনার পর ফেরি থেকে নদীতে ছিটকে পড়া ভাসমান যানবাহনগুলো উদ্ধারে হামজার ভূমিকা দেখা গেলেও ফেরি উদ্ধারে কিংবা ফেরি নড়াচড়ায় চুল পরিমাণ সরাতে পারেনি জাহাজটি। বলা হয়েছিল ফেরি উদ্ধারে চাঁদপুর থেকে আনা হবে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়কে। তথ্য মতে এই প্রত্যয়ের ধারণ ক্ষমতা মাত্র ২৫০ টন আর পানিতে নিমজ্জিত ফেরিটির ওজন প্রায় ১ হাজার টনের মতো। আমাতন শাহ’র ওজনের কথা শোনার পর শেষমেশ পিছু হটে প্রত্যয়।
অথচ গেল ৩ দিন ধরে বলা হচ্ছিলো উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় খুব তারাতারি পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নেবে। কিন্তু প্রত্যয়ের চেহারা আর দেখা গেলো না। তার আগেই প্রত্যয়কে মাঝ পথ থেকে প্রত্যাহার করে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ঘটনার ৩ দিন পর গতকাল দুপুরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে এমন তথ্য জানালেন বিআইডাব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদিক। তার ভাষ্যমতে উদ্ধারের জন্য রওয়ানা দিয়েছে রুস্তম নামের উদ্ধারকারী আরেকটি জাহাজ। হামজা ও রুস্তম দিয়ে আপাতত উদ্ধার তৎপরতা চালানো হবে। তিনি জানান, ‘উদ্ধারকাজে অংশ নেয়ার জন্য উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়ের পরিবর্তে শিমুলিয়া থেকে রুস্তম নামের আরেকটি জাহাজ আসবে। সেটি সন্ধ্যায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ফেরির ভেতরে আটকে থাকা আরও ৫টি যানবাহন উদ্ধারের পরই ফেরি তোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়কে এখানে নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু এখানে জায়গার যে স্বল্পতা রয়েছে এতো বড় জাহাজ নড়াচড়ায় সম্ভব নয়। তাই আপাতত ফেরিতে থাকা যানবাহবাহনগুলো উদ্ধারে হামজার সঙ্গে যোগ দেবে উদ্ধারকারী আরেক জাহাজ রুস্তম। ইতিমধ্যে ৯টি যানবাহন উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি যে যানবাহনগুলো ফেরির ভেতরে রয়েছে তা শনাক্ত করা খুবই জটিল। তারপরও আশা করা হচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি যানবাহনগুলো উদ্ধার হয়ে যাবে। আর ফেরি উদ্ধারের ব্যাপারে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে সকাল থেকে জাহাজ হামজার পাশাপাশি উদ্ধার কাজ করেছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, ফায়ার সাভিস, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও বিআইডাব্লিউটিএ’র ডুবুরি দল। গতকাল বেলা ৩টা পর্যন্ত ফেরির ভেতরে আটকে পড়া আরও দুটি ট্রাক উদ্ধার করেছে। এনিয়ে গেল ৩ দিনে ১১টি যানবাহন উদ্ধার করা হয়।
বিআইডাব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক (উদ্ধার) ফজলুর রহমান বলেন, বর্তমানে হামজা নামের জাহাজটি দিয়ে শুধুমাত্র ফেরির ভেতরে থাকা যানবাহনগুলো উদ্ধার সম্ভব। এর বাইরে ফেরি উদ্ধারের কথা এই জাহাজ কিংবা প্রত্যয় দিয়ে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ ফেরিটি পানিতে নিমজ্জিত থাকায় বর্তমানে তার ওজন হয়েছে স্বাভাবিক ওজনে চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। হামজার ধারণ ক্ষমতা ৬০ টন আর প্রত্যয়ের ধারণ ক্ষমতা ২৫০ টন। দু’টো এক করে চেষ্টা চালানো হলেও সম্ভব নয়। তবে বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া ফেরি উদ্ধার সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি শুধুমাত্র যানবাহন উদ্ধারে। পাশাপাশি কোনো মানুষ ভেতরে রয়েছে কিনা তা উদ্ধারের জন্য।
সেরা টিভি/আকিব