এ সময় মামুনুল হক উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, শরিয়তের হুকুম, হিজাব খুলবে না ঝর্ণা। তবে ঝর্ণা একবার হিজাব খুলে বিচারককে মুখ দেখিয়ে ফের হিজাব দিয়ে মুখ ডেকে রাখেন। জেরা চলার সময় ঝর্ণার দিকে বারবার তাকাচ্ছিলেন মামুনুল হক। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বেলা ২টার দিকে মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগার পাঠানো হয়। এর আগে সকাল ৯টার দিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় তাকে আদালতে আনা হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) রকিবুদ্দিন আহমেদ বলেন, আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার বাদী৷ তিনি নিজেই ঘটনার ভিকটিম৷ আসামির দাবি ভিকটিম তার স্ত্রী৷ এই প্রসঙ্গেই বাদীকে পরে জেরা করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী৷ তবে বাদী বলেছেন, তিনি মামুনুল হককে বিয়ে করেননি৷ বিয়ের প্রলোভনে তাকে গত ২রা এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে ধর্ষণ করেন মামুনুল হক৷ এর আগেও একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করেছেন আসামি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণা মেডিক্যাল টেস্টে বলেছেন তিনি মামুনুল হকের কালেমা পড়া স্ত্রী। মামুনুল হকের সঙ্গে তিনি ঢাকা থেকে এসেছেন। তাদের অনেকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় তিনি কোথাও মামলা কিংবা জিডি করেননি। কারও কাছে বলেননি। ধর্ষণ একবার দুইবার হতে পারে। কিন্তু অসংখ্যবার হয় না। সেক্ষেত্রে আমি আশা করি আমরা সফলতা পাবো।
প্রসঙ্গত, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে মামুনুল হককে ঘেরাও করেন। পরে ওই রিসোর্টে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় গাড়ি ভাঙচুর, মহাসড়কে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ, আওয়ামী লীগ কার্যালয়, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতার বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এক সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি ও সাংবাদিক বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এর কিছুদিন পর স্থানীয়রা আরও তিনটি মামলা করেন। ছয়টি মামলার মধ্যে তিনটি মামলায় প্রধান আসামি মামুনুল হক।
গত ৩০শে এপ্রিল বিয়ের প্রলোভনে দুই বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ এনে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় মামলা করেন ওই নারী। তবে মামুনুল হক তাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন।
সেরা টিভি/আকিব