স্টাফ রিপোর্টার:
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ৬ জেলায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। সহিংসতার ঘটনায় আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। তৃতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে বেশ কয়েকজন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভোট গণনার পর বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুজ্জামান ও তার সমর্থকরা প্রিজাইডিং অফিসারসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ঘিরে ফেলে। এরপর পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও অবরুদ্ধ করে রাখে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিজিবি গেলে বিক্ষুব্ধরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে ঘটনাস্থলে একজন এবং হাসপাতালে আরো দুইজন মারা যায়।
মুন্সিগঞ্জ সদরের বাংলাবাজার ও পঞ্চসার ইউনিয়নে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুইজন নিহতের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। নরসিংদীতে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দুইজন নিহতের ঘটনায় সাড়ে ৪শ’ জনকে আসামি করে দুটি মামলা হয়েছে। রায়পুরায় চান্দেরকান্দি ইউনিয়নে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আরিফ মিয়া নামে এক সিএনজি অটোরিকশাচালক মারা যান। এছাড়া, উত্তর বাখরনগরে ফরিদ মিয়া নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়।
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় নির্বাচনি সহিংসতায় আহত দেলোয়ার হোসেন সাগর (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। হাটিকুমরুল ইউনিয়নের মাছিয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩নং ওয়ার্ডের দুই মেম্বর প্রার্থী সেলিম হোসেন ও হীরা সর্দারের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় স্কুলছাত্র দেলোয়ার হোসেন সাগরসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে নির্বাচনি সহিংসতায় বিজিবি সদস্য নিহতের ঘটনায় গাঢ়াগ্রাম ইউনিয়নের দলিরাম এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার পর গ্রামছাড়া এলাকার পুরুষ মানুষ। এ ঘটনায় কোনও মামলা বা কেউ আটক হয়েছে কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কথা বলতেও রাজি হননি নিরাপত্তা বাহিনীর কেউ।
এছাড়া সহিংসতায় লক্ষ্মীপুরের ইছাপুরা ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগ সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন সজিব নিহত হয়েছেন। আর কক্সবাজারের চকরিয়ায় আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থীর মিছিলে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে পাঁচজন। এদিকে, বেসরকারি ফলাফলে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৪২৪ জন। আর বিদ্রোহী জয়ী হয়েছেন শতাধিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতেছেন ২৯৩ জন। জাতীয় পার্টির সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে জয় পেয়েছেন ১৫ জন।
এছাড়া, জাসদ তিন, সিপিবি তিন, ইসলামী আন্দোলন এক, জামায়াতুল উলামায়ে ইসলামী এক এবং জামায়াতে ইসলামের ৬ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান হিসেবে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে, সহিংসতার কারণে ২৬টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের শতাধিক প্রার্থী। সংঘর্ষ-সহিংসতার মধ্যেই গতকাল রবিবার তৃতীয় ধাপে ৯৮৬টি ইউনিয়ন পরিষদ ও ৯টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ হয়।
সেরা টিভি/আকিব