অনলাইন ডেস্ক:
সদ্য পদত্যাগী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের ফোনালাপ ফাঁস নিয়ে নারীবাদী লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে ডা.মুরাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নারীকে ধর্ষণসহ নানা সমালোচনা করেন তিনি।
ডা. মুরাদ হাসানের সঙ্গে চিত্রনায়ক ইমন ও নায়িকা মাহিয়া মাহির কথোপকথনের একটি কল রেকর্ড ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অডিও ক্লিপটিতে শোনা যায়, মাহিকে তাৎক্ষণিক তার কাছে যেতে বলছেন প্রতিমন্ত্রী মুরাদ। নায়িকা মাহী এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন, ধর্ষণের হুমকি দেন, এনএসআই, ডিজিএফআইসহ আরও বিভিন্ন সংস্থার ভয় দেখান এবং গুলি করারও হুমকি দেন তিনি।
এরপরই ডা. মুরাদকে নিয়ে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (৭ই ডিসেম্বর) দুপুরেই নিজ দপ্তরে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন ডা. মুরাদ।
এদিকে, ফোনালাপ ফাঁসের পরে ডা.মুরাদের সম্পর্কে ধর্ষণের অভিযোগসহ নানা সমালোচনা করেছেন আলোচিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তিনি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের মন্ত্রী মুরাদ হাসান খুব ব্রুটালি মাহিকে ধর্ষণ করতে চেয়েছে। আমরা যারা তার সেই ফোনালাপ শুনেছি, তারা নিশ্চয়ই অনুমান করতে পারি যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে লোকটি অসংখ্য মেয়েকে ধর্ষণ করেছে।
তার চালচলন, আচার-ব্যবহার সব বলে দেয় যে সে ধরাকে সরা জ্ঞান করে। কে তাকে এত বর্বর হওয়ার স্বাধীনতা দিয়েছে? এও অনুমান করতে পারি, কে?। লোকটি মাতাল হয়ে মানুষকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। নেত্রীর আশকারা তাকে কোথায় উঠিয়েছে! উঠিয়েছে নাকি নামিয়েছে? আমি তো বলব মানুষ হিসেবে তাকে অনেক নিচে নামিয়েছে।
মুখে যতই জামায়াতবিরোধী কথা বলুক না কেন, লোকটি আসলে জামাতপন্থি। আমাকে চেনে না, জানে না, আমার কোনো বই পড়েনি, আমার আদর্শ আর বিশ্বাসের, আমার সততা এবং সংগ্রামের কিছুই না জেনে আমার সম্পর্কে বিজ্ঞের মতো বলে গেল কতগুলো কুৎসিত মিথ্যা। ঠিক জামায়াতিরা যেভাবে বলে।
আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? আমি নাকি কাপড় তুলে বা খুলে কোথাও প্রস্রাব করেছি। প্রস্রাব করলে তো কাপড়ে করা ঠিক নয়, কাপড় খুলে বা তুলেই করতে হয়। আমাকে প্রস্রাব করতে দেখেছে জামায়াতিরা, ওয়াজিরা আর মন্ত্রী মুরাদ।
আমি নিশ্চয়ই তাহলে এমন জায়গায় প্রস্রাব করেছি যেখানে জামায়াতিরা আর ওয়াজিরা গিজগিজ করছিল, আর তাদের দোসর হিসেবে মন্ত্রী মুরাদ সেখানে উপস্থিত ছিল। কোনো মসজিদে, ওয়াজ মাহফিলে বা কোনো ইজতেমায়! নিশ্চয়ই। তা না হলে ওরা সবাই আমাকে কী করে প্রস্রাব করতে দেখল!
অনেক দিন শুনেছি জামায়াতি আর আমাতি বা আওয়ামিলীগে কোনো তফাৎ নেই। ধীরে ধীরে টের পেয়েছি, আসলেই কোনো তফাৎ নেই।
জামায়াতিরা যেভাবে আমার বয়ফ্রেন্ডের সংখ্যা গোনে, ঠিক একইভাবে মন্ত্রী মুরাদও গুনেছে। আমার নাকি অনেক বয়ফ্রেন্ড। তা থাকুক না অনেক। আমি তো পুলিশ, এনএসআই, ডিজিএফআই ইত্যাদি দিয়ে কোনো পুরুষকে জোর করে থ্রেট করে তুলে এনে বয়ফ্রেন্ড বানাইনি!
লোকটির দুটো তিনটে ইন্টারভিউ, ফোনালাপ ইত্যাদি দেখে বুঝলাম, লজ্জা নেই। কারও পা চাটতেও লজ্জা নেই, কাউকে ভয় দেখাতে, হুমকি দিতে, অশ্লীল গালিগালাজ করতে, কাউকে ধর্ষণ করতেও লজ্জা নেই।’
সেরা টিভি/আকিব