সেরা নিউজ ডেস্ক:
নভেল করোনাভাইরাস একের পর এক প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে মানুষের। করোনা আক্রান্তের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্র এখন শীর্ষে। এর মধ্যে নিউইয়র্কের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। প্রতিদিনই এ রাজ্যে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। সবশেষ ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে নিউইয়র্কেই ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্কে ২১ বাংলাদেশির মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। দেশটিতে ২৩ জন বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২৮ মার্চ মৃত্যু হয়েছে কায়কোবাদ, শফিকুর রহমান মজুমদার, আজিজুর রহমান, মির্জা হুদা, বিজিত কুমার সাহা, শিপন হোসাইন, জায়েদ আলম ও মুতাব্বির চৌধুরী ইসমত। এছাড়া মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েট সিটি ও নিউজার্সির প্যাটারসনে দুই বাংলাদেশি নারীর মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। তাদের দু’জনের বাড়ি সিলেটে বলে জানা গেছে। এক দিনে করোনাভাইরাসে এত প্রবাসী বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিউইয়র্কে করোনোয় আক্রান্ত হয়ে এর আগে যেসব প্রবাসী বাংলাদেশি মারা যান তারা হচ্ছেন- ৬০ বছরের আবদুল বাতেন, ৭০ বছরের নুরজাহান বেগম, ৫৯ বছরের এটিএম সালাম এবং ৪২ বছরের এক প্রবাসী নারী। স্থানীয় সূত্র জানায়, আবদুল বাতেনের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী। তিনি ব্রুকলিনে বসবাস করতেন। ৪২ বছরের ওই নারীর বাড়ি মৌলভীবাজার জেলায়। তিনি অ্যাস্টোরিয়ায় বাস করতেন। রংপুরের এটিএম সালাম থাকতেন ওয়েস্ট বে লং আইল্যান্ড এলাকায়। ঢাকার মোহাম্মদপুরের নুরজাহান বাস করতেন এলমহার্স্ট এলাকায়।
২৩ মার্চ মারা গেছেন ৩৮ বছরের আমিনা ইন্দ্রালিব তৃষা এবং ৬৯ বছরের মোহাম্মদ ইসমত। আগের সপ্তাহে মারা গেছেন মোতাহের হোসেন ও মোহাম্মদ আলী নামের দু’জন বাংলাদেশি। প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ মৃত্যুর মিছিল দেখে আতঙ্কে অনেকেই ঘরবন্দি হয়ে জীবনযাপন করছেন। আবদ্ধ জীবনে অনেক প্রবাসী তাদের হাঁপিয়ে ওঠার কথা জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র করোনার ভয়াল থাবায় জর্জরিত। নিউইয়র্কের কারাগারগুলোতেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এ ভাইরাস। রোববারও ৫ বাংলাদেশিসহ আড়াই শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী দুই সপ্তাহে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি হবে। এমন পরিস্থিতিতে আক্রান্তের সংখ্যা কমাতে সমাজিক দূরত্বের সময়সীমা ১২ থেকে বাড়িয়ে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট। আগামী দুই সপ্তাহকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এ সময়ে সরকারের নির্দেশনা মেনে সামজিক দূরুত্ব বজায় রাখতে হবে। এ দুঃস্বপ্ন থেকে যেন বেরিয়ে আসতে পারি, সেজন্য মার্কিন সরকার আরও পদক্ষেপ নিয়েছে। সুতরাং সবাইকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। নয়তো মৃতের সংখ্যা অনেক বেড়ে যেতে পারে। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিনের মতো ছিল করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য সন্দেহভাজন রোগীদের ভিড়। কিন্তু প্রয়োজনীয় কিটের অভাবে তাদের সবার পরীক্ষা হয়নি বলে জানিয়েছেন রোগীরা।
সেরা নিউজ/আকিব