কমছে আক্রান্তের হার, বাড়ছে মৃত্যু - Shera TV
  1. [email protected] : akibmahmud :
  2. [email protected] : f@him :
কমছে আক্রান্তের হার, বাড়ছে মৃত্যু - Shera TV
মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৪ পূর্বাহ্ন

কমছে আক্রান্তের হার, বাড়ছে মৃত্যু

সেরা টিভি
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০২০

বিশেষ প্রতিবেদক:
চীনের উহানে গত ৩১ ডিসেম্বর প্রথম নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। সেই হিসাবে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বয়স গতকাল মঙ্গলবার তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। এই তিন মাসের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে একটি স্বস্তির খবর মিলেছে; আরেকটি অস্বস্তির। স্বস্তির খবর হলো, গত দুই দিন ধরে (২৯ ও ৩০ মার্চ) বিশ্বে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। আর অস্বস্তির খবর হলো, দৈনিক মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। করোনাভাইরাস ডিজিস-২০১৯ (কভিড-১৯) আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে গত সোমবার; তিন হাজার ৭২৩ জনের।

ইউরোপের জন্য স্বস্তির খবর হলো, ইতালিতে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তবে ক্রমে খারাপের দিকে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা পৌনে দুই লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ আঘাত হানার আশঙ্কা এখনো কাটেনি এশিয়ার দেশ চীনে। বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে প্রতিদিনই অনেকেই প্রবেশ করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না ইরান।

গতকাল পর্যন্ত দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে আট লাখ। প্রাণ হারিয়েছে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ।

দৈনিক আক্রান্ত কমেছে : বিশ্বে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা গত ২১ মার্চ থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। বৈশ্বিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, ওই দিন বিশ্বে ২৯ হাজার ৪২৯ জন কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়। পরের পাঁচ দিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩২ হাজার ৪৮০, ৪১ হাজার ৩৭১, ৪৩ হাজার ৭৪৪, ৪৮ হাজার ৪৬১ এবং ৬০ হাজার ৪৩০। এক দিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের ঘটনা ঘটে ২৮ মার্চ। ওই দিন বিশ্বে আক্রান্ত হয় ৬৬ হাজার ৭৬১ জন। কিন্তু পরের দিন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কমে দাঁড়ায় ৬০ হাজার ২৬৩ জনে। পরের দিন কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৬১ হাজার ৪০৪ জনে। অন্যদিকে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে। ১৯ মার্চের পর থেকে দৈনিক মৃত্যুর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকে। এর মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় গত সোমবার (৩০ মার্চ), তিন হাজার ৭২৩ জনের।

যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ পরিস্থিতি : আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে। গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ায় এক লাখ ৭৬ হাজার ৫১৮ জনে। আক্রান্তের সংখ্যার পর মৃতের সংখ্যায়ও চীনকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়ে হয়েছে তিন হাজার ৪৩১ জনে। যুক্তরাষ্ট্রের সব অঙ্গরাজ্য আক্রান্ত হলেও সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি নিউ ইয়র্কে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ৭৯৫ জনে। এরপরই আছে যথাক্রমে নিউ জার্সি (১৬ হাজার ৬৩৬), ক্যালিফোর্নিয়া (সাত হাজার ৪৫৩) ও মিশিগান (ছয় হাজার ৪৯৮)। শুরুতে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার জন্য এরই মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সমালোচনার মুখে দেশ সচল করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। আগামী ১২ এপ্রিল থেকে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় জীবনযাত্রা শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। অনেকেই মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরো খারাপ সময় অপেক্ষা করছে।

ইউরোপ পরিস্থিতি : ইতালিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দুই দিন ধরে কমছে। গত শনিবার দেশটিতে আক্রান্ত হয় পাঁচ হাজার ৯৭৪ জন। পরের দিন আক্রান্ত হয় পাঁচ হাজার ২১৭ জন। আর সোমবার সেই সংখ্যা আরো কমে দাঁড়ায় চার হাজার ৫০ জনে। গতকাল মঙ্গলবার আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় একই ছিল (চার হাজার ৫৩)। তবে দৈনিক মৃতের সংখ্যা মাঝে এক দিন কমার পর আবার বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৮৩৭ জনের। আগের দুই দিন এই সংখ্যা ছিল ৭৫৬ (রবিবার) ও ৮১২ (সোমবার)। সব মিলিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক লাখ পাঁচ হাজার ৭৯২ এবং ১২ হাজার ৪২৮ জনে। তবে স্পেনে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। গত সোমবার দেশটিতে আক্রান্ত হয় সাত হাজার ৮৪৬ জন। এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুও (৯১৩ জন) ঘটে এদিন। সব মিলিয়ে গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৯৪ হাজার ৪১৭ এবং আট হাজার ২৬৯ জনে। জার্মানিতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৮ হাজার ১৮০ জনে। মৃত্যু হয়েছে ৬৮২ জনের। এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সে। গত সোমবার দেশটিতে ৪১৮ জনের মৃত্যু হয়। ১৭ মার্চ থেকে অবরুদ্ধ (লকডাউন) থাকা দেশটিতে মোট আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪৪ হাজার ৫৫০ এবং তিন হাজার ২৪ জনে। যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা যথাক্রমে ২৫ হাজার ১৫০ এবং এক হাজার ৭৮৯ জন।

এশিয়ার চিত্র : চীনে গত সোমবার আরো ৭৯ জন কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আরো পাঁচজনের। এ নিয়ে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮১ হাজার ৫১৮ এবং তিন হাজার ৩০৫ জনে। ইরানে দৈনিক মৃতের সংখ্যা আবার বেড়ে গেছে। গতকাল দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১১৭। সব মিলিয়ে দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ৬০৫ এবং তিন হাজার ১১০ জনে। পাশের দেশ ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২৫১ জনে। মৃত্যু হয়েছে ৩২ জনের। ইন্দোনেশিয়ায় ১১৪ জন বেড়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫২৮ জনে। নতুন ১২৭ জনসহ থাইল্যান্ডে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ৬৫১ জনে দাঁড়িয়েছে। গতকাল কভিড-১৯-এ প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে মিয়ানমারে।

সার্বিক পরিস্থিতি : ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিশ্বের ২০১টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট লাখ ২৮ হাজার ৩০৫ জনে। মোট মৃত্যু হয়েছে ৪০ হাজার ৭৩৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন এক লাখ ৭৪ হাজার ৪৫৪ জন। চিকিৎসাধীন আছেন ছয় লাখ ১৩ হাজার ১১৬ জন। এঁদের মধ্যে মৃদু উপসর্গ রয়েছে পাঁচ লাখ ৮২ হাজার ২০৬ জনের (৯৫ শতাংশ)। বাকি ৩০ হাজার ৯১০ জনের (৫ শতাংশ) অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া বিশ্বের প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে কভিডে আক্রান্ত হয়েছে গড়ে ১০৬ দশমিক ৩ জন। আর প্রতি ১০ লাখে মৃত্যু হয়েছে ৫ দশমিক ২ জনের। অন্যদিকে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক মৃত্যুর হার ৪.৯১ শতাংশ। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

সেরা নিউজ/আকিব

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরীর আরও সংবাদ
© All rights reserved by Shera TV
Developed BY: Shera Digital 360