নড়াইল সদর হাসপাতালে তার ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি হলো ‘ডক্টরস সেফটি চেম্বার’। করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়টায় চিকিৎসকদের সুরক্ষা আবশ্যিক একটা শর্ত। এই মহামারীর যুদ্ধে জিততে হলে সম্মুখ সমরের যোদ্ধা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তারই কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে মাশরাফির নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তৈরি হলো ‘ডক্টরস সেফটি চেম্বার’।
ছোট কাঁচের একটি ঘরের ভেতর থেকে ডাক্তার ও স্বাস্থ্য কর্মীরা প্রথম অবস্থায় রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এয়ারটাইট এই কাঁচের ঘরের সামনে দুটো বড় ঢাকনার মতো আছে। যেখানে গ্লাভস পরা হাত দিয়ে ডাক্তাররা রোগীর প্রাথমিক রোগ নির্ণয় করতে পারবেন। আরেকটি চিকন গর্তের ভেতর থেকে স্টেথিস্কোপ বের করার মতো ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ইনফ্রারেড থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে জ্বর মাপার ডিজিটাল মিটারও আছে এখানে। সবমিলিয়ে কাঁচের ঘরের ভেতর থেকে চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য কর্মীরা বাইরে দাঁড়ানো রোগীর কোনো সংস্পর্শে না এসে প্রাথমিকভাবে তার রোগ নির্ণয় করতে পারবেন। তারপর সেই অনুযায়ী তাকে ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হবে।
রেড ক্রিসেন্টের পাঁচজন স্বেচ্ছাসেবী এই ‘ডক্টরস সেফটি চেম্বার’ এর দায়িত্বে আছেন। তারা সেখানে প্রাথমিকভাবে রোগ নির্ণয় করার পর রোগীকে তার নির্দিষ্ট চিকিৎসালয়ের ইউনিটে পাঠাবেন।
‘ডক্টরস সেফটি চেম্বার’ এর এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত মাশরাফির ছোট ভাই মোরসালিন বিন মর্তুজা বার্তা২৪.কম’কে বলছিলেন- ‘স্বাস্থ্য কর্মীরা যদি মনে করেন কারো করোনা উপসর্গ আছে তাহলে তাকে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হবে। উপসর্গ না থাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে এসে অনেক চিকিৎসকও আক্রান্ত হয়ে পড়েন। সেই সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসতেই আমাদের এই ‘ডক্টরস সেফটি চেম্বার’। পুরোপুরি দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থানীয় প্রকৌশলী আরাফাত আমাদের এই চেম্বার নির্মাণে কারিগরী সহায়তা দিয়েছেন।’
মোরসালিন জানান- ‘হাসপাতালের ভেতরে ডাক্তাররা যে সব রোগীদের দেখেন সেখানেও এই রকম সুরক্ষা চেম্বার নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে আমাদের। আমরা এনিয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলছি। যে কোনো মূল্যে আমাদের চিকিৎসকদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই হবে।’
নড়াইলে এর আগে মাশরাফির উদ্যোগে ভ্রাম্যমান অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতাল এবং জীবাণুনাশক চেম্বার তৈরি করা হয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নড়াইল অনুকরণীয় প্রস্তুতির নজির স্থাপন করেছে।
সেরা নিউজ/আকিব